থিরিমান্নে-সাঙ্গা জুটিতে লঙ্কার অনায়াস জয়

বিফলে গেল জো রুটের ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং। কুমার সাঙ্গাকারা ও লাহিরু থিরিমান্নের দুই মেজাজের দুই শতকে বড় লক্ষ্য তাড়া করেও সহজ জয় তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2015, 01:52 AM
Updated : 1 March 2015, 06:44 AM
৯ উইকেটের এই জয়ে পরের রাউন্ডে ওঠার পথে আরেক ধাপ এগিয়েছে বিশ্বকাপের গত দুই আসরের রানার্সআপ দলটি। প্রথম ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের কাছে হারের পর টানা তিনটি ম্যাচ জিতল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের দল। অন্যদিকে বড় তিন প্রতিপক্ষের কাছেই হারল ইংল্যান্ড; তাদের একমাত্র জয়টি স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে।

রোববার ওয়েলিংটনের ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ৩০৯ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৪৭ ওভার ২ বলে ১ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।

শতরানের ভালো ভিত কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি সাঙ্গাকারা। টানা দ্বিতীয় শতক পাওয়া এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের দ্রুতগতির শতকে ১৬ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।

এর আগে বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলকে ভালো সূচনা এনে দেন তিলকারত্নে দিলশান ও থিরিমান্নে। দিলশানের বিদায়ে ভাঙে ১৯ ওভার স্থায়ী ১০০ রানের উদ্বোধনী জুটি। মইন আলির বলে ওয়েন মর্গ্যানের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪৪ রান করেন দিলশান।

অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেটে থিরিমান্নের সঙ্গে ২৮.২ ওভারে ২১২ রানের জুটি গড়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন সাঙ্গাকারা। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ইংল্যান্ডের বোলারদের ওপর চড়াও হন ম্যাচ সেরা সাঙ্গাকারা।
ওয়ানডেতে ২৩তম শতক পাওয়া সাঙ্গাকারা শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ৮৬ বলের ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও ২টি ছক্কায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

তিন বার জীবন পাওয়া থিরিমান্নে অপরাজিত থাকেন ১৩৯ রানে। চতুর্থ শতকে পৌঁছানো এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ১৪৩ বলের ইনিংসটি সাজানো ১৩টি চার ও ২টি ছক্কায়। ক্রিস ওকসের বলে নিজের দ্বিতীয় ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন তিনি।

৩, ৯৯ ও ১২২ রানে জীবন পান থিরিমান্নে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫২ রান করার পথেও তিন বার জীবন পেয়েছিলেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। 

মইন আলির সঙ্গে ইয়ান বেলের ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো হয়েছিল ইংল্যান্ডেরও। অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের বলে মইন সুরঙ্গা লাকমালের তালুবন্দি হলে ভাঙে ৯.২ ওভার স্থায়ী জুটি।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর রানের জন্য লড়াই করতে হয় ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের। ৬.৩ ওভারে অর্ধশতকে পৌঁছানো দলটি নিজেদের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যায় ২০তম ওভারের শেষ বলে।

তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে তিলকারত্নে দিলশানকে দুটি দুরূহ সুযোগ দেয়া বেল মাত্র ১ রানের জন্য অর্ধশতক পাননি। লাকমলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৫৪ বলে ৪৯ রান করেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

১০১ রানে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারানো ইংল্যান্ড বড় সংগ্রহ গড়ে রুটের দৃঢ়তায়। অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যানের সঙ্গে ৬০ ও জেমস টেইলরের সঙ্গে ৯৮ রানের চমৎকার দুটি জুটি উপহার দেন রুট।

রঙ্গনা হেরাথের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ার আগে ১২১ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন রুট। ওয়ানডেতে এটি তার সর্বোচ্চ রান। তার আগের সেরা ছিল ১১৩ রান।

চতুর্থ শতকে পৌঁছানোর পথে মাত্র ২ রানে মাহেলা জয়াবর্ধনের হাতে জীবন পান রুট। শেষ পর্যন্ত ১২১ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ১০৮ বলের ইনিংসটি গড়া ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায়।

প্রথম ৬৫ বলে ৫০ রান করে রুট। আর শেষ ৪৩ বলে ৭১ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

রুটের বিদায়ের পর ইংল্যান্ডের সংগ্রহ তিনশ’ পার হয় জস বাটলারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেটে ক্রিস ওকসের সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি গড়েন তিনি। ৩৯ রানে অপরাজিত থাকা বাটলারের ১৯ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও ১টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

রুট, বাটলারের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শেষ ৭ ওভারে ৯০ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩০৯/৬ (মইন ১৫, বেল ৪৯, ব্যালান্স ৬, রুট ১২১, মর্গ্যান ২৭, টেইলর ২৫, বাটলার ৩৯*, ওকস ৯*; হেরাথ ১/৩৫, দিলশান ১/৩৫, ম্যাথিউস ১/৪৩, পেরেরা ১/৫৫, মালিঙ্গা ১/৬৩, লাকমাল ১/৭১)

শ্রীলঙ্কা: ৪৭.২ ওভারে ৩১২/১ (থিরিমান্নে ১৩৯*, দিলশান ৪৪, সাঙ্গাকারা ১১৭*; মইন ১/৫০)

ম্যাচ সেরা: কুমার সাঙ্গাকারা।