বোলারদের দাপটে বাংলাদেশের সহজ জয়

দেড়শ’ রানের উদ্বোধনী জুটির পর পথ হারানোয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। তবে বোলারদের দাপটে শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ই পেয়েছে স্বাগতিকরা।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 06:10 AM
Updated : 23 Nov 2014, 02:39 PM

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৬৮ রানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

রোববার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৫১ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৪ ওভার ৫ বলে ১৮৩ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। এই মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতেই জিতল স্বাগতিকরা।

মাশরাফি বিন মুর্তজার তোপে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। মাত্র ৫০ রানেই প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারায় অতিথিরা।

প্রথম ওভারেই হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দেন অধিনায়ক। পরপর দুই ওভারে ভুসি সিবান্দা ও সিকান্দার রাজাকে বিদায় করে অতিথিদের চাপে ফেলেন তিনি।

ব্রেন্ডন টেইলকে মাহমুদু্ল্লাহ রিয়াদের ক্যাচে পরিণত করে অতিথিদের বিপদ আরো বাড়ান আরাফাত সানি।

পঞ্চম উইকেটে রেগিস চাকাবভার সঙ্গে ৬৫ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন সলোমন মায়ার। চাকাবভাবে মাশরাফির ক্যাচে পরিণত করে ১৪ ওভার ২ বল স্থায়ী জুটি ভাঙার কৃতিত্ব আল-আমিন হোসেনের।

অর্ধশতকে পৌঁছানোর পর ফিরে যান মায়ার। সাকিব আল হাসানের বলে আরাফাত সানিকে ক্যাচ দেন তিনি।

অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা তখনো ক্রিজে ছিলেন বলে স্বপ্ন দেখছিল জিম্বাবুয়ে। সাব্বির রহমানের সরাসরি থ্রোয়ে চিগুম্বুরা রান আউট হয়ে গেলে অতিথিদের আরেকটি হার নিশ্চিত হয়ে যায়।

ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেছিলেন শেষের ব্যাটসম্যানরা। এক ওভারেই তিন উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের টানা দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করেন সানি।

২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার সানি। আর ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেয়া মাশরাফি হয়েছেন ম্যাচসেরা।

এর আগে তামিম ইকবালের সঙ্গে এনামুল হকের ১৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটি বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দেয়। দুই ব্যাটসম্যানই অর্ধশতকে পৌঁছানোর পর ২৯তম ওভারেই ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নেয় স্বাগতিকরা।

তবে মাত্র ২৩ বলের মধ্যে তামিম, সাকিব আল হাসান, এনামুল ও সাব্বির রহমানকে হারিয়ে ভালো শুরুর সুবিধা হারায় স্বাগতিকরা।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তামিম-এনামুল। সর্বোচ্চ জুটিটি এখনো মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের। ১৯৯৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ১৭০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তারা।

পাওয়ার প্লের শেষ বলে তামিমের রান আউটে দিক হারানোর শুরু বাংলাদেশের। দ্রুত একটি রান নিতে গিয়ে এল্টন চিগুম্বুরার সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হওয়ার আগে ৭৬ রান করেন তামিম। তার ৯৮ বলের ইনিংসটি সাজানো ৭টি চার ও ১টি ছক্কায়।

আগের ম্যাচে শতক পাওয়া সাকিব এবার টিকেন মাত্র এক বল। ভুসি সিবান্দার বলে বোল্ড হয়ে যান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

মাত্র তিন বলের মধ্যে এনামুল ও সাব্বিরকে বিদায় করে স্বাগতিকদের বড় একটা ধাক্কা দেন টিনাশে পানিয়াঙ্গারা। সিবান্দার চমৎকার ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেন এনামুল। তার ১১০ বলের ইনিংসটি গড়া ৫টি চার ও ১টি ছক্কায়।

আগের ম্যাচে ২৫ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের চমৎকার ইনিংস খেলা সাব্বির এবার ফিরেন শূন্য রানে। তার ইনিংস স্থায়ী হয় মাত্র দুই বল।

বিনা উইকেটে ১৫৮ থেকে চার চার উইকেটে ১৭৩ রানে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ লড়াই করার মতো সংগ্রহ গড়তে তাকিয়ে ছিল মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দিকে।

৩১ রানের জুটি গড়ে দুইজন পরপর দুই বলে বিদায় নিলে আবার চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচে এ নিয়ে তিনবার একই রানে দুটো করে উইকেট হারাল স্বাগতিকরা।

ব্যাটিং লাইনআপে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। তাই আগের ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করা মুমিনুল হক ব্যাটিংয়ে আসেন সাত নম্বরে। তার দৃঢ়তায়ই আড়াইশ’ পার হয় বাংলাদেশের সংগ্রহ। ২৩ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল।

জিম্বাবুয়ের কামুনগোজি ও পানিয়াঙ্গারা দুটি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫১/৭ (তামিম ৭৬, এনামুল ৮০, সাকিব ০, মুশফিক ২৭, সাব্বির ০, মাহমুদুল্লাহ ১২, মুমিনুল ৩৩*, মাশরাফি ৬, রুবেল ৫*; কামুনগোজি ২/৩৮, পানিয়াঙ্গারা ২/৫১, সিবান্দা ১/৪৫, চাটারা ১/৫৮)

জিম্বাবুয়ে: ৪৪.৫ ওভারে ১৮৩ (মাসাকাদজা ০, রাজা ১৬, সিবান্দা ২১, টেইলর ৮, মায়ার ৫০, চাকাভবা ৩২, চিগুম্বুরা ৩৮, পানিয়াঙ্গারা ৮, নিউম্বু ০, চাটারা ১*, কামুনগোজি ০; সানি ৪/২৯, মাশরাফি ৩/৩৪, সাকিব ১/১৮, আল-আমিন ১/৪৪)