মুখোমুখি দুই ক্রিকেট 'মিত্র'

পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রিকেট বিশ্বের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র। কিন্তু একটি দিনের জন্য হলেও 'বন্ধুত্ব' শব্দটি ভুলে থাকতে চায় দুই দলই। দূরের আঙিনায় বিশ্ব মঞ্চের এই লড়াইয়ে দুই দলই চায় জিততে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2015, 11:59 AM
Updated : 3 March 2015, 11:59 AM

বুধবার নিউ জিল্যান্ডের নেপিয়ারে ম্যাকলিন পার্ক স্টেডিয়ামে দুই দেশের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায়।

এই ম্যাচের আগে নেপিয়ারের বাতাসে 'মিত্র বা বন্ধু', 'চেনা-জানা'-এরকম কিছু শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে। পাকিস্তান ও আমিরাতের ক্রিকেট সম্পর্কের জন্যই শব্দগুলো আসলে বারবার আসছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অন্য দেশগুলো পাকিস্তান সফর বাতিল করার পর এগিয়ে আসে আমিরাত। পাকিস্তানকে বিদেশি দলগুলোর বিপক্ষে তাদের ভেন্যুতে খেলতে দেয় তারা। আমিরাতই এখন পাকিস্তানের ক্রিকেটের 'হোম ভেন্যু'।

ম্যাচের আগে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে কোনো এক সাংবাদিক তো আমিরাতকে পাকিস্তানের 'সৎ ভাই' উল্লেখ করেই একটি প্রশ্ন করেন। আরেকজন আমিরাতের সংবাদ সম্মেলনে কথা তোলেন চেনা-জানার বিষয়টি নিয়ে। এইসব বন্ধুত্বের বিষয় উড়িয়ে দিয়ে জয়ের প্রত্যয়ের কথা বলে সংবাদ সম্মেলনে আসা দুই দলের প্রতিনিধিই।

পাকিস্তানের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক। আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচটিকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না উল্লেখ করে জিততে চাওয়ার প্রতিজ্ঞার কথা বলেন তিনি।

"উন্মুক্ত এক পুল এটা। যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে। আজ বা কাল কে খেলল এবং আপনি কার বিপক্ষে খেলছেন, এটা বিষয়ই নয়; এই পুলের প্রত্যেক ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ।"

এরপর সৎ ভাইয়ের প্রসঙ্গটি টেনে তিনি কোনো ছাড় না দেওয়ার কথা বলেন।

"আমি মনে করি, সংযুক্ত আরব আমিরাত পাকিস্তানের ক্রিকেটে বড় ভূমিকা রেখেছে। ওখানে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। সেখানে টেস্টে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করেছি। আমরা ওখানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও জিতেছি।"

"আমরা তাদের বেশিরভাগ খেলোয়াড়দেরই চিনি। এমনকি তাদের খেলোয়াড়রা আমাদের সঙ্গে দুবাইয়ে খেলছে। আমাদের অনেক খেলোয়াড়ই লিগ ম্যাচ এবং তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে সেখানে খেলেছে। আমি মনে করি, তারা আমাদের খেলোয়াড়দের ভালো করেই চেনে এবং আমরাও তাদের ভালো করে চিনি।" যোগ করেন মিসবাহ।

আমিরাতের ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দলের ৯ জনই পাকিস্তানি। তবে দেশটির অলরাউন্ডার আমজাদ জাভেদ মনে করেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে দলের পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা আমিরাতের জন্যই খেলবে।

"আমি মনে করি, আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে উপস্থাপন করছি। তাই আপনি পাকিস্তানি হয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলছেন কিনা, সেটা কোনো ব্যাপারই নয়। আমরা আমিরাত হিসেবে খেলব। তাই আমরা তাদের বিপক্ষে শতভাগই দেব।"

মাঠের লড়াইয়ে বন্ধুত্ব ভুলে যাওয়া নতুন কিছু নয়। এই দুই দল এর আগে ওয়ানডে ক্রিকেটে দুবার মুখোমুখি হয়। দুবারই ফেভারিট পাকিস্তান ৯ উইকেটের বড় জয় পায়।

এবার দেখা হওয়ার আগে আমিরাতের বিপেক্ষ পাকিস্তানই ফেভারিট। তবে এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের নড়বড়ে অবস্থাটা অঘটনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমিরাতকে। জাভেদ সেই আশার কথাই বলেন।

"আপনারা যদি আমাদের প্রথম দুটি ম্যাচ দেখেন, দেখবেন আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা প্রায় অঘটন ঘটিয়ে ফেলছিলাম। তাই অবশ্যই (অঘটন ঘটাতে) পারি। আমরা এখানে ভালো কিছু দলের বিপক্ষে অঘটন ঘটাতে এসেছি।"