তামিম-ইমরুল বীরত্বে খুলনা টেস্ট ড্র

তামিম ইকবালের দ্বিশতকে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্ট ড্র করেছে বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম দেড়শ’ রান পাওয়া ইমরুল কায়েসের অবদানও এতে কম নয়।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতখুলনা থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2015, 04:45 AM
Updated : 2 May 2015, 01:56 PM

পাকিস্তানের কাছে আগের আট টেস্টেই হেরেছিল বাংলাদেশ। মিসবাহ-উল-হকের দলে সঙ্গে ড্র তাই মুশফিকুর রহিমের জন্য বড় অর্জনই।

শনিবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বিনা উইকেটে ২৭৩ রান নিয়ে খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা স্বাগতিকরা তখনও ২৩ রানে পিছিয়ে ছিল।

দেখেশুনে খেলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকা তামিম-ইমরুলকে থামাতে পারেনি পাকিস্তানের বোলাররা।

বৃষ্টির বাধায় আগেভাগে মধ্যাহ্ন-ভোজের বিরতিতে যাওয়ার পর দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে ইমরুল যখন আউট হন তখন অনেকটাই ম্যাচ বাঁচানোর পথে বাংলাদেশ।

টেস্ট ইতিহাসে কোনো দলের দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফিরে যান ইমরুল। ১৫০ রান করে তার বিদায়ে ভাঙে ৩১২ রানের বিশাল উদ্বোধনী জুটি। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ২৪০ বলের ইনিংসটি ১৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় গড়া।

প্রথম ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মুমিনুল হক জুটি বাঁধেন তামিমের সঙ্গে। এই জুটিকেও থামতে হয় বৃষ্টির বাধায়। আবার খেলা শুরু হওয়ার পর জুনায়েদ খানের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান মুমিনুল।

তৃতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৫৪ রানের আরেকটি জুটি গড়ে দ্রুত উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দেন তামিম। দলের রান চারশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে ফিরে যান এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

মোহাম্মদ হাফিজের বলে স্টাম্পিং হওয়ার আগে ২০৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন তামিম। তার ২৭৮ বলের ইনিংসটি ১৭টি চার ও ৭টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

২০১০ সালে ঢাকা টেস্টে ভারতের বিপক্ষে করা ১৫১ রান ছিল তামিমের আগের সর্বোচ্চ।

৪৪৮ মিনিট স্থায়ী অসাধারণ এই ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিশতক করেন তামিম। একই সঙ্গে মুশফিকুর রহিমকে (২০০) পেছনে ফেলে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি।

তামিমের বিদায়ে সময় ১০৩ রানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এরপর মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসান পাকিস্তানের বোলারদের হতাশ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে থাকেন।

তৃতীয় সেশনের শুরুতে মাহমুদউল্লাহকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন জুনায়েদ। এরপর হাফিজের বলে বল ছেড়ে মুশফিকুর রহিম এলবিডব্লিউ হলে কিছুটা চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাকিব ও অভিষিক্ত সৌম্য সরকার।

৬০ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান সৌম্য। প্রথম ইনিংসের মতো তার দ্বিতীয় ইনিংসটিও শেষ হয় ৩৩ রানে।

অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেটে শুভাগত হোম চৌধুরীর সঙ্গে ৩১ রানের জুটি গড়েন সাকিব। দিনের খেলা ১৫ ওভার বাকি থাকার সময় ড্র মেনে নেয় দুই দল। এ সময়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে এটি সর্বোচ্চ রান আর সব মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

৭৬ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ১০৪ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজানো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ১২০ ওভারে ৩৩২ (তামিম ২৫, ইমরুল ৫১, মুমিনুল ৮০, মাহমুদউল্লাহ ৪৯, সাকিব ২৫, মুশফিক ৩২, সৌম্য ৩৩, শুভাগত ১২*, তাইজুল ১, শহীদ ১০, রুবেল ২; ওয়াহাব ৩/৫৫, ইয়াসির ৩/৮৬, হাফিজ ২/৪৭, বাবর ২/৯৯) ও ১৩৬ ওভারে ৫৫৫/৬ (তামিম ২০৬, ইমরুল ১৫০, মুমিনুল ২১, মাহমুদউল্লাহ ৪০, সাকিব ৭৬*, মুশফিক ০, সৌম্য ৩৩, শুভাগত ২০*; হাফিজ ২/৮২, জুনায়েদ ২/৮৮, শফিক ১/৩২, বাবর ১/১২৫)

পাকিস্তান: ১৬৮.৪ ওভারে ৬২৮ (হাফিজ ২২৪, সামি ২০, আজহার ৮৩, ইউনুস ৩৩, মিসবাহ ৫৯, শফিক ৮৩, সরফরাজ ৮২, ওয়াহাব ০, ইয়াসির ১৩, বাবর ১১, জুনায়েদ ০; তাইজুল ৬/১৬৩, শুভাগত ২/১২০, শহীদ ১/৫৯, সাকিব ১/১৪৬)।

ম্যাচসেরা: তামিম ইকবাল