আইসিসি থেকে কামালের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2015, 07:15 AM
Updated : 1 April 2015, 03:25 PM

বুধবার বাংলাদেশে পৌঁছে বিমানবন্দরেই এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী কামাল। সভাপতি হিসেবে তার মেয়াদ ছিল আগামী জুন পর্যন্ত।

তিনি বলেন, আইসিসির সংবিধানের ৩.৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে ফাইনালে বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি দেওয়ার অধিকার কেবল সভাপতিরই আছে।

“২৯ তারিখ মেলবোর্নের ফাইনালে ট্রফি দেওয়ার কথা ছিল আমার। কিন্তু আমি সেটা দিতে পারি নাই।”

কামাল দাবি করেন, বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার-ফাইনাল নিয়ে কিছু মন্তব্য করাতেই তাকে ফাইনালের বিজয়ী দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দিতে দেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়ে কামাল বলেন, “এই মুহূর্ত থেকে আমি আইসিসির সাবেক সভাপতি হিসেবে কথা বলব।”

এরপর পদত্যাগ করার কারণ জানিয়ে কামাল বলেন, “যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে, তাদের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব না। পৃথিবীর সবাইকে আমি তা জানাতে চাই।”

মুস্তফা কামালের পদত্যাগ করার বিষয়টি পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করে আইসিসি।

বাংলাদেশ-ভারত মেলবোর্নের কোয়ার্টার-ফাইনালে ‘বিতর্কিত’ আম্পায়ারিংয়ের পর আইসিসির কড়া সমালোচনা করেন কামাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল এখন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলেরই নামান্তর বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তখন প্রয়োজনে পদত্যাগ করার কথাও জানান তিনি।

আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড রিচার্ডসন পরে এক বিবৃতিতে মুস্তফা কামালের মন্তব্যকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যা দেন। ফাইনালের আগে আইসিসির এক অনানুষ্ঠানিক সভায় কামালকে তোপের মুখে পড়তে হয়। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ফাইনালে বিজয়ী দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেবেন আইসিসির চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।

ক্রিকেট সংগঠক মুস্তফা কামাল দুই বছর আইসিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকার পর নয় মাস সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের পর আইসিসি সভাপতি হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে প্রতিবাদ করেছেন তিনি। আর সঙ্গত কারণেই তাকে প্রতিবাদ করতে হয়েছে।

কামাল জানান, ফাইনালের আগের দিন বিকেলে এক ঘণ্টার নোটিশে একটি সভা ডাকা হয়। সেখানে তাকে তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়। কামাল তা অস্বীকার করলে তখন তাকে বলা হয় বক্তব্য প্রত্যাহার করতে। তাতেও রাজি হননি তিনি। তখন তাকে বলা হয়, বক্তব্য প্রত্যাহার করা না হলে ফাইনালে তিনি পুরস্কার দিতে পারবেন না।

কামাল বক্তব্য প্রত্যাহার না করে তখনই জানান, আইসিসির সভাপতিকে বাদ দিয়ে কেউ পুরস্কার দিতে পারবে না। সংবিধান পরিপন্থী কাজ না করতেও নিষেধ করেন তিনি।

“আপনারা কৈফিয়ত দাবি করতে পারেন, কেন আমি কথাগুলো বললাম, আমি এর জবাব দিতে বাধ্য।… কিন্তু এর বাইরে কিছু হবে না।”

কামাল জানান, সংবিধান বদলাতে হলে উপযুক্ত নোটিশ দিয়ে সভা আহবান করতে হয়। দশ জন পূর্ণ সদস্য দেশের মধ্যে আট জনের ভোট লাগবে তাতে। এরপর এটা যাবে বার্ষিক সভায়। সেটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তাকে সভাপতি পদ থেকে সরাতে।

এসব যুক্তি তুলে ধরে কামাল দাবি করেন, তার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে জোর করে, অসাংবিধানিকভাবে।