নাটকীয় জয়ে সিরিজ ইংল্যান্ডের

দক্ষিণ আফ্রিকার মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছেন মার্ক উড। সিরিজে সমতা ফেরানোর আশা জাগানো দলটিকে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিয়েছেন ইংল্যান্ডের এই পেসার। তার অসাধারণ এক শেষ ওভারে ৫ উইকেট হাতে নিয়েও ৭ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি এবি ডি ভিলিয়ার্সের দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 07:05 PM
Updated : 27 May 2017, 07:05 PM

ঝড় তুলে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যাওয়া ডেভিড মিলার ও ক্রিস মরিস শেষ ওভারে ভীষণ হতাশ করেছেন দলকে। দুই জনই নিয়েছেন দুটি করে সিঙ্গেল, দিয়েছেন একটি করে বল ডট।

রোমাঞ্চকর শেষ ওভারে মাত্র চারটি সিঙ্গেল দিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে ২ রানের নাটকীয় জয় এনে দিয়েছেন উড। এতে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

সাউথ্যাম্পটনের রোজ বৌলে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৫ উইকেটে ৩২৮ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা।

ষোড়শ ওভারে ৮০ রানের মধ্যে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। স্বাগতিকদের আরও চাপে ফেলার সুযোগ হাতছাড়া করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা।

অভিষিক্ত কেশব মহারাজের বলে শূন্য রানে হাশিম আমলার হাতে জীবন পেয়েছেন বেন স্টোকস। পরের বলে এই অলরাউন্ডারের ক্যাচ ছেড়েছেন কুইন্টন ডি কিক। পরপর দুই বলে জীবন পাওয়া স্টোকস করেছেন শতক, দলকে নিয়ে গেছেন রানের পাহাড়ে। দারুণ ইনিংসে জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

এর আগে অ্যালেক্স হেলস একবার, পরে ওয়েন মর্গ্যান দুইবার ও মইন আলি একবার জীবন পেয়েছেন। মর্গ্যানের সঙ্গে ৯৫ ও জস বাটলারের সঙ্গে ৭৭ রানের দুটি চমৎকার জুটিতে দলকে আড়াইশ রানে নিয়ে যান স্টোকস।

বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ৭৯ বলে খেলা ১০১ রানের ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও একটি ছক্কায়। ষষ্ঠ উইকেটে মইনের সঙ্গে ৬.৪ ওভারে ৭৮ রান সংগ্রহ গড়ে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন বাটলার। ৫৩ বলে ৭টি চারে ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা ৫০ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আমলা ও ফাফ দু প্লেসি থিতু হয়ে ফিরলেও দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ডি কক। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে গড়েন ৮৬ রানের জুটি।

রানের গতি বাড়ানোর মুহূর্তে ফিরেন ডি ভিলিয়ার্স। ৫০ বলে ৬টি চারে করেন ৫২ রান। মাত্র ২ রানের জন্য শতক পাননি ডি কিক। তরুণ এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের ১০৩ বলে খেলা ৯৮ রানের ইনিংসটি গড়া ১১টি চারে।

২২ বলের মধ্যে দুই থিতু ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর দলকে পথ দেখান ‘কিলার’ মিলার। ফারহান বেহারিডনের সঙ্গে গড়েন ৫৫ রানের জুটি। তখনও ম্যাচ ইংলিশদের নিয়ন্ত্রণে। মরিস এসে জুটি বাধার পর পাল্টায় চিত্র। শেষ ওভারের আগ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। দুর্দান্ত এক ওভারে জয় ছিনিয়ে নিলেন উড।

৫১ বলে ৫টি চার আর দুটি ছক্কায় মিলার অপরাজিত ৭১ রানে। ২২ বলে মরিস অপরাজিত ৩৬ রানে। ৬ বলে ৭ রান নিতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে এই দুই জনকে।

৬৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লিয়াম প্লানকেট ইংল্যান্ডের সেরা বোলার।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩০/৬ (রয় ৮, হেলস ২৪, রুট ৩৯, মর্গ্যান ৪৫, স্টোকস ১০১, বাটলার ৬৫*, মইন ৩৩; রাবাদা ২/৫০, মরিস ০/৬৬, প্রিটোরিয়াস ১/৬১, মহারাজ ১/৭২, ফেলুকওয়ায়ো ১/৭৪)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩২৮/৫ (ডি কক ৯৮, আমলা ২৪, দু প্লেসি ১৬, ডি ভিলিয়ার্স ৫২, মিলার ৭১*, বেহারডিন ১৭, মরিস ৩৬*; উড ০/৪৮, বল ০/৮১, স্টোকস ১/১২, প্লানকেট ৩/৬৪, রশিদ ০/৪১, মইন ১/৫৯, রুট ০/১৮)

ফল: ইংল্যান্ড ২ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বেন স্টোকস