বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়ার সামনে রাজত্বের হাতছানি

বিশ্বকাপ জয়ী বীরদের অভিনন্দন জানাতে হবে, খুব কাছ থেকে একবার দেখতে হবে। সোমবার সকাল থেকেই মেলবোর্নের ফেডারেশন স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকে। বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা আসেন, সোনালি সমুদ্রে ঢেউ ওঠে। জয়োধ্বনির স্লোগানে মাইকেল ক্লার্কদের অভিনন্দন জানায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2015, 03:19 PM
Updated : 30 March 2015, 03:19 PM

কনফেত্তির ওড়াউড়ি, চারদিক থেকে জয়োধ্বনি ভেসে আসা, হাতে বিশ্ব জয়ের স্মারক সোনালি ট্রফি-রোববার রাতের প্রথম প্রহরটা স্বপ্নাবেশেই কেটেছে অস্ট্রেলিয়ার। পরের কয়েক ঘণ্টা কেটেছে উদ্দাম উদযাপনে। তারপর খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে নেওয়া। এরপরই সোমবারের সোনালি ভোর, হাজার হাজার মানুষের উচ্ছ্বাস আর আনন্দের ভেলায় ভেসে যাওয়া।

ফেডারেশন স্কয়ারে এসে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ব জয়ী অধিনায়ক ক্লার্ক নিউ জিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নেওয়ার দিনটির অনুভূতির কথা জানান।

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতি সে দেশের মানুষের প্রত্যাশাটা তাই একটু বেশিই ছিল। সেই প্রত্যাশার চাপ নিয়ন্ত্রণ করে দেশকে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দিতে পারায় অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা সবাই গর্বিত। সবার পক্ষ থেকে এই অনুভূতির কথা জানিয়ে দেন বিদায়ী অধিনায়ক ক্লার্ক।

শেষটা আক্ষরিক অর্থেই দারুণ হলো ক্লার্কের। বিশ্বকাপ জিতে বিদায়, টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাট হাতেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। ৯৩ হাজার দর্শকের সামনে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে ৭৪ রান করেন ক্লার্ক।

অস্ট্রেলিয়া এখনও নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেনি। তবে ক্লার্কের অনুপস্থিতিতে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেওয়া স্টিভেন স্মিথ বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলেন। ৮ ম্যাচে ৬৭ গড়ে ৪০২ রান করেন তিনি। এই বিশ্বকাপের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও স্মিথ। ক্লার্কের উত্তরসূরি তিনি হতে পারেন বলে মনে করেন অনেকে।

বিদায়ী অধিনায়ক ক্লার্ককে নিয়ে অবশ্য বেশ উচ্ছ্বসিত অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার মিচেল জনসন।

“(ক্লার্ক) অসাধারণ একজন অধিনায়ক ছিল। মাঠে আক্রমণাত্মক অধিনায়ক ছিল সে, আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজায়। সে এমন একজন, যাকে আমরা ‘মিস’ করব।”

শেষ পাঁচটি বিশ্বকাপের চারটিই জিতল অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ জয় দিয়ে শুরু হওয়া ওয়ানডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার রাজত্ব একবারই ধাক্কা খেয়েছিল, সেটা ২০১১ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হার।

ক্লার্কসহ অস্ট্রেলিয়া দলে আরও কয়েকজন ক্রিকেটারের এটাই শেষ বিশ্বকাপ। এর মধ্যে আছেন জনসন, অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন ও উইকেটরক্ষক ব্র্যাড হ্যাডিন।

অস্ট্রেলিয়া অবশ্য তাদের স্কেয়াডের কলেবর ফিরে পাওয়ার মতো একটি দল। নতুন করে সাজানো আর উদ্ভাবন তাদের ঐতিহ্যেই মিশে আছে। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখার পর্যায়ে তারা নিজেদের নিয়ে যাবে।

বাঁহাতি পেসার টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় মিচেল স্ট্যার্ক তাদের অন্যতম ভবিষ্যৎ তারকা। ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ এরই মধ্যে অনেক ব্যাটসম্যানের জন্যই ভীতির অপর নাম। ‘ফিটনেস’ ধরে রাখতে পারলে তার নিজেকে আরও ভালো করে তুলতে পারেন তিনি।

মানসম্পন্ন সঙ্গীর অভাবে ভোগার কথা নয় স্ট্যার্কের। তাকে যোগ্য সঙ্গত করার জন্য জস হেইজেলউড, প্যাট কামিন্স ও জেমস ফকনাররা আছেন। এদের সবারই বয়স ২৬ বছরের নীচে। চোটে ভোগা জেমস প্যাটিনসনও আছেন এই দলে।

অস্ট্রেলিয়াকে শিরোপা ধরে রাখার জন্য সাহায্য করতে ব্যাটসম্যানের অভাবও থাকার কথা নয়। ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্মিথরা এখনো যথেষ্ট তরুণ।  

উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার যেমন বলেই দিলেন, “সব সংস্করণেই এক নম্বরে থাকাই আমাদের লক্ষ্য।”