মিতু হত্যার আইও-র সঙ্গে এসআই আকরামের বোনের সাক্ষাত

আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ‘সড়ক দুর্ঘটনায়’ নিহত এসআই আকরাম হোসেনের বোন জান্নাত আরা পারভীন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2017, 08:29 AM
Updated : 15 March 2017, 12:08 PM

বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) কামরুজ্জামানের কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে জান্নাত আরা পারভীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিতু হত্যাকাণ্ড ‘একসূত্রে গাঁথা’। বিষয়টি জানানোর জন্য আমি তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি।”

দুই বছর আগে ‘দুর্ঘটনায়’ নিহত এসআই আকরাম হোসেন লিটনকে ‘পরকীয়ার’ জন্য সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’ হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।

পারভীন জানান, অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে কয়েকদিন আগে তিনি তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বুধবার সময় দেন।

তবে তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেছেন, “আমি কাউকে ডাকিনি।তারা নিজ থেকে কথা বলতে এসেছেন।”

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আকরামের পাঁচ বোন অভিযোগ করেন, তাদের ভাইয়ের স্ত্রী ঝিনাইদহের মেয়ে বনানী বিনতে বসির বর্ণির সঙ্গে বাবুলের ‘সম্পর্ক’ ছিল।

“খুলনায় বাবুলের বাবা পুলিশে ও বর্ণির বাবা বিআরডিবিতে চাকরি করতেন। পাশাপাশি বাসায় থাকার সুবাদে বাবুল-বর্ণির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়।”

২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি একই জেলার আকরামের সঙ্গে বিয়ে হয় বর্ণির। অন্যদিকে পারিবারিকভাবে সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেনের মেয়ে মাহমুদা আক্তার মিতুর সঙ্গে বিয়ে হয় বাবুল আক্তারের।

আকরামের বোন জান্নাত অভিযোগ করেন, বিয়ের পরও বাবুলের সঙ্গে বর্ণির ‘যোগাযোগ ছিল’। আকরাম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে থাকার সময় তাদের প্রায়ই কথা হত।

“২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর আকরামকে হত্যার পরিকল্পনা করে বাবুল আক্তার ও বর্ণি। এ কারণে আকরামকে যমুনা সেতু হয়ে ঝিনাইদহ আসার পরামর্শ দেয় বর্ণি। পথে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। পরে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বড়দাহ থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

“আকরামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর ও পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে আকরামের অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল, কিন্তু বর্ণি স্যুপে বিষ মিশিয়ে খাওয়ালে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরাম মারা যান।”

বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনও সম্প্রতি বলেছেন, তার মেয়ে হত্যার সঙ্গে এসআই আকরামের ঘটনার যোগসূত্র থাকতে পারে। তিনিও ওই ঘটনার তদন্ত দাবি করেন।

গত বছরের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে সন্তানের সামনে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মিতুকে।

পুলিশ প্রথমে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য জঙ্গিদের সন্দেহ করলেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর ‘সব বিষয়’ বিবেচনায় নিয়ে তদন্তের কথা জানায়।

এরমধ্যে এক রাতে ঢাকায় শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে টানা ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ছাড়া হয়।

পুলিশের চাকরি ছেড়ে বর্তমানে মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে চাকরি করছেন বাবুল আক্তার।