ডিকভেলাকে ছাপিয়ে নায়ক আরভিন

টানা দুই ম্যাচ শতক করলেন নিরোশান ডিকভেলা। দানুশকা গুনাথিলকাকে নিয়ে গড়লেন ইতিহাস, শ্রীলঙ্কা পেল তিনশ রানের পুঁজি। শেষ হাসি হাসলেন ক্রেইগ আরভিন, তার চমৎকার ইনিংসে চতুর্থ ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2017, 01:35 PM
Updated : 8 July 2017, 01:44 PM

শনিবার ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৪ উইকেটে জিতে সিরিজে ২-২ সমতা এনেছে জিম্বাবুয়ে।

হাম্বানটোটার মাহিন্দা রাজাপাকসা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ৬ উইকেটে ৩০০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২১ ওভারে ৩ উইকেটে হারিয়ে ১৩৯ রান করার পর বৃষ্টি নামে। বৃষ্টি থামলে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩‌১ ওভারে ২১৯ রান। ১০ বল বাকি থাকতেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অতিথিরা।

হ্যামিল্টন মাসাকাদজার সঙ্গে ৬৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সলোমন মিরে। দশম ওভারে মাসাকাদজাকে বোল্ড করে ‘ব্রেক থ্রু’ এনে দেন ভানিদু হাসারাঙ্গা। পরের ওভারে ফিরে বিদায় করেন ছক্কায় শুরু করা মিরেকে।

দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের বিদায়ের কোনো প্রভাব দলের ওপর পড়তে দেননি টারিসাই মাসাকান্দা ও আরভিন। দুই জনে তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ৪৬ রান।

২০ ওভারের শুরু থেকেই নামে বৃষ্টি। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে সেই সময়ে পিছিয়ে শ্রীলঙ্কা। ওভারটি করতে রাজ্যের সময় নিচ্ছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। দ্রুত বল করার তাগিদ দেন আম্পায়ার, এগিয়ে গিয়ে কথা বলেন অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সঙ্গে।

প্রথম দুটি বল করতে মালিঙ্গা সময় নেন তিন মিনিট, তার সেই ওভার শেষ হওয়ার পর বৃষ্টির মধ্যেই আরেক ওভার চালিয়ে যান আম্পায়াররা।

বৃষ্টির জন্য লম্বা সময় খেলা বন্ধ থাকায় কমে ম্যাচের দৈর্ঘ্য। জিম্বাবুয়ে ১০ ওভারে ৮০ রানের নতুন লক্ষ্য পায়। ৭ উইকেট হাতে থাকায় সেটা খুব একটা কঠিন ছিল না।

এক প্রান্তে আরভিন দ্রুত রান তুলছিলেন কিন্তু অন্য প্রান্তে শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজার দ্রুত বিদায় দলকে চাপে ফেলে দেয়। খানিকটা সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান ম্যালকম ওয়ালারও। তবে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন ম্যাচ সেরা আরভিন। ৫৫ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৬৯ রানে।

৪০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা।

এর আগে রেকর্ড গড়া উদ্বোধনী জুটি শ্রীলঙ্কাকে গড়ে দেয় বড় সংগ্রহের ভিত। আগের ম্যচে ২২৯ রানের পর এবার ২০৯ রানের জুটি উপহার দেন ডিকভেলা ও গুনাথিলকা। ওয়ানডে ক্রিকেটে টানা দুই ম্যাচে এই প্রথম দুই ব্যাটসম্যান গড়লেন দুইশ রানের জুটি।

কয়েকবার জীবন পাওয়া গুনাথিলকাকে বোল্ড করে জিম্বাবুয়েকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ওয়ালার। শ্রীলঙ্কার নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই ম্যাচে শতক করার সুযোগ হাতছাড়া করা গুনথিলকা ৭টি চারে ফিরেন ৮৭ রান করে।

তার আগেই দেশের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই ইনিংসে শতক করেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ডিকভেলা। আগের ম্যাচে ১০২ ছাড়িয়ে এবার ওয়ালারের বলে এলবডব্লিউ হয়ে থামেন ১১৬ রানে। তার ১১৮ বলের ইনিংসটি গড়া ৮টি চারে।

এক সময়ে সাড়ে তিনশ রানে ছিল স্বাগতিকদের নজর। ৩৬তম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দ্রুত রান তুলতে পারেনি দলটি।

প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা অধিনায়ক ম্যাথিউস শেষ বলে আউট হওয়ার আগে দুটি ছক্কায় ৪০ বলে করেন ৪২ রান। পাঁচে নেমে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান তিন নম্বরের নিয়মিত ব্যাটসম্যান কুসল মেন্ডিস।

আসেলা গুনারত্নেও সুবিধা করতে পারেননি। সিরিজে প্রথমবারের মতো আউট হওয়ার আগে উপুল থারাঙ্গা করেন ২২ রান।

শেষের দিকে আঁটসাঁট লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের বেধে রেখে লক্ষ্যটা নাগালেই রাখেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। বাকিটুকু সেরেছেন আরভিন, মিরে।   

সিরিজে এনিয়ে টানা চার ম্যাচে জিতল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল। আগামী সোমবার একই মাঠে হবে ফাইনালে পরিণত হওয়া পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ৩০০/৬ (ডিকভেলা ১১৬, গুনাথিলকা ৮৭, ম্যাথিউস ৪২, থারাঙ্গা ২২, গুনারত্নে ১, মেন্ডিস ০, হাসারঙ্গা ১৯*; পোফু ২/৬১, চাটারা ১/৩২, রাজা ১/৫৬, উইলিয়ামস ০/৩৭, মিরে ০/২১, ক্রেমার ০/৪৭, ওয়ালার ২/৪৪)

জিম্বাবুয়ে: (লক্ষ্য ৩১ ওভারে ২১৯) ২৯.২ ওভারে ২১৯/৬ (মাসাকাদজা ২৮, মিরে ৪৩, মাসাকান্দা ৩০, আরভিন ৬৯*, উইলিয়ামস ৬, রাজা ১০, ওয়ালার ২০, মুর ০*; মালিঙ্গা ০/১৮, ফার্নান্দো ০/২২, চামিরা ১/৩২, গুনারত্নে ১/৪১, হাসারাঙ্গা ৩/৪০, সান্দাকান ১/৪৫, গুনাথিলকা ০/১৬)

ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে জিম্বাবুয়ে ৪ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ক্রেইগ আরভিন