গত অক্টোবর থেকে টানা খেলে যাচ্ছেন বাংলাদশের ক্রিকেটাররা। অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বরে ছিল দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন টেস্ট ও পাঁচ ওয়ানডের সিরিজ। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট। জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। দেশে ও পরে ব্রিসবেনের ক্যাম্প মিলিয়ে প্রস্তুতি ছিল লম্বা সময় ধরে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলেছে কোয়ার্টার-ফাইনালে। এপ্রিল-মে মাসে ছিল পাকিস্তান সিরিজ। এরপর ভারত সিরিজের আগে অনেকেই খেলেছে বিসিএল। ১০ জুন শুরু ভারত সিরিজ শেষ হয়েছে ২৪ জুন।
ভারত সিরিজের রেশ যেতে না যেতেই আরেকটি সিরিজ। দক্ষিণ আফ্রিকা ঢাকায় পা রাখছে মঙ্গলবার। তার আগের দিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাসহ দু-তিন জন অবশ্য জিম অনুশীলন শুরু করেছেন গত ২৭ জুন থেকেই।
এমনিতে বেশিরভাগ সময়ই খেলার জন্য হাহাকার করতে হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। এবার হচ্ছে উল্টো। এভাবে টানা খেলার মধ্যে থাকার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের খুব বেশি ক্রিকেটারের নেই। তবু টানা খেলার ক্লান্তি নেই কারও চেহারায়, শরীরী ভাষায় বা কণ্ঠে।
চোটের কারণে সতর্কতা হিসেবে ভারত সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতে কিপিং করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। সোমবার অনুশীলনের প্রথম দিনে আঙুল দেখিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বললেন, “কোনো সমস্যা নেই। আশা করি, কিপিং করতে পারব।”
তিন সংস্করণেই দলের অপরিহার্য সদস্য মুশফিক; টেস্টে দলের অধিনায়কও। কিপার ছাড়াও দলের মিডল অর্ডারের মূল স্তম্ভ তিনি। মাঠে তাই কাটাতে হয় অনেক বেশি সময়। ক্লান্তিটাও তার ওপর ভর করার কথা বেশি। তবে দলের সবচেয়ে ‘ফিট’ ক্রিকেটারদের একজনও আবার তিনিই। জানালেন, ক্লান্তি নেই, “সব ঠিক আছে, ফ্রেশ আছি।”
মুশফিকের মতো দারুণ ফিট সাব্বির রহমানও। দেশের সেরা ফিল্ডারদের একজন তিনি। এখনও টেস্ট অভিষেক হয়নি বলে চাপ তার ওপর একটু কম। তারপরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম মৌসুমেই টানা খেলার ক্লান্তি-অবসাদ থাকতেই পারে। কিন্তু সাব্বির বরাবরেই মতোই ঝরঝরে, “ক্লান্তি নেই। মাঠে নামলে আমরা ওসব ভুলে যাই। খেলার দিকেই মন থাকে।”
গত বছরের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক সাব্বিরের। ওই সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে অভিষেক সৌম্য সরকারের। পরে বিশ্বকাপ থেকে টানা খেলছেন নিয়মিত। খেলছেন টেস্টও। মাঝের ওই ছোট্ট ছুটিতেও চট করে ঘুরে এসেছেন নিজ বাড়ি সাতক্ষীরা থেকে। ক্লান্তি সব উবে গেছে তাতেই।
“খারাপ লাগছে না। ক্লান্তি নেই, ফিট আছি।”
ক্লান্তির কথা জিজ্ঞেস করতেই মজা করলেন মুমিনুল হক, “আমি তো খেলিই না, ক্লান্ত হব কেন!”
টেস্টে দলের নিয়মিত মুখ ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকলেও সুযোগ মিলছে না একাদশে। ইঙ্গিত তার সেদিকেই। পরে অবশ্য বললেন, “খেলা খাকলেই ভালো লাগে। ক্লান্তির কিছু নেই।”
জুন-জুলাইয়ে এই প্রথম হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট। এই প্রচণ্ড গরমে ধকলটা সবচেয়ে বেশি যায় যাদের ওপর দিয়ে, সেই পেসারদের প্রতিনিধি রুবেল হোসেন। মরা উইকেটে পেসারদের পরিশ্রম বেড়ে যায় দ্বিগুণ। তবু টানা খেলার অভিযোগ নেই রুবেলের।
“আমরা ক্রিকেটার, খেলতে পারলেই ভালো লাগে। একদম ফিট আছি। ক্লান্তি, ইনজুরি সমস্যা, কিছুই নেই।’’
সোমবার প্রথম দিনের অনুশীলনে ছিল শুধু জিম সেশন ও ফিটনেস ট্রেনিং। মঙ্গলবার শের-ই-বাংলায় নিজেরা দু-দলে ভাগ হয়ে একটি ম্যাচ খেলবেন ক্রিকেটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ যেহেতু টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু আর এই সংস্করণেই সবচেয়ে কম খেলা হয় ক্রিকেটারদের, মঙ্গলবারের প্রস্তুতি ম্যাচটি হবে তাই টি-টোয়েন্টি।