নিরাপদ দ. আফ্রিকার সামনে চাপে থাকা পাকিস্তান

দক্ষিণ আফ্রিকার নকআউটে ওঠার পথ নিরাপদ বলাই চলে। আর পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও পাকিস্তানের সেই ভাগ্য দুলছে পেণ্ডুলামের কাটায়। টুর্নামেন্টের বড় দুই দলের একটি গ্রুপ পর্ব শেষ হওয়ার আগেই নকআউটের ছক কষতে শুরু করেছে। আর অন্য দলটির সেখানে যাওয়ার জন্য মরিয়া অবস্থা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2015, 03:09 PM
Updated : 6 March 2015, 03:09 PM

ইডেন পার্ক কৌশলগত এক লড়াই দেখতে পাবে। আর এই ব্যাপারটিই পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটিকে করে দিতে পারে রোমাঞ্চকর। শনিবার নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে ম্যাচটি শুরু হবে স্টেডিয়ামে সকাল ৭টায়।

এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের ব্যাটিং শক্তির প্রদর্শন করতে চাইবে। একটা গ্রুপ পর্বে এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে খেলতে হবে তাদের। কয়েকজন বাঁহাতি পেসার নিয়ে গড়া পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের মধ্যে ভালোই আগ্রাসন আছে।

বোলিং আক্রমণটা দারুণ হলেও ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের অবস্থা খুবই নড়বড়ে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৩৩৯ রান করতে পারলেও ক্ষুরধার বোলিংয়ের বিপক্ষে এখনো খুব একটা ভালো করতে পারেনি তারা।

বিশ্বকাপে চারটি ম্যাচ খেলে ফেললেও পাকিস্তানের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা নিজেদের আসল রূপে ফিরতে পারেননি। ম্যাচ জিততে এখনো তারা তাকিয়ে আছে অধিনায়ক মিসবাহ-উল হকের ব্যাটিং আর বোলারদের দিকে।

এই ম্যাচ হারলেও পাকিস্তানের নকআউটের আশা শেষ হয়ে যাবে না। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটিকে নিজেদের কাছে ‘ফাইনাল/ করে ফেলতে নিশ্চয়ই চাইবে না তারা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েই তাই নিজেদের নকআউটের ওঠার পথটা মসৃণ করে রাখতে চাইবে পাকিস্তান।

দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এই ম্যাচটি কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার আগে ভালো মানের বোলিংয়ের বিপক্ষে ব্যাটিং অনুশীলন সেরে নেওয়ার উপলক্ষ। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি তারা খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে।

দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি ককের জন্য তার বাজে ফর্ম কাটিয়ে ওঠার সুযোগ এটা। বিশ্বকাপের চার ম্যাচসহ সবশেষ ৫টি ওয়ানডেতে একবারই মাত্র দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেন তিনি।

নিজেকে ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে ডি ককের সবচেয়ে বড় বাধা হতে পারেন ওয়াহাব রিয়াজ। অস্ট্রেলিয়ার মিচেল জনসন বা দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইনে পেছনে ফেলে এই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গতির বলটি করেন দারুণ ফর্মে থাকা এই পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারই। নিয়মিতই ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করা ওয়াহাবের দ্রুততম বলটি ছিল ঘণ্টায় ১৫৪ কিলোমিটার গতির।

ওয়াহাবের সঙ্গে মোহাম্মদ ইরফান, রাহাত আলি ও সোহেল খানকে নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমণের ওপর ভরসা আছে মিসবাহরও। শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে কোনো রাখঢাক না রেখেই নিজের দলের আক্রমণের ওপর নিজের বিশ্বাসের কথা জানিয়ে দেন তিনি।

“আমি মনে করি, আমাদের বোলিং সত্যি ভালো হচ্ছে। যে কোনো দলের বিপক্ষে উইকেট নিতে পারার মতো বোলার আছে বলে আমরা আত্মবিশ্বাসী। তাই দেখা যাক (কী হয়)।”

ক্রিকেট বিশ্ব অবশ্য দেখতে চায় পাকিস্তানের এই বোলিং আক্রমণের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার অতিমানবীয় ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের লড়াইটা কেমন জমে। স্টেইন মনে করেন, অধিনায়ক ইচ্ছে করে আউট না হলে কোনো বোলার তাকে আউট করতে পারবে না।

"আমি মনে করি, সে এখন এটা (সে কত ভালো খেলোয়াড়) বুঝতে শুরু করেছে। তাকে আউট করার পথ বের করতে বোলাররা লড়াই করছে। তাকে আউট করার পথ একটাই, সে যখন নিজে আউট হবে।"

মিসবাহর বিশ্বাস, তার বোলররা ডি ভিলিয়ার্সকে থামানোর পথ জানে।

“তাকে নিয়ে অবশ্যই আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে এবং তাকে সত্যিই চাপে রাখতে পারে, এমন ভালো বোলারও আছে আমাদের।”

বোলিং নিয়ে না ভেবে পাকিস্তান তাই ব্যাটিং লাইনআপের ওপরের দিকে পরিবর্তনের কথা ভাবছে। জ্বলে উঠতে না পারা নাসির জামশেদের জায়গায় এদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে পারেন সরফরাজ আহমেদ। আর হারিস সোহেলের চোটের কারণে আবার দলে ফিরতে পারেন ইউনুস খান। তিন নম্বরে ব্যাট করতে পারেন তিনি।

এই ম্যাচের আগে অবশ্য বিশ্বকাপে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসে এগিয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকাই। ১৯৯২, ১৯৯৬ ও ১৯৯৯-এই তিনটি বিশ্বকাপে দুই দলের তিনবার দেখা হয়। তিনটিতেই জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা।