আপিল করে ফেঁসে গেলেন শ্রীনিবাসন

ভারতের ক্রিকেট বোর্ডে ফেরত আসতে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন গদিচ্যুত সভাপতি নিরঞ্জনস্বামী শ্রীনিবাসন। কিন্তু তাতে উল্টো আরো ফেঁসে গেলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আইপিএলে দুর্নীতি নিয়ে চালানো তদন্তে তার নামও উঠে এসেছে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2014, 07:33 AM
Updated : 16 April 2014, 11:43 AM

বুধবার আদালত বলেছে, শ্রীনিবাসনকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রধান থেকে সরে দাঁড়াতে বলার অন্তর্বতীকালীন আদেশ বলবৎ থাকবে।

গত ২৮ মার্চ আদালতের নির্দেশে বিসিসিআইয়ের সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হয় শ্রীনিবাসনকে। মঙ্গলবার তিনি আপিল আবেদনে বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে বোর্ডে ফেরত যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক।

এ নিয়ে শুনানি চলার সময় বিচারপতি একে পাটনায়েক প্রথমবারের মতো জানান, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি সিল করা খামে যে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করেছে তার মধ্যে শ্রীনিবাসনের নাম আছে ১৩ নম্বরে। আর তার বিরুদ্ধে আছে ১২টি অভিযোগ।

বুধবার পাটনায়েক বলেন, শ্রীনিবাসন তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন না।

এর আগে শ্রীনিবাসনকে সরে দাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে পাটনায়েক বলেছিলেন, “এখনো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে থেকে যাওয়াটা কুরুচিপূর্ণ। ক্রিকেটকে কলুষমুক্ত করার জন্য তার সরে যাওয়া উচিত।”

বোর্ড থেকে সরে দাড়ালেও দুবাইয়ে গত ৯ ও ১০ এপ্রিল আইসিসির সভায় বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন শ্রীনিবাসন। আর আগামী জুলাইয়ে ‘তিন মোড়ল’ ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবে চলে যাওয়া আইসিসির সর্বক্ষমতাসম্পন্ন চেয়ারম্যান হওয়ার কথা তার।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এক আদেশে শ্রীনিবাসনকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে বোর্ডের দায়িত্ব সুনীল গাভাস্কার (আইপিএল বিষয়ক) ও যাদবকে (অন্যান্য সব বিষয়ে) ভাগ করে দেয়।

শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পনের বিরুদ্ধেই বাজি ধরা ও বাজিকরদের কাছে তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাই আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই শ্রীনিবাসনের সরে দাঁড়ানোটা প্রয়োজন বলে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়।

এছাড়া বিসিসিআই বা আইপিএলের সঙ্গে শ্রীনিবাসনের কোম্পানি ইন্ডিয়া সিমেন্টসকে জড়িত করতে নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

এর আগে চেন্নাই সুপার কিংসের গুরুনাথ মায়াপ্পনের বিরুদ্ধে আইপিএলে বাজি ধরা এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমাণ পায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। সাবেক বিচারপতি মুকুল মুডগালের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন এর আগে তাদের যে প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়, তার ওপরই এ শুনানি চলছে।

ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্রীশান্তসহ রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত অনেকের পরিচয় ফাঁস হতে থাকে, গ্রেপ্তার হন আরো কয়েকজন।

তারই ধারাবাহিকতায় প্রেপ্তার হন চেন্নাই সুপার কিংসের ‘প্রিন্সিপাল’ ও শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পন। এরপর শ্রীনিবাসনের পদত্যাগের দাবিতে ওঠার পর বিসিসিআইয়ের এক জরুরি সভায় তাকে এক মাসের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অবশ্য কিছুদিন পরই জামিনে মুক্তি পান মায়াপ্পন। শ্রীনিবাসনও বোর্ড প্রধানের দায়িত্বে ফেরেন। তবে পরে আদালতের রায়ে আবার দায়িত্ব ছাড়তে হয় তাকে। এখন আপিল করেও ফিরতে পারলেন না তিনি।