চট্টগ্রাম আ. লীগে ‘ফাটল’ দেখছেন ওবায়দুল কাদের

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতাদের ঐক্যে ‘ফাটল’ ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2016, 03:05 PM
Updated : 21 August 2016, 03:46 PM

রোববার চট্টগ্রাম নগরীর মুসলিম হলে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার যুগপূর্তিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রামে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ছিল বঙ্গবন্ধুর ‘নম্বর ওয়ান দুর্গ’। শেখ হাসিনারও ‘দুর্ভেদ‌্য ঘাঁটি’ বলেও আমরা জানতাম। অপ্রিয় হলেও সত্য, সে ঘাঁটিতে এখন ফাটল ধরেছে।

এ ‘ফাটল’ বন্ধে নেতাদের ঐকবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নেতারা ঐক্যবদ্ধ হলে কর্মীরাও ঐক্যবদ্ধ হবে।”

‘ক্ষমতার দাপটের অহংকার’ কাউকে না দেখানোর আহ্বান জানিয়ে এই মন্ত্রী দলীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “ক্ষমতা আজ আছে কাল নেই। আজ যদি দল ক্ষমতায় না থাকে দুঃসময়ে হাইব্রিড সবাই পালাবে। হাজার ধরনের বাতি দিয়েও কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।”

চট্টগ্রামের লালদিঘীতে একটি জনসভার কথা স্মরণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “একসময় আমার বক্তৃতায় আকর্ষণীয় মঞ্চ ছিল চট্টগ্রাম। এখন সহজে আসি না। লালদিঘীর মাঠে সমাবেশ করতে এসে আমি বুঝে গেছি, ওয়াল (দেয়াল) কী পরিমাণ সৃষ্টি হয়ে গেছে।”      

দলে বিভেদ সৃষ্টিকারী নেতাদের প্রতিহত করতে তরুণদের প্রতি আহবান জানিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাদের বলেন, “যে নেতারা তোমাদের ব্যবহার করে ওয়াল (দেয়াল) তুলবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও।

“এখানে কোনো ওয়াল চলবে না। শেখ হাসিনার রাজনীতি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি। এখানে কোনো ওয়াল থাকবে না। থাকবে ব্রিজ আর ব্রিজ।”

একুশে অগাস্টকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ না ভাবার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “২১ অগাস্ট ১৫ অগাস্টের ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা, একই সূত্রে গাঁথা।”

রোববার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ২১ অগাস্টের ঘটনাকে রাজনীতির ইতিহাসে ‘কলঙ্কজনক দিন’ মন্তব্য করার বিষয়টি নিয়েও সমালোচনা করেন কাদের।

“এ কলঙ্ক কার, কে সৃষ্টি করেছে?”

“ক্ষমতার মঞ্চে বসে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে, বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে নির্মূল করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন‌্য করার জন্য কে কলঙ্ক জন্ম দিয়েছে, বিএনপি,” বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম নিয়ে ‘মাস্টারপ্ল্যান’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম নিয়ে শেখ হাসিনার মহাপরিকল্পনা রয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চলে ৮১৫ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কাজ আগামী বছর শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া আগামী বছরের শেষ নাগাদ ঢাকা-চট্টগ্রাম ২২৫ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানান মন্ত্রী কাদের।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, পটিয়ার সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা সাংসদ ওয়াসিকা আয়শা খান, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।