দেশ ঘুরে প্রতিভা খুঁজে বের করবেন চম্পকা

ম্যাচের মতো করে অনুশীলন করছিল দল। ড্রেসিং রুমের সামনে দাঁড়িয়ে কোচিং স্টাফের সবাই। হঠাৎ সেখানে হাজির আরেকজন। তাকে দেখে সহাস্যে বুকে জড়ালেন কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। হাত বাড়িয়ে দিলেন কোর্টনি ওয়ালশ। ছুটে এসে বুকে বুক মেলালেন ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন। এসে গেছেন চম্পকা রামানায়েকে!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2017, 12:24 PM
Updated : 17 August 2017, 12:24 PM

কিছুদিন আগেই বিসিবি জানিয়েছিল চম্পকাকে নিয়োগ দেওয়ার খবর। বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রথম বোলিং কোচ ছিলেন সাবেক এই শ্রীলঙ্কান পেসার। এবার অবশ্য তার ভূমিকা একটু ভিন্ন। প্রথম দিনেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্যাখ্যা করলেন তার দায়িত্ব।

“উঠতি ক্রিকেটারদের হাই পারফরম্যান্স ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে থাকছি। আগের বার কয়েক মাস একাডেমিতে কাজ করে পরে জাতীয় দলে কাজ করেছি। এবার তরুণদের নিয়ে কাজ করব। সঙ্গে হয়ত যারা জাতীয় দল থেকে বাদ পড়বে বা ‘এ’ দলে থাকবে এমন ক্রিকেটারদের নিয়ে।”

প্রথমবার যখন বোলিং কোচ ছিলেন চম্পকার কাজে খুশি ছিল সবাই। মেয়াদ বাড়াতেও চেয়েছিল বোর্ড। কিন্তু কাজে সফল চম্পকা স্বাভাবিকভাবেই নতুন মেয়াদে চাইছিলেন একটু বেশি পারিশ্রমিক। সেটি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় দেশে ফিরে যান ২০১০ সালে।

এর পর থেকে বোলিং কোচ হিসেবে তার ভাবমূর্তি ভালো হয়েছে আরও, বেড়েছে খ্যাতি। কিছুদিন আগে বোর্ড প্রধানকে তার কথা আবারও বলেন জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। এরপর থেকেই মূলত তাকে ফেরাতে চাইছিল বিসিবি। এবার তাই চাহিদা পূরণ করেই আনা হয়েছে তাকে।

তার প্রতি প্রত্যাশাও তাই আকাশচুম্বি। সেটি জানেন চম্পকাও। নিজের কাজের ধরনও ঠিক করে ফেলেছেন। ঘুরে বেড়াতে চান দেশজুড়ে; উপহার দিতে চান নতুন প্রতিভা।

“২০০৮-১০ থেকে এবারের চিত্র ভিন্ন। এখন অনেক বেশি ক্রিকেটার আছে। তরুণ, রোমাঞ্চকর ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি। ওদেরকে খুঁজে বের করা ও পরের ধাপটির জন্য তৈরি করে দেওয়া আমার দায়িত্ব।”

“কোচিং একই ধরনের থাকবে। তবে আমি যেন তরুণদের বের করতে পারি, যাদের আগে দেখা যায়নি। আমি ভাবছি, দেশ জুড়ে ঘুরে কাঁচা প্রতিভা তুলে আনব। প্রতিভা অবশ্যই আছে, কারণ এই দেশে ক্রিকেট অনেক বড় ব্যাপার। সহজাত প্রতিভাবান ক্রিকেটার অনেক আছে। আমি তাদের খুঁজে বের করতে চাই।”

আগের মেয়াদে এভাবেই চম্পকা উপহার দিয়েছিলেন রুবেল হোসেনকে। এখন অভিজ্ঞ রুবেলকে দেখে খুঁজে পান তৃপ্তি।

কোচ হিসেবে আগের মেয়াদে চম্পকা বারবার বলতেন, কারও সহজাত ব্যাপারগুলি বদলে দিতে চান না তিনি। স্রেফ আরও শাণিত করে তুলতে চান। জানালেন তার কোচিং দর্শন পাল্টায়নি এখনও।

“সহজাত সামর্থ্যে খুব বেশি বদল আনা উচিত নয়। এটিই আমার দর্শন। শ্রীলঙ্কায় অনেক ‘ফ্রিক’ ক্রিকেটার উঠে আসে তাদের সহজাত প্রতিভার কারণে। অনেকে চায় অনেক কিছু বদলে দিতে, তাতে সহজাত সামর্থ্য হারিয়ে যায়। জগতে সবাই আলাদা, তাদেরকে আলাদাভাবেই সামলাতে হয়।”

আপাতত দু বছরের জন্য পেয়েছেন দায়িত্ব। উঠতি ক্রিকেটারদের পাশাপাশি প্রয়োজনে কাজ করবেন জাতীয় দলের পেসারদের সঙ্গেও। কাজ করতে হবে তাই ওয়ালশের সঙ্গে মিলেও। সেটি নিয়েও বেশ রোমাঞ্চিত চম্পকা।

“সে তো জিনিয়াস। আমার সময়কার ক্রিকেটার, পাঁচশর বেশি উইকেট নিয়েছে। মানুষ হিসেবেও দারুণ। তার সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।”

সব যদি ঠিক পথে থাকে, বাংলাদেশে পেস বোলিংয়ে আরও সুসসময় তবে আসছে। স্পিনারদের দেশের পেস বোলিং হয়ত নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে ওয়ালশ ও চম্পকার হাত ধরে!