প্রাথমিকে অভিযোগের ‘পাহাড়’, শোধরাতে ‘৩ মাস’ সময়

প্রাথমিক শিক্ষা খাতের অসংখ‌্য অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা পড়েছে জানিয়ে শোধরাতে সবাইকে তিন মাস সময় দিয়েছেন এই সংস্থার চেয়ারম‌্যান ইকবাল মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2017, 12:36 PM
Updated : 16 Feb 2017, 01:22 PM

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে পাওয়া অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলেন তিনি।

পিটিআই ইনস্টিটিউটে প্রাথমিক শিক্ষায় সু-শাসন নিশ্চিতকরণে চট্টগ্রাম বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষকদের পেনশনের কাগজপত্র তৈরি করতে, বদলি, নারী শিক্ষকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি, অর্জিত ছুটি এসবের ক্ষেত্রে শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছেন তিনি।

তাছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের খাতা মূল্যায়ন, ফলাফল পরিবর্তন, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগও দুদক কার্যালয়ে জমা পড়েছে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, “যেসব অভিযোগ এসেছে সেগুলো মিথ‌্যা- আমি এমন ধারণা করছি। আমি তিন মাস অপেক্ষা করব। তিন মাস পর আমার কাছে এরকম কোনো অভিযোগ যদি না আসে, তাহলে পুরনো সব অভিযোগ ছুড়ে ফেলব।

“প্লিজ লুক অ্যাট দিস অ্যান্ড রিমামবার ইট।”

শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আপনারা অনেকেই সৎ। এরপরও আমার অফিসে অভিযোগের পাহাড় জমে আছে। আপনারা দেখেছেন অনেককেই আইনে সোপর্দ করেছি। আপনারা দেখেছেন কোনো প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, টিইও, এটিইও আমি কাউকে কিছু করিনি।

“এখন আর গোপন করার সময় নেই; মরবেন অথবা মারবেন। এখন আর সে সময় নেই, আপনাকে আমাকে কেউ ছেড়ে দিবে না। জবাবদিহি করতেই হবে; হয় অন্যের কাছে, না হয় নিজের কাছে। অন্যের কাছে জবাবদিহি করার চেয়ে নিজের কাছে জবাবদিহি করা সম্মানজনক।”

‘জিপিএ ৫ আছে, শিক্ষা নেই’

প্রাথমিকে জিপিএ ৫ পাওয়ার সংখ‌্যা বাড়লেও শিক্ষার মান নিয়ে নিজের প্রশ্ন থাকার কথা জানান সাবেক সচিব ইকবাল মাহমুদ।

তিনি বলেন, “এখন সমস্যা একটাই। প্রাইমারি স্কুলে বাচ্চা আছে, চেয়ার, ব্ল্যাক বোর্ড, কম্পিউটার, শিক্ষক সবকিছুই আছে। কিন্তু একটা জিনিস নেই।”

কোন জিনিসটি নেই- উপস্থিত সবার কাছে জানতে চাইলে সবার কাছ থেকে ‘আন্তরিকতা নেই’ উত্তর আসার পর দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “শিক্ষা নেই। জিপিএ-৫ আছে।”

বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে সবচেয়ে অবহেলিত বলেও মত ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার সমালোচনা করে শিক্ষকদের সর্বোচ্চ নির্বাচনের কাজ পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে বলে নিজের মত দেন ইকবাল মাহমুদ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তাফা কামাল।

বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন।