কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের মদুনাঘাট অংশ থেকে নগরীর বহদ্দারহাট পর্যন্ত প্রায় দশ কিলোমিটার সড়কে চলছে ধুলোর রাজত্ব।
কর্তৃপক্ষ বলছে, কাজের যা গতি, তাতে এই পরিস্থিতি চলবে আরও কয়েক মাস। জনভোগান্তি কমাতে কী করা যায়, তা নিয় ভাবছেন তারা।
নগরীর ওই অংশের মদুনাঘাট, নজুমিয়া হাট, কুয়াইশ, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, মৌলভী পুকুর পাড়, পুরাতন চান্দগাঁও, বাস টার্মিনাল, খাজা রোড ও বহদ্দারহাট এলাকায় প্রায় দশ কিলোমিটার সড়কজুড়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্পের পাইপ বসানোর কাজ চলছে।
“পাইপ বসানোর পর সড়কে পাইপের চাপ সহনশীলতা ও পানির চাপ কতটা নিতে পারছে সেটা দেখার বিষয় থাকে। এখন টেস্টিং পিরিয়ড চলছে। আগামী চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।”
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের ওই অংশের অ্যাসফল্ট তুলে পাইপ বসানোর পর ইট ও বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। কাটা অংশে যানবাহনের চাকা গড়ালেই কুণ্ডলী পাকিয়ে উড়ছে ধুলো।
ধুলোর দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থী, অফিসযাত্রী, চালক ও পথচারীদের অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক খাবার দোকানের সামনের অংশ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ধুলো এড়ানোর চেষ্টা চলছে।
বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ যেখানে ১০০ পিপিএম পার হলেই বিপদজনক মাত্রায় বলে ধরা হয়, সেখানে চলতি শীত মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই চট্টগ্রামের বাতাসে এই পরিমাণ ছিল ৩৫০০ পিপিএমের বেশি।
নগরীর পুরাতন চান্দগাঁও এলাকার ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গাড়িতে বা পথে- যেখানেই থাকি না কেন ধুলোর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না। ক্লাসরুমের জানালা খোলা রাখলেও ধুলো ঢোকে।’’
পঞ্চাশোর্ধ্ব বক্কর আলী কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে অটোরিকশা চালান। হাঁপানির সমস্যা তার আগে থেকেই ছিল। এবারের শীতে ধুলোর কারণে কাজে বের হওয়াই তার জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদে ধুলোবালির মধ্যে থাকলে ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, সর্দিকাশি ও চোখের ইনফেকশন হতে পারে। এতে বেশি ক্ষতি হতে পারে শিশুদের।
ধুলোর অত্যাচার থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) প্রধান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অস্বাভাবিক যে ধুলোবালি সেটা মূলত সিডিএর ফ্লাইওভার নির্মাণ ও ওয়াসার প্রকল্পের কারণে হচ্ছে। আমরা তাদেরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারা কতটা কি করেছে সেটা দেখা হবে।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, “ওই গাড়িগুলো উন্নত বিশ্বের মসৃণ সড়কে জমে থাকা হালকা ধুলো পরিষ্কার করার উপযোগী। আমাদের আবহাওয়ার উপযোগী গাড়ি কেনার চিন্তা আছে।”