কোচের ‘সার্টিফিকেট’ পেয়ে আত্মবিশ্বাসী ইমরুল

বহু দিন ধরে বহু পথ ঘুরে যেন সেই শুরুতে ফেরা। ইমরুল কায়েস ফিরছেন সেই আঙিনায়, যেখান থেকে হয়েছিল তার শুরু। আবার দক্ষিণ আফ্রিকা! অভিষেকের আঙিনায় ফিরে নিজেকেও ফিরে পেতে চান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2017, 10:53 AM
Updated : 13 Sept 2017, 10:53 AM

২০০৮ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট অভিষেক ইমরুলের। শুরুতে ভালো করতে পারেননি ততটা। তার পরও তাকে টানা খেলিয়ে গেছে দল। তিন বছর পর হয় ধৈর্যচ্যুতি। প্রথম ১৬ টেস্টে মাত্র একটি হাফ সেঞ্চুরি করার পর জায়গা হারান ২০১১ সালে।

ফেরেন আড়াই বছর পর। ফেরার ইনিংসেই করেন সেঞ্চুরি। এরপর বছর দুয়েক ছিল ক্যারিয়ারের সেরা সময়। গত কিছুদিনে আবার রান খরা। সবশেষ ১৫ ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি মোটে একটি। ৯ বছর আগে যেখানে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, সেখানে এবার তার ক্যারিয়ার বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ।

কাজটা কঠিন। ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানরাও দক্ষিণ আফ্রিকার গতিময় ও বাউন্সি উইকেটে খাবি খায়। ইমরুল তো ফর্ম ফিরে পেতে লড়বেন। জানালেন, চেষ্টার কমতি থাকবে না। বাকিটা ছেড়ে দিলেন ভাগ্যের ওপর।

“আমার জন্য অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হবে। নিজেও সেটা ভালোভাবে জানি। যেহেতু শেষ সিরিজটি ভালো খেলিনি। আসলে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ না, প্রতিটি সিরিজই আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং। আমি চেষ্টা করব চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিতে। চেষ্টা করব মানিয়ে নিয়ে ভালো খেলতে।”

গত কিছুদিনের বাজে পারফরম্যান্সের দায় ইমরুল দিলেন চোটকে। নিজেকে তিনি মনে করেন দুর্ভাগা।

“শেষ দুটি টেস্ট আমার জন্য খারাপ হয়েছে। এর আগে নিউ জিল্যান্ডে ইনজুরি হয়েছে। সেটির কারণে ফেরার পর শ্রীলঙ্কায় ওভাবে পারফর্ম করতে পারিনি। সব মিলিয়ে একটু আনলাকি বলব নিজেকে। ইনজুরি না হলে যে ছন্দে যাচ্ছিলাম, সেই পারফরম্যান্স আরেকটু ভালো হতো। ইনজুরি থেকেও একটু সমস্যা হয়েছে।”

“আমি যেভাবে খেলছি, এভাবে খেলা অবশ্যই একটু কঠিন। আমি নিজেও জানি একটা সিরিজ খারাপ খেললে আমার জন্য পরের সিরিজে চাপের। আমি চেষ্টা করি প্রতিটি সিরিজে রান করার। কখনও সফল হই, কখনও হই না। যে কয়দিন খেলব, চেষ্টা করব ভালো খেলার।”

এই চেষ্টা করার সুযোগ যে পাচ্ছেন, সেটিও আসলে কম নয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টে যেভাবে ব্যাট করেছেন, তাতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলে জায়গা পাওয়ায় নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন ইমরুল। তবে দু:সময়ে তিনি মাথার ওপর পেয়েছেন বড় এক ছাতা। কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের কাছ থেকে পেয়েছেন নির্ভাবনায় খেলার সার্টিফিকেট।

“কোচ বলেছেন, একজন খেলোয়াড় চারটা ইনিংস খারাপ খেলেছে বলে তো আমরা তাকে বাদ দিতে পারি না। আমাকে বলেছেন, ‘তুমি টানা দুই-তিন বছর টেস্ট ক্রিকেটে রান করেছো। সব ফরম্যাটেই রান করেছো। দুই-চারটা ইনিংস খারাপ করলেই তোমাকে বাদ দিতে পারি না।’ আমাকে বলেছেন, ‘তুমি খেলে যাও। অসুবিধা নেই।”

দল নির্বাচন নিয়ে দেশের ক্রিকেটে গত কিছুদিন যে অনিশ্চয়তার বাতাবরণ, তাতে কোচকে পাশে পেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারেন ইমরুল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায়ও ভালো না করলে হয়তো কাঁধ থেকে সরে যাবে এই ভরসার হাতও।

ক্যারিয়ার শুরুর দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়ত এবার ইমরুলের নতুন শুরু, নয়তো থমকে যাওয়া!