রঙের ছটা চট্টগ্রামের বসন্তবরণে

নাচ, গান, আবৃত্তি আর নানা আয়োজনে চট্টগ্রামে চলছে ঋতুরাজ বসন্তবরণ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2017, 11:23 AM
Updated : 13 Feb 2018, 08:25 AM

ফাল্গুনের প্রথম সকালে বসন্তকে বরণ করে নিতে নগরীর কয়েকটি আবৃত্তি সংগঠনের আয়োজনে ছিল সকল শ্রেণিপেশার মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রভাতি ও বৈকালিক- এই দুই অধিবেশনে বসন্তকে বরণ করে নিচ্ছে আবৃত্তি সংগঠনগুলো।

বাসন্তী রঙের শাড়ি ও পাঞ্জাবীতে এসব আয়োজনে অংশ নেয়া তারুণ্যের কণ্ঠে ছিল অন্ধকারের সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে শুভবোধ জাগ্রত করার প্রত্যয়।

বসন্তের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে নগরীর ডিসি হিলে বসন্ত উৎসব আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম অন্যতম শীর্ষ আবৃত্তি সংগঠন ‘বোধন আবৃত্তি পরিষদ’।

সকাল নয়টায় ডিসি হিলের মু্ক্তমঞ্চে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ‘রাগভৈরবী’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বসন্ত উৎসবের প্রভাতি অধিবেশন। এরপর মঞ্চে একে একে পরিবেশন করা হয় ঢোল বাদন ও বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি রণজিৎ রক্ষিতের একক আবৃত্তি। এছাড়াও বৃন্দ আবৃত্তি, দ্বৈত নৃত্য, দলীয় নৃত্য দলীয় সঙ্গীত ও একক সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে প্রভাতি অধিবেশন শেষ হয়।

এরপর বিকালের অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণে বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে শুরু হয় শোভাযাত্রা। নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রা মিলিত আবার ডিসি হিলে।

বোধন আবৃত্তি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বসন্ত উৎসব আয়োজনের সমন্বয় প্রণব চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বোধন বাঙ্গালি সংস্কৃতির চিরায়ত ধারাকে চেতনায় ধারণ করে পথ চলতে চায়।

বোধন এ পথচলায় বাংলার সর্ব প্রান্তের মানুষদের সঙ্গী করতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, “মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো যেভাবে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে সেটাকে প্রতিহত করতে বাঙ্গালি সংস্কৃতির কাছে ফেরা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।”

নগরীর ডিসি হিলে বসন্ত উৎসবে উদযাপনে আসা নগরীর একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক অংকন শ্রেষ্ঠা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই উৎসবের মধ্যে বাঙ্গালির শেকড় প্রোথিত।

“অন্ধকারের অপশক্তি যেগুলো অামাদের মধ্যে বিভেদ ছড়িয়ে চায় ধর্মের নামে তাদের বিরুদ্ধে শুভবোধ জাগ্রত করতে এসব উৎসবের কাছে আমাদের ফিরতে হবে।”

নগরীর শিল্পকলায় বসন্ত উৎসবের আয়োজনে ছিল প্রমা আবৃত্তি সংগঠন। সকাল নয়টার দিকে দৈনিক আজাদী’র সম্পাদক এম এ মালেক এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। প্রমা আবৃত্তি পরিষদের আয়োজনেও আছে আবৃত্তি, নাচ, সঙ্গীত ও ঢোল বাদন।

প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকল সৌন্দর্যকে অনুষঙ্গ করে বসন্ত যেভাবে আমাদের জীবনে নেমে আসে ঠিক একইভাবে সেটার ছাপ যেন আমাদের জাতীয় জীবনেও পড়ে।

“মননে বাঙ্গালি সংস্কৃতির চর্চা বা চাষাবাদ ছাড়া আমরা মৌলবাদ বা সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোকে মোকাবেলা করতে পারব না।”