বেতন কাঠামো নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের মধ্যে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
ওই সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল মনসুর বলেন, “মাননীয় মন্ত্রীকে বলতে চাই, আপনি বয়স্ক হয়েছেন। আপনার অবসর নেওয়ার সময় হয়েছে। দেশের স্বার্থে, সরকার যাতে ঠিকঠাক মতো চলতে পারে, তার জন্য আপনি এবার ইস্তফা দেন।”
তৃতীয় মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন ৮৩ বছর বয়সী মুহিত।
স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী জ্ঞানের অভাবে আন্দোলন করছে। এই কর্মবিরতির কোনো জাস্টিফিকেশন নেই। তারা জানেই না পে-স্কেলে তাদের জন্য কী আছে, কী নেই।”
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো প্রস্তাবের পর থেকে গ্রেড অবনমনসহ কয়েকটি বিষয়ে নিজেদের আপত্তি তুলে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষকরা।
তারা সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়ার মধ্যে গত সোমবার মন্ত্রিসভা অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদন করে।
তবে নিজেদের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না পেয়ে শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর মুহিতের ওই মন্তব্য আসে।
ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে সরকারি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো বুধবার ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ ও মিছিল করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা এবং ঘোষিত বেতন কাঠামো সংশোধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বেতন কাঠামোয় সর্বোচ্চ গ্রেড দেওয়ার দাবি জানান।
অধ্যাপক আবুল মনছুর বলেন, “বেতন কাঠামোয় আমাদের দুই ধাপ নামিয়ে অবনমনের সিদ্ধান্ত বাতিল না করে অর্থমন্ত্রী উল্টো আমাদেরকে নিয়ে গণমাধ্যমে বিরূপ ও মানহানিকর মন্তব্য করেছেন।”
অষ্টম বেতন কাঠামোকে ‘সর্বনিকৃষ্ট’ বেতন কাঠামো দাবি করে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. খসরুল আলম কুদ্দুসী বলেন, “মাননীয় অর্থমন্ত্রী স্বৈরশাসক এরশাদের আমলে মন্ত্রী ছিলেন। উনি নিজে একজন সাবেক আমলা। যে কারণে বেতন কাঠামোয় উনি শিক্ষকদের অবনমন করে আমলাদের প্রাধান্য দিয়েছেন।”
সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক বেণু কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীসহ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।