কাজে লাগানো অবশ্য এর মধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে এখনও ছুটিতে আছেন বাংলাদেশ দলের কোচ, সহকারী কোচ। কিন্ত ওয়ালশ চলে এসেছেন আগেই। প্রথমে আলাদা করে কাজ শুরু করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে। এখন ফিটনেস ক্যাম্পে থাকা সব পেসারকে নিয়েই চলছে ওয়ালশের সেশন।
বাংলাদেশের বোলিং কোচ হয়ে গত সেপ্টেম্বরে এসেছেন ওয়ালশ। তার পর থেকে ছিল টানা খেলা। আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ড সিরিজ ছিল পিঠেপিঠি, এরপর বিপিএল। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া হয়ে নিউ জিল্যান্ড সফর, ফিরেই ভারত। এরপরই ছিল শ্রীলঙ্কা সফর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাময়িক বিরতির সময় ছিল ঢাকা লিগ। এরপর ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ডে প্রায় দু মাসের সফর। পেসারদের নিয়ে আলাদা করে কাজ করার সময় আসলেই পাননি ওয়ালশ।
তাকে নিয়ে সমালোচনায় তাই বেশ বিরক্ত ওয়ালশ। এবার যেহেতু সুযোগ মিলেছে, ক্যাম্পটিকে কাজে লাগাতে চান পেসারদের উন্নতির জন্য।
“যে ভুলগুলো আমি দেখেছি, সেসব শোধরানোর সুযোগ এখন। এই কারণেই আমি একটু আগে ফিরেছি। ওদের সঙ্গে কাজ করে ভুলগুলো যতটা সম্ভব শুধরে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে। খেলার মধ্যে থাকলে বড় কোনো পরিবর্তন করা কঠিন।”
টানা বৃষ্টি অবশ্য ওয়ালশের পরিকল্পনায় বাধ সেধেছে। তবে ইনডোর সেশনও কাজে লাগাচ্ছেন বোলিং কোচ।
“আমরা চেষ্টা করছি সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় উন্নতি করার, ভুলগুলি শুধরে আরও ধারালো করে তুলতে। উন্নত কিছু হয়েছে। তবে দুভার্গ্যজনকভাবে আবহাওয়া বেশ বাজে। যতটা হলে ভালো হতো, ততটা অগ্রগতি তাই হয়নি।”
“তবে আমরা সময় নষ্ট করছি না। সুযোগ পেলেই আউটডোরে অনুশীলন করছি। ইনডোরে একসঙ্গে বসছি, ক্রিকেট নিয়েই কথা বলছি। চেষ্টা করছি যেন ক্রিকেট মস্তিষ্ক আরও ক্ষুরধার করে তোলা যায়।”
“বোলিংয়ের মৌলিক ব্যাপারগুলির একটি হলো ধারাবাহিকতা। যতটা উচিত বা যতটা ওরা পারে, ততটা ধারাবাহিক ওরা ছিল না। এটি আসে অভিজ্ঞতার সঙ্গে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সফরের সুযোগ আমরা খুব বেশি পাই না। মূল ব্যাপারটি হলো ধারাবাহিকতা ও নিয়ন্ত্রণ। এটি আয়ত্ব করতে পারলে আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাবে। ইতিবাচক দিক হলো, ওরা কঠিন পরিশ্রম করতে আগ্রহী।”
পেসারদের বেশিরভাগের বয়স কম, শেখার ক্ষেত্রে এটিকেও বড় সুবিধা বলে মনে করেন বোলিং কোচ।
“এটিই সবচেয়ে ইতিবাচক দিক। যা বলা হচ্ছে, তা লুফে নেওয়ার মত যথেষ্ট তরুণ ওরা। বিভিন্ন কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা থেকেও ওরা শিখবে। নিউ জিল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড সফর ওদের সাহায্য করবে। বুঝতে পারবে কোন কন্ডিশনে কেমন করতে হয়।”
শেখার পালা চলছে। চেষ্টা চলছে রপ্ত করার। সামনে সুযোগ আসবে কাজে লাগানোর। নতুন মৌসুমে ওয়ালশ পেসারদের দেখতে চান আরও নিয়ন্ত্রিত ও আরও ধারাবাহিক।
“আমি দেখতে চাই আরও ধারাবাহিকতা ও নিয়ন্ত্রণ। চাই বৈচিত্র, বোলিংয়ে পড়বে ভাবনার প্রতিফলন। ওরা তরুণ ও রোমাঞ্চকর, ওদের স্রেফ গতিটা ধরে রাখতে হবে এবং নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। মাঠে নামার পর কাজটা ওদেরই করতে হবে, আমরা ওদের হয়ে করে দিতে পারি না।”
“আমি ওদের সবসময়ই বলে আসছি, ‘তোমার ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ তোমার হাতেই। মাঠে নামো এবং নিজের কাজটি কর, ব্যস। সবসময় শেখার ও উন্নতির চেষ্টা কর।’ নতুন মৌসুম শুরুর আগে যদি শুধু প্রথমটুকুই ওরা রপ্ত করতে পারে, ধারাবাহিকতা ও নিয়ন্ত্রণ, আমি খুশি থাকব।”
অস্ট্রেলিয়া এলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মৌসুম শুরু হয়ে যাবে মাসখানেক পরই। তখনই দেখা যাবে, পেসাররা কতটা খুশি করতে পারেন ওয়ালশকে!