মুশফিককে ছাড়িয়ে সবার উপরে তামিম

মুশফিকুর রহিমের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দ্বিশতক করেছেন তামিম ইকবাল। অধিনায়ককে ছাড়িয়ে টেস্টে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এখন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানেরই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2015, 08:03 AM
Updated : 2 May 2015, 01:59 PM

খুলনা টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিন ২৬৪ বলে দ্বিশতকে পৌঁছান তামিম। অনন্য এই মাইলফলকে পৌঁছাতে ১৭টি চার ও ৭টি ছক্কা মারেন তিনি। ২০৬ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে বাংলাদেশকে ম্যাচ বাঁচানোর পথে অনেকখানি এগিয়ে দেন তামিম।

২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে টানা দুই টেস্টে শতক পাওয়ার পর থেকে অনেক দিন এই সংস্করণে আর তিন অঙ্কে পৌঁছাতে পারছিলেন না তামিম। গত বছর নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ দুই টেস্টে শতক করে তিন অঙ্কে পৌঁছাতে না পারার হতাশা দূর করেন তামিম।

টেস্ট শতকের জন্য তামিমের চার বছরের বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান হয়েছিল খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই শতকে পৌঁছাতে ৩১২ বল খেলেছিলেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

পরের টেস্টে নিজের শহর চট্টগ্রামে আরেকটি শতক তুলে নেন তামিম। এই শতকটি অবশ্য করেন স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে দারুণ ছন্দে ছিলেন তামিম। ওয়ানডে সিরিজে টানা দুটি শতক করেন এই ব্যাটসম্যান। প্রথম দুই ওয়ানডের সেই শতকে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। টেস্টে যার স্ফুরন দেখালেন তিনি।

২০১০ সালটা তামিমের কেটেছিল স্বপ্নের মতো। ইংল্যান্ডে স্বাগতিক বোলারদের বিধ্বস্ত করার আগে জানুয়ারিতে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে খেলেন ১৫১ রানের চমৎকার এক ইনিংস। খুলনা টেস্টের আগে সেটাই ছিল তার ক্যারিয়ার সেরা।

মাঝখানের চার বছর অনেকটা নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন দেশের সেরা এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। তবে বাজে সময়গুলো পেছনে ফেলে আবার স্বরূপে ফিরেছেন বাংলাদেশের সেরা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

বাংলাদেশের ভীষণ বিপদের সময় তামিম খেললেন তার ক্যারিয়ার সেরা এক ইনিংস। শুক্রবার সকালে ফুপুর মৃত্যুর খবর শোনার পরও মনোবল অটুট রেখে নিজের সপ্তম শতক তুলে নেন তিনি।

চতুর্থ দিন শেষে ১৩৮ রানে অপরাজিত থাকা তামিমের দিকে পঞ্চম ও শেষ দিনও তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক ফিরে গেলেও অবিচল ছিলেন তামিম। তার ব্যাটেই ম্যাচ বাঁচানোর পথে অনেকখানি এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

চার হাকিয়ে মুমিনুলকে (১৮১) স্পর্শ করেন তামিম। একটি এক রান নিয়ে মুমিনুলকে ছাড়িয়ে যান তিনি। ইয়াসির শাহর বলে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলকে (১৯০) পেছনে ফেলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

জুনায়েদ খানের বলে তার মাথার ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের প্রথম দ্বিশতকে পৌঁছান তামিম। সেই সঙ্গে মুশফিককে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি।

২০১৩ সালে গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০ রান করেছিলেন মুশফিক। টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিশতক করার কৃতিত্ব তারই।