সার্কিট বেঞ্চ ‘চট্টগ্রামেই হবে’

ঢাকার বাইরে হাই কোর্টের বেঞ্চ হলে তা চট্টগ্রামেই হবে বলে বন্দর নগরবাসীদের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2017, 04:09 PM
Updated : 19 Jan 2017, 04:10 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় নব নির্মিত চিফ জুজিডিশায় ম্যাজিস্ট্রেট ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অঞ্চলের আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “হাই কোর্ট বিভাগের সার্কিট বেঞ্চ আপনাদের অনেক দিনের দাবি। আমি মনে করি, আপনাদের দাবির গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন।”

এই দাবি পূরণের অন্তরায়গুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের অনেকগুলো প্রোবলেম আছে। এই বছরে সাতজন বিচারক রিটায়ারমেন্টে যাবেন। চারজন বিচারক খুবই অসুস্থ, তারা কোর্ট করতে পারছেন না। আমাদের সুপ্রিম কোর্টে বিচারক স্বল্পতা আছে।”

দক্ষ বিচারকের অপ্রতুলতার পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি ঢাকা-চট্টগ্রাম যোগাযোগে দূরত্ব কমে আসার কথা তুলে ধরে আইনজীবীদের এখনই আশান্বিত না হওয়ার আহ্বান জানান।

“অবশ্যই বিবেচনা করব, তবে আপনারা আশান্বিত হবেন না। এখন যেটা জানতে পারলাম ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। হয়ত দেড় ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাতে যেতে পারবেন। সকালে রওনা হয়ে বিকেলে চলে আসতে পারবেন।”

এসময় দর্শক সারির সামনে ও পেছনে থাকা ‘সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের’ নেতারা ‘নো নো’ বলে তাদের ভিন্নমত প্রকাশ করেন।  

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি তো জানি। আমি তো বলছি, আপনাদের দাবি অগ্রগণ্য। এখানে মাননীয় আইনমন্ত্রী আছেন। উনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করেন। মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করবেন। বিচারকদের অবকাঠামো হবে.. অনেক কিছু হবে...। এসব বিবেচনা করেই ... করা হবে।”

এসময় আবারও আইনজীবীরা ‘নো নো’ বলে ওঠেন।

তারপর প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি তো বলছি, আপনাদের দাবি তো আমি স্বীকার করছি। আমি তো সবসময় বলে আসছি, আমি এখনও নিজেকে আপনাদের সদস্য মনে করি।

“বাংলাদেশে যদি একটাও হয় তাহলে চট্টগ্রামেই হবে। তবে এটা হলো, মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলবেন.... আমাকে যদি পর্যাপ্ত ফ্যাসিলিটিজ না দেওয়া হয়...। আমি আশা রাখি, করব।”

অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক সাবেক জেলা পিপি আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা হতাশ নই। চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং রাষ্ট্রপতির সায় আছে।

“প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করব। আশা করি, বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের এই প্রাণের দাবি পূরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”

ঢাকার বাইরে হাই কোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির উপরই ছেড়ে দিয়ে আসছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এইচ এম এরশাদের আমলে সংবিধান সংশোধন করে ঢাকার বাইরে হাই কোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছিল। তখন এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন আইনজীবীরা, পরে সুপ্রিম কোর্ট ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।