সোহেল হত্যা: আসামি ‘হচ্ছে’ ৩৩ জন

চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগ নেতা নাছিম আহমেদ সোহেল হত্যার ঘটনায় ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করছে তার পরিবার।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2016, 03:47 AM
Updated : 30 March 2016, 03:50 AM

চকবাজার থানার ওসি আজিজ আহমেদ বুধবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। সোহেলের বাবা আবু তাহের বাদী হয়ে এই মামলা করছেন।”

১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও  ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে এই মামলার এজাহার তৈরি করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, যাদের আসামি করা হচ্ছে, তাদের পাঁচজন পুলিশের হাতে আটক রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াসা মোড় ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম নগর কমিটির উপ-সম্পাদক সোহেল।

এমবিএ প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র সোহেল সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী ছিলেন বলে ছাত্রলীগ নেতারা জানান।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথায় জানা গেছে,বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ অনুষদের ২৩তম ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষ ওই সংঘর্ষে জড়ায়।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক নাছিরের দ্বন্দ্বই শিক্ষার্থীদের এই বিরোধের নেপথ্যে কাজ করেছে বলে ছাত্রদের অভিযোগ।

৩১ মার্চ এই বিদায় অনুষ্ঠান সামনে রেখে গত ১৩ মার্চ সোহেল ও তার পক্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিরোধী পক্ষের ঝগড়া হয়। ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সোহেলের সহপাঠী মাসুদ রানা।

ওই জিডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম ব্যাচের তামিম, ২৫তম ব্যাচের মেজবাহ ও তাসরিফ এবং ২৬তম ব্যাচের মোস্তফা নামের চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

জিডিতে বলা হয়- “অনুষ্ঠানের রিহার্সেল চলাকালে ওই চার শিক্ষার্থী গিয়ে রিহার্সেলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বের করে দেয় এবং অনুষ্ঠান করলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেয়।”

শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদায় অনুষ্ঠানে এক পক্ষ প্রধান অতিথি করতে চাইছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীকে, অন্য পক্ষ চাইছিল আ জ ম নাছিরকে। তা নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত।

সোহেলের সহপাঠী মাসুদ রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে অনুষ্ঠানের রিহাসের্ল করছিল কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী। এসময় হামলাকারীরা গিয়ে তাদের বাধা দেয়।

“এ নিয়ে হাতাহাতি হয়। ওই কক্ষের পাশেই ছিল সোহেল। সে এগিয়ে গেলে তাকে ছুরিকাঘাত করে হামলাকারীরা।”

সোহেল হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও গাড়ি ভাংচুর শুরু করে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। পরে মেয়র নাছিরের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন মহিউদ্দিন। তখন তিনি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। এম মনজুর আলমের সময়েও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন তিনি।

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে মহিউদ্দিনবিরোধী হিসেবে পরিচিত নাছির গত বছর মেয়র হলে প্রিমিয়ারের পরিচালনা নিয়ে বিরোধের শুরু হয়। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়ায়।

মহিউদ্দিনের রিট আবেদনে হাই কোর্ট প্রিমিয়ারের সব কার্যক্রমে উদ্যোক্তা মহিউদ্দিনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আদেশ দেয়।