রোহান হোসেন নামের ওই যুবক ১২দিন আগে চট্টগ্রাম বন্দরে খালি কন্টেইনারে ঢুকেছিলেন বলে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
তিনি এখন ভারতীয় পুলিশের তত্ত্বাবধানে বিশাখাপত্তমের কিং জর্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তার বিষয়ে জানতে বিশাখাপত্তমের ওয়ান টাউন পুলিশ স্টেশনে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোহান হোসেনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে।
“চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সে খালি কন্টেইনারে ঢুকে পড়ে বলে জানিয়েছে। সুস্থ হলে তাকে বাড়ি পাঠানো হবে।”
অন্ধ্রপ্রদেশের তেলেগু ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল টিভি নাইন ও এনটিভিতে রোহানের সাক্ষাৎকারও সম্প্রচার হয়েছে।
এনটিভিতে তাকে হিন্দিতে বলতে শোনা যায়, “কন্টেইনার মে আটকা পর যায়ে গা। বারা (১২) দিন পর কন্টেইনার সে বের হইছি আজকে।”
পেশা জানতে চাইলে রোহান বলেন, “ঢাকা মে এসি টেকনিশিয়ান।”
টিভিনাইনকে রোহান বলেন, কোনো এক ব্যক্তি তাকে কন্টেইনারে উঠে শুয়ে পড়তে বলেন।
“কারণ তা না হলে গাড়ি (কন্টেইনার ওঠা-নামা করানোর যন্ত্র) ধাক্কা দিলে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাব। কন্টেইনারে উঠে ঘুমিয়ে যেতে বলে। আরও বলে, ১০-১২ দিন পর টার্মিনাল থেকে বের হওয়া যাবে।”
ওই খালি কন্টেইনারটি বিশাখাপত্তমভিত্তিক সামসারা শিপিং লিমিটেডের নামে আনা হয়েছিল বলে ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদনে বলা হয়।
বিশাখাপত্তম পুলিশের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বন্দরের বিশাখা কন্টেইনার প্রাইভেট লিমিটেডের (ভিসিটিপিএল) কর্মকর্তারা কন্টেইনারে ভিতরে রোহান হোসেনের সন্ধান পান।
পরে পুলিশ এসে কন্টেইনার খুলে রোহানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (নিরাপত্তা) আবদুল গাফফার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা শুনেছি। বিষয়টা খুবই রহস্যজনক।
“কন্টেইনারে করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কেন যাবে? সব বিষয়েই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিশাখাপত্তম বন্দরের সাথেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।”
এরআগে ২০১৪ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩ নম্বর জেটি থেকে জসিম উদ্দিন (১৯) নামের একজনকে গ্রেপ্তারের পর ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। বন্দরে রাখা একটি খালি কন্টেইনার থেকে বেরিয়ে জাহাজে ওঠার চেষ্টার সময় ধরা পড়েন তিনি। জাহাজে চড়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন তিনি।
২০১১ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে রাখা একটি খালি কন্টেইনারে ঢুকে আটকা পড়েন দ্বীন ইসলাম ও আল আমিন নামের দুই বন্দর শ্রমিক। ওই কনন্টেইনার নিয়ে জাহাজটি সিঙ্গাপুর পৌঁছানোর পর আল আমীনের লাশ ও দ্বীন ইসলামকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ওই বছর অক্টোবরে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় দ্বীন ইসলামকে।