কোকেনকাণ্ডে আমদানিকারক নূর মোহাম্মদের জামিন ফের নাকচ

চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের সঙ্গে মিশিয়ে কোকেন আনার মামলায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের জামিন আবেদন ফের নাকচ করেছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2016, 03:30 PM
Updated : 28 Sept 2016, 05:19 PM

চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ মো. শাহে নূরের আদালতে বুধবার জামিন আবেদনের শুনানির পর তা নাকচ করা হয়।

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন নূর মোহাম্মদ।

বুধবার শুনানির পর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উচ্চ আদালতে জামিন চেয়েও পাননি নূর মোহাম্মদ। এছাড়া মামলাটি এখনও তদন্তের পর্যায়ে আছে।

“তাই আমরা তার জামিন আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেছি। শুনানি শেষে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।”

এ বিষয়ে নূর মোহাম্মদের আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মানবিক কারণেই আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম। তিনি এ অপরাধের সাথে জড়িত নন। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রেও তার নাম নেই।”

বুধবার আদালতে শুনানি চলাকালে নূর মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন না। তার পক্ষে আইনজীবীরা জামিন আবেদনের শুনানিতে অংশ নেন।

নূর মোহাম্মদ বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ফখরুদ্দিন চৌধুরী।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কন্টেইনার আটকে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে গতবছর ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

বন্দরের পরীক্ষায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় গত বছরের ২৮ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও কর্মচারী গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে একটি মামলা করে পুলিশ।

পরে আদালত মামলাটিতে চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেয়।

গত বছর ১৯ নভেম্বর এ মামলায় আটজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান। এতে ৫৮ জনকে সাক্ষী করা হয়।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান ‍নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয় অভিযোগপত্রে।

কিন্তু এজাহারভুক্ত প্রধান আসামির নাম অভিযোগপত্রে না থাকায় চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম রহমত আলী গত ৭ ডিসেম্বর তা গ্রহণ না করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কমকর্তাকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য র‌্যাবকে দায়িত্ব দেন।

র‌্যাব-৭ এর একটি দল গত ১৫ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে।

বিচারিক আদালত নূর মোহাম্মদকে জামিন না দেওয়ায় তিনি হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন।