শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তোলা হয়, যাতে পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে আওয়ামী লীগের দায়ী করার মধ্যে ক্ষমতাসীন দলটির ফটিকছড়ির নারায়ণ হাট ইউনিয়ন শাখার সভাপতি হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠল। তিনি নারায়ণ হাট ইউনিয়ন পরিষদেরও চেয়ারম্যান।
রানা দাশগুপ্ত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অঙ্গীকারের বিষয়টি স্মরণ করে বলেন, “কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, এমনি এক সময়ে সরকারী দলের প্রার্থী হয়ে বিগত নির্বাচনে নারায়ণ হাট ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদের ভূমিকা আমাদের বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ করেছে।”
গত ১২ অগাস্ট শুক্রবার স্থানীয় দারুল সালাম মসজিদ প্রাঙ্গণে তবলিগ জামাতের একদল প্রতিনিধির উদ্দেশে বক্তব্যে চেয়ারম্যান হারুন ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেন বলে রানা দাশগুপ্তের অভিযোগ।
“সেখানে তিনি বলেন- দ্বীনের জন্য আপনারা দেশে দেশে ঘুরে বেড়ান। আমাদের মাওলানা সাঈদী সাহেব প্রতিবছর অনেক হিন্দুকে মুসলমান করেছেন। আপনারা কয়জন হিন্দুকে মুসলমান করেছেন? আমাদের নারায়ণ হাট ইউনিয়নের দুই-চারটা হিন্দুকে অবশ্যই মুসলমান করতে হবে। আমি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব।”
হারুনকে দলে রেখে আওয়ামী লীগ কীভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা।
“হারুনুর রশিদের মতো আওয়ামী লীগ নেতারা প্রকৃত অর্থে কোন দলের পক্ষ হয়ে সরকারি দলের অভ্যন্তরে ঘাঁপটি মেরে বসে থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে ও প্রধানমন্ত্রীর ভাবর্মূর্তি ক্ষুন্নে কাজ করে চলেছেন,”প্রশ্ন রাখেন রানা দাশগুপ্ত।
সংবাদ সম্মেলন থেকে হারুনকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার, চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়।
“অবিলম্বে সব দাবি পূরণ না হলে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া কোনো পথ আমাদের খোলা থাকবে না,”বলেন রানা দাশগুপ্ত।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের কাছে হারুনুর রশিদের বক্তব্যের অডিও রেকর্ড আছে।
এই বিষযে হারুনুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার বক্তব্য খণ্ডিতভাবে প্রচার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চলছে।
“ওইদিন আমি অনেক কথাই বলেছি। আমার ১৫ মিনিটের বক্তব্য থেকে মাত্র ৩৭ সেকেন্ডের খণ্ডিত অংশ প্রচার করা হয়েছে।”
এলাকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ‘সুযোগ নিতে চায়’ মন্তব্য করে হারুন বলেন, “আমি কোন উদ্দেশ্যে বলেছিলাম, সেটা বুঝতে হবে। খণ্ডিত বক্তব্য শুনে তা বুঝতে পারা যাবে না।
“আর ঐক্য পরিষদের স্থানীয় নেতাদের সাথে আমি গতকাল সভা করেছি। নারায়ণ হাটের হিন্দুরা এ নিয়ে চিন্তিত নয়।”
যুদ্ধাপরাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৬ সাল থেকে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে চট্টগ্রামে ওয়াজ মাহফিল করতেন।
২০০৫ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রায় প্রতিবছরই হিন্দুসহ অন্য ধর্মের লোকদের ধর্মান্তরিত করাতেন সাঈদী।