রেকর্ড গড়ে জিতল অস্ট্রেলিয়া

আগের ম্যাচেই উইকেটের দিক থেকে ন্যূনতম ব্যবধানে হারা অস্ট্রেলিয়া এবার রানের ব্যবধানে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টা তুলে নিয়েছে। ডেভিড ওয়ার্নার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ দলীয় রানের ইনিংস গড়ার পর বোলারদের দাপটে আফগানিস্তানকে রেকর্ড ২৭৫ রানে হারিয়েছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2015, 06:42 AM
Updated : 4 March 2015, 04:38 PM

ওয়ানডের সেরা এই টুর্নামেন্টে রানের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় ছিল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০০৭ সালে ভারত বারমুডাকে এবং এবারের আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৭ রানে হারায়।

ম্যাচ সেরা ওয়ার্নারের শতক আর স্টিভেন স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েলের অর্ধশতকে ৬ উইকেটে ৪১৭ রান করে আগের ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ১ উইকেটে হারা অস্ট্রেলিয়া। ২০০৭ এর আসরে বারমুডার বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৪১৩ রান করে আগের রেকর্ড গড়েছিল ভারত।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যের ধারে কাছে যেতে পারেনি আফগানিস্তান। ৩৭ ওভার ৩ বলে ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ায় বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা এড়াতে পারেনি তারা।

এই জয় আবার ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ। তাদের আগের সবচেয়ে বড় জয় ছিল ২৫৬ রানের; ২০০৩ সালে নামিবিয়ার বিপক্ষে।

বুধবার পার্থের ওয়াকায় বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কোনো বড় কোনো জুটি গড়তে পারেনি আফগানিস্তান।

সর্বোচ্চ ৪৮ রানের জুটি গড়েন সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ও নওরোজ মঙ্গল। ৯৪ রানে এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ে বড় জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

সামিউল্লাহ, মঙ্গল ও মোহাম্মদ নবির দ্রুত বিদায়ের দলকে দেড়শ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। ২টি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন মঙ্গল।

সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে নাজিবুল্লাহর বিদায়ের পর আর বেশিদূর এগোয়নি আফগানদের ইনিংস।

৩৯ বলে ৮৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলার পথে শট খেলছেন অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে ব্যাটসম্যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: রয়টার্স

প্রথম ব্যাটিং করার লক্ষ্য ছিল মাইকেল ক্লার্কের। আফগান অধিনায়ক টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠালে তার ইচ্ছাই পূর্ণ হয়। তবে তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ৪ রান করে ফিরে যান অ্যারন ফিঞ্চ।

তবে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করার ওয়ার্নার ও স্মিথ। ৩৪.৩ ওভারে ২৬০ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে। যে কোনো উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়ার পথে চতুর্থ শতক তুলে নেন ওয়ার্নার।  

ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছিলেন রিকি পন্টিং ও শেন ওয়াটসন। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের জুটি ছিল অবিচ্ছিন্ন ২৫২ রানের।

১৭৮ রান করার পথে শট খেলছেন ডেভিড ওয়ার্নার। ছবি: রয়টার্স

ক্যারিয়ার সেরা ১৭৮ রানের ইনিংস খেলে ওয়ার্নারের বিদায়ে ভাঙে বিপজ্জনক দ্বিতীয় উইকেট জুটি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ১৩৩ বলের ইনিংসটি গড়া ১৯টি চার ও ৫টি ছক্কায়। ওয়ার্নারের আগের সেরা ছিল ১৬৩ রান।

ওয়ার্নার যেখানে শেষ করেছিলেন ক্রিজে এসে ঠিক সেখানেই শুরু করেন ম্যাক্সওয়েল। বিস্ফোরক এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান স্মিথের সঙ্গে ৬৫ ও জেমস ফকনারের সঙ্গে ৪৩ রানের দুটি জুটি উপহার দেন।

অবিশ্বাস্য সব শটে ৮৮ রানের দাপুটে ইনিংস খেলে বিদায় নেন ম্যাক্সওয়েল। তার ৩৯ বলের ইনিংসটি ৭টি ছক্কা ও ৬টি চার সমৃদ্ধ। শতকের মাত্র পাঁচ রান দূরে থেকে বিদায় নেন স্মিথ। ৯৮ বলে খেলা তার ৯৫ রানের দৃঢ়তাভরা ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮টি চার ও ১টি ছক্কায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৪১৭/৬ (ওয়ার্নার ১৭৮, ফিঞ্চ ৪, স্মিথ ৯৫, ম্যাক্সওয়েল ৮৮, ফকনার ৭, মার্শ ৮, হ্যাডিন ২০*; শাপুর ২/৮৯, দৌলত ২/১০১, মঙ্গল ১/১৪, হামিদ ১/৭০)

আফগানিস্তান: ৩৭.৩ ওভারে ১৪২ (আহমাদি ১৩, উসমান ১২, মঙ্গল ৩৩, আসগর ৪, সামিউল্লাহ ১৭, নবি ২, নাজিবুল্লাহ ২৪, আফসার ১০, দৌলত ০, হামিদ ৭, শাপুর ০*; জনসন ৪/২২, স্ট্যার্ক ২/১৮, হ্যাজেলউড ২/২৫, ক্লার্ক ১/১৪, ম্যাক্সওয়েল ১/২১)

ম্যাচ সেরা: ডেভিড ওয়ার্নার।