জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘটে পণ‌্য খালাসে অচলাবস্থা

বর্ধিত বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের কর্মবিরতি তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম ব‌্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2017, 10:06 AM
Updated : 13 Feb 2017, 10:06 AM

শনিবার থেকে শুরু হওয়া এ কর্ম বিরতির কারণে কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাট কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। পণ্য নিয়ে এসব ঘাটে খালাসের অপেক্ষায় আছে ৬০টি লাইটার জাহাজ।

পাশাপাশি শনিবার রাত থেকে বন্দরের বর্হিনোঙরে থাকা মাদার ভেসেলের পণ্য খালাসও কার্যত বন্ধ হয়ে আছে। বর্হিনোঙরে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় আছে কমপক্ষে ২৪টি মাদার ভেসেল (বড় আকারের জাহাজ)।

এই অচলাবস্থার নিরসনে নৌ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী শাহজাহান খানের সঙ্গে লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের বৈঠক ডাকা হয়েছে।

ধর্মঘট আহ্বানকারী লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাহাদাত হোসেন সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঢাকায় এসেছি। এখন নৌ মন্ত্রণালয়ে আছি। নৌমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা কাগজপত্র দিয়েছি। মন্ত্রী ডাকলেই তার সাথে কথা বলতে যাব।”

লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশ ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিলেও শনিবার সকালে আকস্মিকভাবে তারা কর্মবিরতিতে যায়।

তাৎক্ষণিকভাবে কর্ণফুলী নদীর পাঁচটি ঘাটে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। এরপর ১৬টি ঘাটের সবগুলোতেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার রাত থেকে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে বর্হিনোঙরে থাকা মাদার ভেসেলে।

লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের আরেকাংশের সাধারণ সম্পাদক নবী আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাহাজ মালিকদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা কর্মবিরতি ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছিলাম। ১৩ ফেব্রুয়ারির পর আবার কর্মবিরতির কথা থাকলেও অন্য অংশটি শনিবার হঠাৎ কাজ বন্ধ করে দেয়।”

এদিকে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) রোববারের বার্থিং মিটিং (লাইটার বরাদ্দের সভা) বাতিল করা হয়েছে।

ডব্লিউটিসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আধা ঘণ্টার নোটিসে বার্থিং মিটিং করতে আমরা প্রস্তুত আছি। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইটার জাহাজ কর্ণফুলী নদীতে ঘাটগুলোর কাছাকাছি অবস্থান করছে। প্রয়োজনে দ্রুততম সময়ে লাইটার বরাদ্দ করা সম্ভব হবে।”

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে থাকা মাদার ভেসেল (বড় আকারের জাহাজ), কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাট এবং বিভিন্ন জেটি থেকে এসব লাইটার জাহাজে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহন করা হয়।

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে নতুন গেজেট অনুসারে বর্ধিত বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও সব জাহাজ মালিক তা না দেওয়ায় কর্মবিরতিতে যায় শ্রমিকরা।

চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে চলাচলকারী প্রায় দেড় হাজার লাইটার জাহাজ আছে। এসব জাহাজের মালিক প্রায় আটশজন। এগুলোসহ সারাদেশের সব নৌরুট মিলিয়ে প্রায় ছয় হাজার লাইটার জাহাজ চলাচল করে।