বাংলাদেশকে 'টেস্ট' শেখালো নিউ জিল্যান্ড

কোরি অ্যান্ডারসনের শতকে ঢাকা টেস্টে তৃতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানে এগিয়ে আছে নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশকে হতাশায় পোড়ানোর জন্য এখনো অতিথিদের হাতে আছে আরো দুই উইকেট।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2013, 03:49 AM
Updated : 23 Oct 2013, 03:18 PM

সাকিব আল হাসানের পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির পরও বুধবারের খেলা শেষে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ৪১৯/৮।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৩ উইকেটে ১০৭ রান নিয়ে খেলা শুরু করে নিউ জিল্যান্ড।

অতিথিদের প্রথম ইনিংসে তিনশ' রানের মধ্যে বেধে ফেলার পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের। এ জন্য আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রস টেইলর ও কেন উইলিয়ামসনকে দ্রুত ফেরানোর শর্ত দিয়েছিলেন সাকিব।

পঞ্চাশতম টেস্টে অর্ধশতকে পৌঁছানো টেইলরকে (৫৩) স্লিপে নাসির হোসেনের ক্যাচে পরিণত করে বাংলাদেশকে পথও দেখিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু এর পর আগের দিন বাংলাদেশের উদাহরণ অনুসরণ না করে 'টেস্ট' মেজাজেই খেলতে থাকে নিউ জিল্যান্ড।

উইকেটে ধৈর্য্যের প্রতিমূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে যান উইলিয়ামসন। আর অনবদ্য সব শটে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক তুলে নেন কোরি অ্যান্ডারসন। এই জুটির দৃঢ়তায় প্রথম সেশনে যোগ হয় ১২৪ রান।

উইলিয়াসনকে ডিপ মিডউইকেটে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত করে ৪২ ওভার ৪ বল স্থায়ী জুটি ভাঙ্গেন আব্দুর রাজ্জাক। তবে এর আগে পঞ্চম উইকেটে ১৪০ রান করে নিউ জিল্যান্ডকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তারা।

১৫১ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৬২ রান করা উইলিয়ামসনের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি অ্যান্ডারসন। চট্টগ্রাম টেস্টে মাত্র ৯ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান আল-আমিন হোসেনের প্রথম টেস্ট শিকারে পরিণত হওয়ার আগে খেলেন ১১৬ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। তার ১৭৩ বলের ইনিংসে ১৩টি চার ও ২টি ছক্কা।

ডগ ব্রেসওয়েলকে (১৭) মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করে টেস্টে দশমবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করেন সাকিব। একটু পরেই অনিয়মিত স্পিনার নাসির হোসেন ফিরিয়ে দেন নিল ওয়াগনারকে।

কিন্তু আগের টেস্টেই দশম উইকেটে শতরানের জুটি গড়ে শতক করা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিং আবার প্রতিরোধ গড়ে তুলেন।

বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের লজ্জা পাইয়ে দেয়ার মতো ব্যাটিং করে অর্ধশতকে পৌঁছানো ইশ সোধি নবম উইকেটে ওয়াটলিংয়ের সঙ্গে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ৮৪ রানের চমৎকার এক জুটি। মাত্রই দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা এই ক্রিকেটার অবশ্য সোহাগ ও তামিমের হাতে একবার করে জীবন পেয়েছেন।

ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকে পৌঁছানো সোধি ৫৫ রানে অপরাজিত। তার ৬৭ বলের ইনিংসে রয়েছে ৭টি চার। অন্যদিকে ওয়াটলিংয়ের অপরাজিত ৫৯ রান এসেছে ১৫৬ বলে।

৯৭ রানে ৫ উইকেট নেয়া সাকিবই বাংলাদেশের সেরা বোলার। আগের দিন বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে আসা এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দলের কম রান সংগ্রহ করা নিয়ে বলেছিলেন, পাঁচ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বেশি রান করা সম্ভব ছিল না। জবাবে উইকেট পড়ার পরও টিকে থেকে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয়, তা দেখিয়ে দিয়েছে অতিথিরা।

তৃতীয় দিন ৯৯.৩ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১২ রান তুলেছে নিউ জিল্যান্ড। ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে বোঝাই যাচ্ছে বাকি দুই উইকেট বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডারের মতো সহজেই বিলিয়ে দেবে না তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৮২ (তামিম ৯৫, মমিনুল ৪৭, মার্শাল ৪১; ওয়াগনার ৫/৬৪, সোধি ৩/৫৯)

নিউ জিল্যান্ড: ৪১৯/৮ (ফুলটন ১৪, রাদারফোর্ড ১৩, উইলিয়ামসন ৬২, টেইলর ৫৩, ম্যাককালাম ১১, অ্যান্ডারসন ১১৬, ওয়াটলিং ৫৯*, ব্রেসওয়েল ১৭, ওয়াগনার ৮, সোধি ৫৫*; সাকিব ৫/৯৭, নাসির ১/৭, আল-আমিন ১/৫৮, রাজ্জাক ১/৮৪)