সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে কর্মসূচি হেফাজতের

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে স্মারকলিপি দেওয়াসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2017, 10:09 AM
Updated : 11 Feb 2017, 10:09 AM

শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন হাটহাজারী মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী।

রোমান যুগের ন‌্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে একটি ভাস্কর্য সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়, যার বিরোধিতা করছে ইসলামী দলগুলো।

বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত আইন শাস্ত্রের গোড়াপত্তন হয় রোমান যুগে। বাংলাদেশেও আইন শাস্ত্রে রোমান আইন পড়ানো হয়ে থাকে। রোমানদের লেডি জাস্টিস গ্রিকদের কাছে পরিচিত ছিল দেবী থেমিস হিসেবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাবুনগরী বলেন, “গ্রিক দেবীকে ন্যায়বিচারের প্রতীক মনে করলে এদেশে ইসলাম থাকবে না। মুসলিমদের জন্য ন্যায়বিচারের প্রতীক হল আল কোরআন। মূর্তিকে বিচারের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হলে কোনো মুসলমানের ঈমান থাকবে না।”

ওই ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে হেফাজত আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেবে।

এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে এবং চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করবে হেফাজত। 

বাবুনগরী বলেন, “সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। এরপরও মূর্তি অপসারণ করা না হলে পরবর্তীতে হেফাজত ইসলাম সারাদেশের জেলা শহরগুলোতে সমাবেশ ও মিছিলসহ অন্যান্য কর্মসূচি দেবে।”

এই ভাস্কর্যের বিরোধিতা করলেও নিজেরা স্থাপত্যকলা ও শিল্পকলার বিরুদ্ধে নন বলে দাবি করেন হেফাজত মহাসচিব।

“কিন্তু গ্রিক মূর্তি স্থাপন করে আমাদের জাতীয় মন ও মানসে ঔপনিবেশিক বিজাতীয় কৃষ্টির অনুপ্রবেশ আমরা বরদাশত করব না।”

ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে পার্থক্য নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের সমালোচনা করে বাবুনগরী বলেন, “আমরা মনে করি তার এই বক্তব্য ঠিক মলমূত্রকে খাদ্য হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার নামান্তর। ভাস্কর্য ও মূর্তির পার্থক্যের জ্ঞান তার মতো ধর্মীয় জ্ঞানহীন অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে শিখতে হবে না।”

‘রোমান আইন থেকে আমাদের বিচারের বিষয়ের উৎপত্তি’- অ‌্যাটর্নি জেনারেলের এই বক্তব‌্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “স্বাধীন দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হয়ে তার এ বক্তব্য আমাদের বিচার ব্যবস্থায় এখনও যে ঔপনিবেশিকবাদের চর্চা চলছে তা প্রমাণ হয়।”

হেফাজত আমির দেশের বিচার ব্যবস্থা ও আইনতত্ত্বকে কোরআনের আলোকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মঈনুদ্দিন রুহী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনীর আহমদ উপস্থিত ছিলেন।