জুবায়ের নেই, আস্থা সাকিবের সঙ্গে ২ বাঁহাতি স্পিনারে

বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে স্পিনার বাছাই করতে গিয়ে মধুর সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচকরা। শেষে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আরো দুই বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও আরাফাত সানির ওপর ভরসা রেখেছেন তারা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2015, 11:24 AM
Updated : 4 Jan 2015, 12:38 PM

অভিজ্ঞতার অভাবে দলে জায়গা হয়নি গত জিম্বাবুয়ে সিরিজে অভিষেকেই চমক দেখানো লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেনের। আর সানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাদ পড়েছেন অভিজ্ঞ স্পিনার আবদুর রাজ্জাক।

রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ সাকিবের সঙ্গে তাইজুল ও সানিকে বিশ্বকাপের দলে রাখার ব্যাখ্যা দেন।

এমনিতে বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণ সবসময়ই স্পিন নির্ভর হয়। তবে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন বিবেচনা করে পেসার বেশি রাখতে চেয়েছেন নির্বাচকরা। এই কারণেই ১৫ সদস্যের দলে তিন জনের বেশি বিশেষজ্ঞ স্পিনার না রাখার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান আর বর্তমান ফর্মের বিবেচনায় এই মুহূর্তে আব্দুর রাজ্জাক, জুবায়ের হোসেন, তাইজুল ইসলাম ও আরাফাত সানিদের প্রত্যেকেই দলে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করেছেন নির্বাচকরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই চার জনের মধ্যে তাইজুল আর সানিকেই বেছে নেন তারা।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভালো বল করার পরও জুবায়েরকে না নিতে পারার ব্যাখ্যা দেন ফারুক।

"ছেলেটা এত প্রতিভাবান। এত তাড়াতাড়ি দলে ঢুকিয়ে দিলে তা ওর ক্যারিয়ারের জন্যই ঝুঁকি হয়ে যাবে। তখন আমরা তাকে খেলোয়াড় হিসেবে হারাতে পারি।"

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক হওয়া জুবায়েরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জ নেয়ার অভিজ্ঞতা কম বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয় নির্বাচকদের।

এ পর্যন্ত মাত্র দুটি ওয়ানডে খেলে ৪টি উইকেট নেন এই লেগস্পিনার। মাত্র ছয়টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলা জুবায়ের এই সংস্করণে ২২ গড়ে নেন ১১ উইকেট।

এ ছাড়া বিশ্বকাপ দলে লেগস্পিনে বিকল্প হিসেবে অলরাউন্ডার সাব্বির রহমানও আছেন।

২০৭ উইকেট নিয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী রাজ্জাক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দলে ছিলেন না। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১০ ম্যাচে ১৪.৮১ গড়ে ২১ উইকেট নিলেও বিশ্বকাপের দলে তাকে রাখেননি নির্বাচকরা।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নেয়ার পর বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল সানিকে। এই তিন ম্যাচের শেষ দুটিতে আবার চার উইকেট করে নিয়েছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ডের কন্ডিশনেও এই বাঁহাতি স্পিনারের ওপর আস্থা রেখেছেন নির্বাচকরা।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ৮ ম্যাচের বেশি খেলার সুযোগ হয়নি আরাফাতের। এতে ২৩.০৮ গড়ে ১২ উইকেট নেন তিনি।

রাজ্জাকের চেয়ে লিগে কম উইকেট পেয়েও সানির সুযোগ পাওয়ার কারণ হিসেবে টানা অনেক বছর দেশের শীর্ষ লিগে তার খেলার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ফারুক।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ওয়ানডে অভিষেক হয় তাইজুলের। সেই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে ইতিহাস গড়েন তিনি। ওয়ানডেতে প্রথম বোলার হিসেবে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব দেখানো এই বাঁহাতি স্পিনারকে নিয়ে আরো সমৃ্দ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের স্পিন বিভাগ।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১২ ম্যাচে ২৬.৭৭ গড়ে ১৩ উইকেট নেয়া তাইজুলকে দলে রাখা প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, "তাইজুলের সামর্থ্যই তাকে বিশ্বকাপের দলে সুযোগ এনে দিয়েছে।"   

দলে বাঁহাতি স্পিনারের আধিক্য নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এর ব্যাখ্যাও দেন ফারুক।

"বাঁহাতি স্পিনারে আমরা আগেও সাফল্য পেয়েছি।"

সাকিব, তাইজুল, সানি-বাঁহাতি স্পিন ত্রয়ীকে সাহায্য করার জন্য দলে মাহমুদউল্লাহ আর নাসির হোসেনের মতো অনিয়মিত অফস্পিনার আছেন বলেও বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা জানান ফারুক।