আয়ারল্যান্ডের নাটকীয় জয়

কোয়ার্টার-ফাইনালের স্বপ্ন আরেকটু উজ্জ্বল হয়েছে আয়ারল্যান্ডের। জিম্বাবুয়েকে বিশাল লক্ষ্য দিয়ে ৫ রানের নাটকীয় জয় পেয়েছে এই বিশ্বকাপে চমক জাগানো দলটি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2015, 03:25 AM
Updated : 7 March 2015, 02:35 PM

শনিবার হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে এড জয়েসের শতক ও অ্যান্ডি বালবারনির ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে ৩৩১ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে আয়ারল্যান্ড।

শুরুটা ভালো না হলেও ব্রেন্ডন টেইলরের শতক ও শন উইলিয়ামসের দারুণ ব্যাটিংয়ে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে। কিন্তু শেষ সময়ের নাটকীয়তায় হার এড়াতে পারেনি; ৩ বল বাকি থাকতে ৩২৬ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।

শনিবার হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় জিম্বাবুয়ে। ৭৪ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারায় দলটি।

পঞ্চম উইকেটে টেইলর ও উইলিয়ামসের ১৪৯ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে জিম্বাবুয়ে। আলেক্স কুসাকের স্লোয়ার বল ঠিক মতো খেলতে না পেরে টেইলর বিদায় নিলে ভাঙে ২০.৫ ওভার স্থায়ী এই জুটি।

চোটের কারণে খেলতে ন পারা নিয়মিত অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরার জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দেয়া টেইলর খেলেন ১২১ রানের দারুণ এক ইনিংস। এই ইনিংস খেলার পথে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন তিনি।

সপ্তম ওয়ানডে শতকের সুবাদে অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের পাশে বসলেন টেইলর। ওয়ানডে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ শতকের রেকর্ড এখন এই দুই জনের। টেইলরের ৯১ বলের ইনিংসটি ১১টি চার ও ৪টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

টেইলরের বিদায়ের পর জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নিতে থাকেন উইলিয়ামস। ক্যারিয়ার সেরা ৯৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে ৬ উইকেটে ৩০০ রানে পৌঁছে দেন তিনি। কেভিন ও’ব্রায়ানের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় তিন জন মুনির হাতে ধরা পড়লে ম্যাচ মোড় ঘুরে যায়।

উইলিয়ামসের ৮৩ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো।

মুনি ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়া ক্যাচটি ধরার সময় সীমানা দড়িতে পা ছুঁয়ে ছিলেন কী না তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তবে একটি ক্যামেরায় মনে হয়েছিল, মুনির পা দড়িতে ছুঁয়েছিল। ছয় না দিয়ে আউট দেওয়ায় টিভিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখা যায় জিম্বাবুয়ের কোচ ডেভ হোয়াটমোরকে। 

কেভিনের পরের ওভারে ১৯ রান নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন টাওয়ান্ডা মুপারিওয়া। শেষ ওভারে ৭ রান প্রয়োজন ছিল জিম্বাবুয়ের। কিন্তু আলেক্স কুসাকের করা সেই ওভারে ১ রান নিতেই শেষ দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

ম্যাক্স সরেনসেনের জায়গায় দলে আসা কুসাকের ৩২ রানে নেন চার উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। তবে অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের সঙ্গে ৬৩ ও বালবারনির সঙ্গে ১৩৮ রানের দুটি চমৎকার জুটি উপহার দিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান ম্যাচ সেরা জয়েস।

৩৪ ও ১০৫ রানে দুই বার জীবন পাওয়া জয়েস ফিরেন ১১২ রান করে। তৃতীয় শতক পাওয়া এই ব্যাটসম্যানের ১০৯ বলের ইনিংসটি গড়া ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায়।

চতুর্থ উইকেটে কেভিনের সঙ্গে বালবারনির ৫৯ রানের জুটি দলকে তিনশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যায়। একবার জীবন পাওয়া কেভিন দলীয় ২৭৬ রানে ফিরে গেলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আয়ারল্যান্ড।

শতকের খুব কাছে পৌঁছে যাওয়া বালবারনি শেষ দিকে স্ট্রাইক পাচ্ছিলেন না। এই সময় তার সঙ্গে ক্রিজে থাকা গ্যারি উইলসন (১৩ বলে ২৫) ও মুনি (৪ বলে ১০) রানের গতি বাড়ানোর দিকেই মনোযোগী ছিলেন।

শেষ ওভারে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলে শতক পাওয়া হয়নি বালবারনির। ৭৯ বলে খেলা তার ৯৭ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস গড়া ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আয়ারল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩১/৮ (পোর্টারফিল্ড ২৯, স্টার্লিং ১০, জয়েস ১১২, বালবারনি ৯৭, কেভিন ২৪, উইলসন ২৫, মুনি ১০, নায়াল ২, ডকরেল ৫*, কুসাক ২*; চাটারা ৩/৬১, উইলিয়ামস ৩/৭২, পানিয়াঙ্গারা ১/৬৯)

জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৩ ওভারে ৩২৬ (চিবাবা ১৮, সিকান্দার ১২, মায়ার ১১, মাসাকাদজা ৫, টেইলর ১২১, উইলিয়ামস ৯৬, আরভিন ১১, চাকাভা ১৭, পানিয়াঙ্গারা ৫, মুপারিওয়া ১৮, চাটারা ১*; কুসাক ৪/৩২, মুনি ২/৫৮, কেভিন ২/৯০, ডকরেল ১/৫৬, বালবারনি ১/৫৬)

ম্যাচ সেরা: এড জয়েস।