পুনরুজ্জীবিত শ্রীলঙ্কার সামনে 'চাঙ্গা' ইংল্যান্ড

স্বাগতিক নিউ জিল্যান্ডের কাছে হেরে প্রথম ম্যাচে বিরাট ধাক্কা খেয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ স্বপ্ন। পরের দুটি ম্যাচ জিতে পুনরুজ্জীবিত এশিয়ার দেশটি। অন্যদিকে দুই আয়োজক দেশের কাছে হারের হতাশা সবশেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে কিছুটা কাটার কথা ইংল্যান্ডের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2015, 12:55 PM
Updated : 28 Feb 2015, 01:47 PM

রোববার নিউ জিল্যান্ডের ওয়েলিংটন স্টেডিয়ামে পুনরুজ্জীবিত শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে ঘুরে দাঁড়ানো ইংল্যান্ড। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়।  

ওয়েলিংটনের এই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপে নিজেদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ইংল্যান্ডের। আর এ ক্ষেত্রে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি কিছুটা হলে প্রেরণা যোগাচ্ছে দেশটির অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যানকে।

মর্গ্যান নিজে এই ম্যাচ দিয়ে নিজের আসল রূপে ফেরার ইঙ্গিত দেন। ৪২ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানও রান পান। উদ্বোধনী জুটিতে ১৭২ রান করেন মইন আলী ও ইয়ান বেল। ১০৭ বলে ১২৮ রান করেন মইন, বেল আউট হন ৫৪ রান করে।

ইংল্যান্ডের বোলাররাও ভালো করে ম্যাচটিতে। স্টিভেন ফিন নেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট পান জেমস অ্যান্ডারসন, ক্রিস ওকস ও মইন। সব মিলিয়ে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৯ রানের জয়টি বিশ্বাস ফিরিয়ে দেয় ইংল্যান্ডকে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে মর্গ্যানও সেই সুরেই কথা বলেন।

"এই বিশ্বকাপে যা করেছি আমাদের পারফরম্যান্স এর চেয়ে ভালো হতে যাচ্ছে।"

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এই পারফরম্যান্সও হয়ত প্রথম দুটি বড় হারের হতাশা থেকে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের বের করে আনতে পারছে না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে এটা ভোলার জন্য তারা অন্য পন্থা নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের দেয়া ছবি আর তথ্য অন্তত তাই বলে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটে উড়ে যাওয়ার ম্যাচটি রোববার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের ভেন্যু ওয়েলিংটনেই খেলেছিল ইংল্যান্ড। ঘটনাটি যত ভুলে থাকা যায়, এই কারণেই কিনা; খুব ঘোরা ঘুরে বেড়াচ্ছে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা।

ওয়েলিংটনের দর্শনীয় স্থান, পানশালা আর রেস্তোরাঁ- যিনি যেখানে স্বস্তি পাচ্ছেন, যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এই ঘুরে বেড়ানো আর উপভোগের ছবিও সমানে দিয়ে যাচ্ছেন তারা। অনেকেই বলছেন, মন চাঙ্গা রেখে ওয়েলিংটনে পা রাখতে চায় ইংলিশরা।

শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের অবশ্য নিজেদের চাঙ্গা করতে এমন দাওয়াইয়ের দরকার নেই। ভালো পারফরম্যান্সের সঞ্জীবনী সুধাতেই জেগে উঠেছে তারা। শেষ দুটি ম্যাচেই রান পান শ্রীলঙ্কার টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জেতা ম্যাচে শতক করেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পরের ম্যাচে তিলকারত্নে দিলশান অপরাজিত ১৬১ আর কুমার সাঙ্গাকারা অপরাজিত ১০৫ রান করেন।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও ইংল্যান্ডের চেয়ে শ্রীলঙ্কাই এগিয়ে। নিজেদের সবশেষ ৫ ম্যাচের তিনটিতে জেতে শ্রীলঙ্কা। আর ইংল্যান্ড তাদের সবশেষ ৫ ম্যাচে জেতে দুটি। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানও শ্রীলঙ্কার পক্ষেই কথা বলে। গত বছরের শেষ দিকে শ্রীলঙ্কা সফরে ৭ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৫-২ ব্যবধানে হারে ইংল্যান্ড।

এত কিছুর পরও একটা অস্বস্তি আছে লঙ্কানদের-বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিল্ডিংটা বেশি ভালো হয়নি তাদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে এদিক থেকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গটা আসে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসে ইংল্যান্ডের সংবাদ সম্মেলনেও। ইংল্যান্ডের নকআউটে ওঠার পথে বড় এক বাধা বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গেলে ইংল্যান্ডের জন্য কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার হিসেবটা একটু কঠিনই হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিলেই গ্রুপ পর্ব থেকেই তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি ইংল্যান্ডের জন্য তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণই। আসলে বাংলাদেশের জন্যও নয় কি?