ফলোঅনের শঙ্কায় বাংলাদেশ

ঢাকা টেস্টে পাকিস্তানের বিশাল সংগ্রহের জবাব দিতে নেমে দিনের শেষ সেশনে দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে ফলোঅনে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2015, 04:14 AM
Updated : 7 May 2015, 02:09 PM

ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন আজহার আলির দ্বিশতকে ৮ উইকেটে ৫৫৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১০৭। ফলোঅন এড়াতে এখনও ২৫১ রান চাই স্বাগতিকদের।

দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ, যার শুরুটা হয় প্রথম ওভারেই আগের টেস্টে দ্বিশতক করা তামিম ইকবালের ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে।

জুনায়েদ খানের বলে চার হাঁকিয়ে শুরু করলেও সেই ওভারের চতুর্থ বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তামিম। রিভিউ নিয়েছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কিন্তু তাতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলায়নি।

জুনায়েদের পরের ওভারেই চারটি চার হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাসী শুরু করেছিলেন আগের দুই টেস্টে শতক করা ইমরুল কায়েস। আর টানা ১১ টেস্টে অর্ধশতকের অপেক্ষায় থাকা মুমিনুল হকও ভালো খেলছিলেন।

তবে ইমরুল-মুমিনুলের প্রতিরোধ খুব একটা বড় হয়নি। নবম ওভারেই মুমিনুলকে উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসবন্দি করে এই জুটি ভাঙেন বাঁহাতি পেসার জুনায়েদ।

ইয়াসির শাহকে আক্রমণে এনেই সাফল্য পায় পাকিস্তান। এই লেগস্পিনারের প্রথম ওভারেই বোল্ড হয়ে ফিরে যান উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ইমরুল। এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি মাহমুদউল্লাহও। ওয়াহাব রিয়াজের বাউন্সার ঠিকমতো খেলতে না পেরে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।

ইয়াসিরের করা দিনের শেষ ওভারে পঞ্চম বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার বিদায়ের পরই দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।

মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া সাকিব ১৪ রানে ব্যাট করছেন।

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ৩২৩ রান নিয়ে খেলা শুরু করে পাকিস্তান। কোনো রান যোগ করার আগেই অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হককে হারায় তারা।

দিনের দ্বিতীয় ওভারেই মিসবাহকে বোল্ড করে সাফল্য এনে দেন সাকিব। তবে শুরুতে উইকেট নেওয়ার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি স্বাগতিক বোলাররা।

আগের দিন শতক পাওয়া আজহার ও খুলনা টেস্টে অর্ধশতক পাওয়া আসাদ শফিকের দৃঢ়তায় শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় অতিথিরা। তাদের দৃঢ়তায় প্রথম সেশনে ১০৫ রান যোগ করে অতিথিরা। 

দ্বিতীয় সেশনে দ্রুত রান তোলার দিকে মনোযোগ দেন আজহার ও শফিক। বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে পঞ্চম উইকেটে ২০৭ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান।

এক সময়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৫৩০ রান। শুভাগত হোম চৌধুরী ও তাইজুল ইসলামের ভালো বোলিংয়ে এরপর মাত্র ২৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

দ্বিশতক করা আজহারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরোধ ভাঙেন শুভাগত। তার বলে সীমানায় মাহমুদউল্লাহর ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান ২২৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলা আজহার। তার ৪২৮ বলের ইনিংসটি ২০টি চার ও ২টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

পরের ওভারে শতক করা শফিককে বিদায় করেন অফস্পিনার শুভাগত। তার বলে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে লং অফে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচে পরিণত হন ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ শতক করা শফিক। তার ১৬৭ বলের ইনিংসটি সাজানো ৯টি চার ও ১টি ছক্কায়।

চা-বিরতির আগে শেষ ওভারে জোড়া আঘাতে ওয়াহাব ও ইয়াসিরকে ফিরিয়ে দেন তাইজুল। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে ইমরুলের ক্যাচে পরিণত হন ওয়াহাব আর এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ইয়াসির।    

দ্বিতীয় সেশনে চার উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান যোগ করে পাকিস্তান। ৮ উইকেটে ৫৫৭ রানে চা-বিরতিতে যায় অতিথিরা। এই সময়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ৫৫৭/৮ ইনিংস ঘোষণা (হাফিজ ৮, সামি ১৯, আজহার ২২৬, ইউনুস ১৪৮, মিসবাহ ৯, শফিক ১০৭, সরফরাজ ২১, ওয়াহাব ৪, ইয়াসির ০; তাইজুল ৩/১৭৮, শহীদ ২/৭২, শুভাগত ২/৭৬, সাকিব ১/১৩৬)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০৭/৫ (তামিম ৪, ইমরুল ৩২, মুমিনুল ১৩, মাহমুদউল্লাহ ২৮, সাকিব ১৪*, মুশফিক ১২; ইয়াসির ২/১৫, জুনায়েদ ২/২৬, ওয়াহাব ১/৩৩)