বিবৃতির জন্য ক্ষমা না চাইলে পাকিস্তান দূতাবাস বন্ধের দাবি

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসিতে উদ্বেগ জানিয়ে দেওয়া বিবৃতির জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে বাংলাদেশে পাকিস্তানি দূতাবাস বন্ধের দাবি তুলেছেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম চট্টগ্রামের নেতারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2015, 07:51 AM
Updated : 23 Nov 2015, 07:51 AM

সোমবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর নিউ মার্কেট চত্বরে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে ফোরামের বিভাগীয় সদস্য সচিব বেদারুল আলম চৌধুরী বলেন, “যুদ্ধাপরাধী সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তানের বক্তব্য চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ। এই বক্তব্য ১৯৭১ সালে তাদের চরম পরাজয়ের প্রতিশোধস্পৃহার বহিঃপ্রকাশ।

“তারা যদি এই বক্তব্য প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা না করে তাহলে বাংলাদেশে অবিলম্বে পাকিস্তানের দূতাবাস বন্ধ করতে হবে।”

মুজাহিদের ফাঁসির প্রতিবাদে তার দল জামায়াত ইসলামীর ডাকা হরতালের প্রতিবাদে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আদালতের চূড়ান্ত রায়ের পর রোববার প্রথম প্রহরে সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পর এক বিবৃতিতে উদ্বেগের কথা জানায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আমরা গভীর উদ্বেগ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করলাম।”

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর কয়েকজনের সাজার পর এই দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনায় ইসলামাবাদের নাখোশ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে বিবৃতিতে।   

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের এই বিচারকে ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করে এনিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়ার কথাও বলেছে পাকিস্তান।

এই বিবৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অব্যাহত ষড়যন্ত্র বিশ্ববাসীর কাছে পরিস্কার হয়েছে মন্তব্য করে বেদারুল আলম বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে এদেশে যত অঘটন ঘটেছে এবং জঙ্গীবাদের উত্থানের যে অপচেষ্টা হয়েছে- এর সবকিছুই পরিচালিত হচ্ছে পাকিস্তান দূতাবাস থেকে।”

ফোরামের নগর সাধারণ সম্পাদক বি কে বিশ্বাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জেলার সভাপতি মো. ইদ্রিস।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, ফোরামের নগর সভাপতি নূরুল আলম মন্টু, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক খালেদা আক্তার চৌধুরী, সহ-সভাপতি ফজল আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক গৌরি শংকর চৌধুরী প্রমুখ।

পরে হরতাল বিরোধী একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দোস্ত বিল্ডিং চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরও উদ্বেগ জানিয়েছিল পাকিস্তান।

‘পাকিস্তানের প্রতি অনুগত এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সমর্থন করায়’ কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে দাবি করে সে সময় দেশটির পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাবও গৃহীত হয়।

তা নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন মহলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে ওই প্রস্তাব গ্রহণের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।

এবারও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হাই কমিশনার সুজা আলমকে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে।