ছাত্রলীগ নেতাকে ‘অপহরণ চেষ্টার’ অভিযোগে চট্টগ্রামে মানববন্ধন

ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির এক সদস্যকে ‘অপহরণ চেষ্টার’ অভিযোগ এনে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগের একাংশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2017, 01:29 PM
Updated : 18 Jan 2017, 07:12 AM

মঙ্গলবার বিকালে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম মহানগর’ এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হলেও সেখানে ছাত্রলীগের নগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন না।

ওই সমাবেশ চলাকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের একাংশে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিকাল ৪টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত সমাবেশ চলাকালে জামালখান মোড় এবং জামালখান সড়কের কেয়ারি ভবনের সামনে সমাবেশে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীদের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে।

ছাত্রলীগের একাংশের ওই সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী শ্রমিক লীগ ও যুবলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নগর ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য রিদয়ানুল কবির সজীবকে ‘অপহরণ প্রচেষ্টা’র প্রতিবাদের এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সমাবেশে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আ জ ম নাছিরের অনুসারী।

সমাবেশে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম বলেন, সজীবকে অপহরণের চেষ্টা হয়েছে। তাকে মারধর করা হয়েছে।

“সজীবের অপরাধ হচ্ছে, যারা সন্ত্রাসকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা। সে ফেইসবুকে লিখেছে নাসিম আহমেদ সোহেল হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে। আমাদের প্রতিবাদকে শাণিত করেছে বলেই তার ওপর হামলা হয়েছে।”

দিদারুল আলম মাসুম বলেন, “কাল অনেক রাতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রেস ক্লাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করব। সেই সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমরা অন্য সিদ্ধান্তও নিতে পারতাম। যদি সিদ্ধান্ত নিতাম- যারা সজীবের উপর হামলা করেছে তাদের ঘর থেকে বের করা হোক।

“তাহলে যারা হামলা করেছে, তাদের আমরা আজকে প্রেস ক্লাব চত্বরে বেঁধে ফেলতে পারতাম। তা করি নি। আমরা নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ করছি।”

সজীবের ওপর ‘হামলার’ জন্য ছাত্রলীগের একাংশকেই দায়ী করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক সফর আলী এবং শ্রমিক লীগ নেতা বখতেয়ার উদ্দিন খান।

বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের নগর কমিটির সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন মাহি ও রেজাউল আলম রনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনুর রহমান, সিটি কলেজে ছাত্রলীগের ভিপি আবু তাহের এবং বাকলিয়া কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ন কবির।

সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতারা সজীবের ওপর ‘হামলার’ পরও কোনো প্রতিবাদ না করায় নগর কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির সমালোচনা করেন।

রিদয়ানুল কবির সজীব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সোমবার রাত ৯টার দিকে জিইসি মোড়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে রোগী দেখে বের হই।

“গোল পাহাড় মোড়ের কাছে গেলে একদল ছেলে আমাকে ধরে ফেলে। তার আমাকে ওয়েল পার্কের গলিতে নিয়ে আসে। আমার মোবাইল নিয়ে নেয়। মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কেন ফেইসবুকে লিখেছি তা জানতে চায়।”

সজীব বলেন, “তারা খারাপ ব্যবহার করেনি। আমার মোবাইল থেকে তারা স্ট্যাটাস দেয় যে- আমি আর এরকম পোস্ট দেব না। আধা ঘণ্টা পর মোবাইল ফিরিয়ে দিয়ে ছেড়ে দেয়।“

কারা তাকে আটকে রাখে জানতে চাইলে সজীব বলেন, “জিইসি মোড় এলাকার কিছু ছেলে। রাজনীতি যখন করি হয়ত চিনি। বের করার চেষ্টা করছি তারা কারা। জানতে পারলে আপনাদের জানাব।”

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির কাছে জানতে চাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে রিদয়ানুল কবির সজীব আমাদের কিছুই জানায়নি। তাই কি ঘটেছে তা জানি না।“

সমাবেশে অনুপস্থিতির বিষয়ে রনি বলেন, “মহানগর ছাত্রলীগ কোনো কর্মসূচি দেয়নি, তাই সেখানে আমাদের যাওয়ারও কোনো কারণ নেই।”