আইসিসির বৈঠকে গদিচ্যুত শ্রীনিবাসন

ভারতের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির পদ থেকে সরে গেলেও ঠিকই আইসিসির সভায় যোগ দিচ্ছেন নিরঞ্জনস্বামী শ্রীনিবাসন। দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নির্বাহী পর্ষদের আগামী সভায় ভারতের ‘প্রতিনিধিত্ব’ করবেন তিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2014, 02:39 PM
Updated : 8 April 2014, 02:53 PM

ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, দুবাইয়ে আগামী ৯ ও ১০ এপ্রিল আইসিসির সভায় শ্রীনিবাসনের যোগ দেয়া নিয়ে বিসিসিআইয়ের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি শিবলাল যাদব কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আর সম্পাদক সঞ্জয় প্যাটেল তাদের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। তবে বোর্ডের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, শ্রীনিবাসন আইসিসি বোর্ড সভায় থাকবেন।

আগামী জুলাইয়ে ‘তিন মোড়ল’ ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবে চলে যাওয়া আইসিসির সর্বক্ষমতাসম্পন্ন চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন শ্রীনিবাসন।

আইপিএল কেলেঙ্কারির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া শ্রীনিবাসনকে আইসিসির নির্বাহী পর্ষদেই দেখতে চায় না ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিকা। তাদের মতে, আইপিএলে দুর্নীতিতে শ্রীনিবাসনের কোম্পানির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলায় এ নিয়ে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আইসিসির কোনো বিষয়ে তার অংশ নেয়া উচিত নয়।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এক আদেশে শ্রীনিবাসনের সভাপতির দায়িত্ব সুনীল গাভাস্কার (আইপিএল বিষয়ক) ও যাদবকে (অন্যান্য সব বিষয়ে) ভাগ করে দিয়েছে। বিসিসিআইয়ের আভ্যন্তরীন ব্যাপার বলে আইসিসির সভায় তার প্রতিনিধিত্ব করা নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি আদালত।

শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পনের বিরুদ্ধেই বাজি ধরা ও বাজিকরদের কাছে তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাই আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই শ্রীনিবাসনের সরে দাঁড়ানোটা প্রয়োজন বলে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়।

এছাড়া বিসিসিআই বা আইপিএলের সঙ্গে শ্রীনিবাসনের কোম্পানি ইন্ডিয়া সিমেন্টসকে জড়িত করতে নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

এর আগে চেন্নাই সুপার কিংসের গুরুনাথ মায়াপ্পনের বিরুদ্ধে আইপিএলে বাজি ধরা এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমাণ পায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। সাবেক বিচারপতি মুকুল মুডগালের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন এর আগে তাদের যে প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়, তার ওপরই এ শুনানি চলছে।

ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্রীশান্তসহ রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত অনেকের পরিচয় ফাঁস হতে থাকে, গ্রেপ্তার হন আরো কয়েকজন।

তারই ধারাবাহিকতায় প্রেপ্তার হন চেন্নাই সুপার কিংসের ‘প্রিন্সিপাল’ ও শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পন। এরপর শ্রীনিবাসনের পদত্যাগের দাবিতে ওঠার পর বিসিসিআইয়ের এক জরুরি সভায় তাকে এক মাসের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অবশ্য কিছুদিন পরই জামিনে মুক্তি পান মায়াপ্পন। শ্রীনিবাসনও বোর্ড প্রধানের দায়িত্বে ফেরেন। তবে পরে আদালতের রায়ে আবার দায়িত্ব ছাড়তে হয় তাকে।