আজহার, ইউনুসের শতকে পাকিস্তানের দিন

ঢাকা টেস্টের প্রথম সেশনে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ ও সামি আসলামকে ফিরিয়ে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দুই সেশনে আজহার আলি ও ইউনুস খানের দাপুটে ব্যাটিংয়ে প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2015, 03:55 AM
Updated : 6 May 2015, 02:46 PM

বুধবারের খেলা শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩২৩ রান। আজহার ১২৭ ও মিসবাহ-উল-হক ৯ রানে ব্যাট করছেন। ক্যারিয়ারের অষ্টম শতক পাওয়া আজহারের ২৫৮ বলের ইনিংসটি সাজানো ১৩টি চারে।

শতক পাওয়া দুই খেলোয়াড় আজহার ও ইউনুস ‘নো’ বলের কল্যাণে একবার করে জীবন না পেলে দিনটি হতে পারত বাংলাদেশেরও।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে শুরুতেই বড় একটা ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ম্যাচের প্রথম বলটি করতে গিয়ে চোট পান শাহাদাত হোসেন। রুবেল হোসেনের বদলে একাদশে ফেরা এই পেসার দ্বিতীয় বলের পরই মাঠ ছাড়েন।

শুরুতে শাহাদাতের অভাব বুঝতে দেননি মোহাম্মদ শহীদ। মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করে খুলনা টেস্টে দ্বিশতক করা হাফিজকে ফেরান তিনি।

পরে মাঠে ফিরে সীমানায় সামি আসলামের ক্যাচটি তালুবন্দি করেন শাহাদাত। পাকিস্তানের বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলামকে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে ফিরে যান। তার বিদায়ের সময় পাকিস্তানের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৫৮ রান।  

এর আগেই পাকিস্তান হারাতে পারত আজহারের উইকেট। শহীদের বলে স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত হয়েছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সে সময় ১৮ রানে থাকা আজহার বেঁচে যান ‘নো’ বলের কল্যাণে। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক।

আজহার দেখেশুনে খেললেও শুরু থেকেই রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগী ছিলেন ইউনুস। প্রথম সেশনে ২ উইকেটে ৭০ রান তোলা দলটি দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে যোগ করে আরও ১২৬ রান।

মধ্যাহ্ন-ভোজের বিরতির সময় সেন্টার উইকেটে বোলিং অনুশীলন করার সময় পড়ে গিয়ে হাঁটুতে চোট পান শাহাদাত। মাত্র দুই বল করেই ঢাকা টেস্ট শেষ হয়ে গেছে এই পেসারের। মাত্র দুই জন পেসার নিয়ে খেলা বাংলাদেশের জন্য দিন শেষে এটা দারুণ ক্ষতি হয়েই দেখা দেয়।

তাইজুল, সাকিব আল হাসান, শুভাগত হোম চৌধুরীরা খুব একটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারছিলেন না পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের। তাদের সহজেই খেলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন আজহার-ইউনুসরা।

জুটি ভাঙতে মাহমুদউল্লাহ, মুমিনুল হক, ইমরুল কায়েসদের হাতেও বল তুলে দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। তৃতীয় সেশনের শুরুতেই বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভেঙে যেতে পারত। সৌম্যর বলে শর্ট কাভারে সাকিবের ক্যাচ পরিণত হয়েছিলেন সে সময় ৭৮ রানে ব্যাট করা ইউনুস। কিন্তু ‘নো’ বলের কল্যাণে বেঁচে যান তিনি।

শহীদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে আরও ৭০ রান যোগ করেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

৮০ ওভার শেষেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয় বাংলাদেশ। আর প্রথম ওভারেই আজহারকে অস্বস্তিতে ফেলেন শহীদ। দারুণ বল করা এই পেসারের সাফল্যের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি।

দ্বিতীয় নতুন বলে নিজের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন শহীদ। তার বলে গালিতে শুভাগতর দ্বিতীয় প্রচেষ্টার ক্যাচে পরিণত হন ইউনুস। তার বিদায়ে ভাঙে ২৫০ রানের বড় জুটি।

ক্যারিয়ারের ২৯তম শতকে (১৪৮) পৌঁছানো ইউনুসের ১৯৫ বলের দারুণ ইনিংসটি ১১টি চার ও ৩টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

বাকি সময়টুকু ছক্কা হাঁকিয়ে রান শুরু করা মিসবাহকে নিয়ে কোনো ক্ষতি ছাড়াই কাটিয়ে দেন আজহার।

২১ ওভার বল করে ৪৩ রানে দুই উইকেট নিয়ে শহীদই স্বাগতিক দলের সেরা বোলার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩২৩/৩ (হাফিজ ৮, সামি ১৯, আজহার ১২৭*, ইউনুস ১৪৮, মিসবাহ ৯*; শহীদ ২/৪৩, তাইজুল ১/১০২)