একপেশে লড়াইয়ে আরব আমিরাতকে ১২৯ রানে হারায় পাকিস্তান।
আহমেদ শেহজাদ, শোয়েব মাকসুদ ও অধিনায়ক মিসবাহ-উল হকের অর্ধশতকে এবারের আসরে প্রথমবারের মতো তিনশ’ রানের সংগ্রহ গড়ে পাকিস্তান। শেষ দিকে শহিদ আফ্রিদির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান।
জবাবে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় আরব আমিরাত। লক্ষ্যে ধারে কাছে পৌঁছাতে না পারা দলটি ৮ উইকেটে ২১০ রান করে।
বুধবার ন্যাপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ৩৪০ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দিক হারায় আরব আমিরাত। প্রথম ১০ ওভারে ২৫ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলা সহযোগী দেশটি আর খেলায় ফিরতে পারেনি।
বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাইমন আনোয়ার ও খুররম খানে প্রতিরোধ গড়ে পাকিস্তান। খুররমের বিদায়ে ভাঙে তাদের ৮৩ রানের জুটি। তবে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন আনোয়ার।
৬২ রানের দৃঢ়তাভরা ইনিংস খেলার পথে কুমার সাঙ্গাকারাকে পেছনে ফেলে সেরা সংগ্রাহকদের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসেন আনোয়ার। আনোয়ারের সংগ্রহ ২৭০ আর সাঙ্গাকারার ২৬৮ রান।
সপ্তম উইকেটে আমজাদ জাভেদ ও স্বপ্নিল পাতিলের ৬৮ রানের জুটিতে দুইশ’ পার হয় আরব আমিরাতের সংগ্রহ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই নাসির জামশেদকে হারায় পাকিস্তান। আগের তিন ম্যাচের মতো এবারও ব্যর্থ পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে তাদের উদ্বোধনী জুটি যথাক্রমে ১০, ১, ০ ও ১১।
আগের তিন ম্যাচে মাত্র একটিতে জেতা পাকিস্তানের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। চতুর্থ ওভারেই বিদায় নেন নাসির জামশেদ। মানজুলা গুরুগের বলে পুল করতে গিয়ে খুররম খানের হাতে ধরা পড়েন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
দ্বিতীয় উইকেটে ম্যাচ সেরা আহমেদ শেহজাদ ও হারিস সোহলের দৃঢ়তায় প্রতিরোধ গড়ে পাকিস্তান। তাদের ২৯.২ ওভার স্থায়ী ১৬০ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।
মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে বিদায় নেন হারিস ও শেহজাদ। ৮ ও ১১ রানে দুবার জীবন পাওয়া শেহজাদ (৯৩) ফিরেন রান আউট হয়ে। শেহজাদের ১০৫ বলের ইনিংসটি ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজানো।
দুই থিতু ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও তার কোনো প্রভাব পাকিস্তানের ইনিংসে পড়েনি। শেষ ১৬ ওভারে ১৬৩ রান যোগ করে তারা।
শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার বড় অবদান আছে মিসবাহর। শোয়েব মাকসুদের সঙ্গে ৭৫ ও উমর আকমলের সঙ্গে ৬১ রানের দুটি চমৎকার জুটি উপহার দেন তিনি।
পরপর দুই বলে মিসবাহ (৬৫) ও আকমলকে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান আরব আমিরাতের সেরা বোলার গুরুগে। ৫৬ রানে চার উইকেট নেন এই পেসার।
হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেয়া আফ্রিদি (৭ বলে অপরাজিত ২১) দলকে সাড়ে তিনশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান। এই রান করার পথে আট হাজার রানের মাইলফলক পার হন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩৩৯/৬ (জামশেদ ৪, শেহজাদ ৯৩, হারিস ৭০, মাকসুদ ৪৫, মিসবাহ ৬৫, আকমল ১৯, আফ্রিদি ২১*, ওয়াহাব ৬*; গুরুগে ৪/৫৬, নাভেদ ১/৫০)
সংযুক্ত আরব আমিরাত: ৫০ ওভারে ২১০/৮ (আমজাদ ১৪, বেরেঙ্গার ২, কৃষ্ণ ০, খুররম ৪৩, শাইমান ৬২, স্বপ্নিল ৩৬, মুস্তফা ০, জাভেদ ৪০, নাভেদ ০*, তৌকির ০*; আফ্রিদি ২/৩৫, সোহেল ২/৫৪, ওয়াহাব ২/৫৪, মাকসুদ ১/১৬, রাহাত ১/৩০)
ম্যাচ সেরা: আহমেদ শেহজাদ।