অপেক্ষা ঘোচার পর এবার সিরিজ জয়ের হাতছানি

১৬ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে বাংলাদেশের; এখন সামনে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সুযোগ। তিন ম্যাচের সিরিজ, তাই শেষ দুই ম্যাচের একটিতে জয় হলেই চলবে। তবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে রাজি নন মাশরাফি বিন মুর্তজা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই সিরিজ নিশ্চিত করতে চান তারা।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2015, 02:40 PM
Updated : 19 April 2015, 09:25 AM

রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিবা-রাত্রির ম্যাচটি শুরু হবে বেলা আড়াইটায়।

বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে স্লো ওভার রেটের কারণে ৭৯ রানে জেতা প্রথম ম্যাচে খেলা হয়নি মাশরাফির। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে রোববারের ম্যাচে ফিরছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। তাকে জায়গা দিতে বাদ পড়বেন অলরাউন্ডার আবুল হাসান।

দলে ফিরে খুব একটা ভালো করতে পারেননি হাসান। ৫ ওভারে ৪০ রান দেন কোনো উইকেট না পাওয়া এই পেসার। তার এক ওভারে চারটি চারসহ ১৯ রান নিয়ে পাল্টা-আক্রমণ শুরু করে অতিথিরা।  

পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলা বাংলাদেশের বোলিং বেশ শক্তিশালী। মাশরাফি-রুবেল হোসেন-তাসকিন আহমেদে গড়া পেস আক্রমণ এখন নিয়মিতই সাফল্য পাচ্ছে। প্রয়োজনে সৌম্য সরকারের সহায়তাও পাবেন তারা।

পেস ত্রয়ীর চেয়ে কোনো অংশে কম যান না সাকিব আল হাসান ও আরাফাত সানি। এই দুই বাঁহাতি স্পিনার ব্যবধান গড়ে দিতে পারে দুই দলের মধ্যে। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব ছন্দেই আছেন। আর দেশের মাটিতে বরাবরই ভয়ঙ্কর আরাফাত।

সাকিব, আরাফাতের নেতৃত্বাধীন স্পিন আক্রমণ সহায়তা পেতে পারে নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমানের কাছ থেকে। বোলিংয়ে অনেক বিকল্প থাকায় অনেকটাই নির্ভার বাংলাদেশের অধিনায়ক।

তামিম ইকবাল ছন্দে ফেরায় স্বস্তিতেই আছেন মাশরাফি। ভালো শুরুর জন্য এখন আর খুব একটা দুর্ভাবনা নেই তার। দ্বিতীয় ম্যাচেও তামিমের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে পারেন সৌম্য সরকার।

“আমি সব সময় একটা বলে এসেছি, তামিমের রান করাটা সময়ের ব্যাপার। আমরা খুব সহজেই বলতে পারি যে ও রানে নেই। কিন্তু ও যেভাবে অনুশীলন করছিল, যেভাবে সে নেটে রান করছিল; তা দেখে আমার মনে হয়েছে, ও শিগগিরই ভালো করবে। তামিম রানে ফিরেছে, ও যেন এটা ধরে রাখতে পারে।”

আবারও পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে। সৌম্য ইনিংস উদ্বোধন করায় মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং অর্ডারে এক ধাপ ও মুশফিকুর রহিম দুই ধাপ এগিয়েছেন। শুক্রবারের ম্যাচে তিনে মাহমুদউল্লাহ, চারে ‘রান মেশিন’ মুশফিক ও পাঁচে সাকিব ব্যাট করেন।

সাব্বির ও নাসির ব্যাট করেন সাত ও আট নম্বরে। প্রয়োজনে নিচের দিকে কিছু রান করার সামর্থ্য আছে মাশরাফিদেরও। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আপাতত কোনো ভাবনা নেই মাশাফিদের।

“আসলে ব্যাটিং অর্ডারের বিষয়টা একটা সংখ্যা মাত্র। দলের চাহিদা অনুযায়ী খেলতে হবে। মানসিকভাবে সবাইকে সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সবাই এই চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি। দলের ভারসাম্য খুব ভালো।”

প্রথম ম্যাচে পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলার মাসুল দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। অভিষেকে অনুজ্জ্বল সাদ নাসিমের জায়গায় বাঁহাতি স্পিনার জুলফিকার বাবরকে ফিরিয়ে বোলিং আক্রমণে ধার বাড়াতে পারে অতিথিরা।

ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলি তাকিয়ে আছেন বোলারদের দিকে। তার বিশ্বাস, প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে ঘুরে দাঁড়াবেন জুনায়েদ খান, সাইদ আজমলরা।

প্রস্তুতি ম্যাচের মতো প্রথম ওয়ানডেতেই ফিল্ডিংয়ে ভালো করেনি পাকিস্তান। ৭৯ রানের হারের পর ফিল্ডিংকেই দুষেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। পরের ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে উন্নতির জন্য সতীর্থদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মিসবাহ-উল-হক, শহিদ আফ্রিদির মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের অভাব অনুভব করছেন আজহার। তবে দলে যারা আছেন তাদের ওপরও যথেষ্ট আস্থা আছে পাকিস্তানের নতুন অধিনায়কের।

সরফরাজ আহমেদ, আজহার, মোহাম্মদ হাফিজ, হারিস সোহেল, ফাওয়াদ আলম, মোহাম্মদ রিজওয়ানে গড়া পাকিস্তানের ব্যাটিং গভীরতা খুব বেশি নয়। ছয় জন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান নিয়ে বড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতা কঠিনই হবে তাদের জন্য।

পুনর্গঠনের মধ্যে থাকা পাকিস্তানের নিজেদের গুছিয়ে নিতে আরো সময় প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। অতিথিরা নিজেদের ফিরে পাওয়ার আগেই তাই সিরিজ নিশ্চিত করতে চান তিনি।