মন ভরাতে পারলেন কেবল তামিম

মাঠের এক পাশের সীমানা ৩৫ গজের কম। বাতাসে রানের গন্ধ। স্কোরকার্ড বলবে বাংলাদেশ গড়েছে বিশাল স্কোর। তবে মাঠের বাস্তবতা আর দারুণ শুরুর বিবেচনায় এরপরও মনে হতে পারে রান খানিকটা কম!

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবার্মিংহাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 01:33 PM
Updated : 31 May 2017, 09:23 AM

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৪১ রান করেছে বাংলাদেশ।

এজবাস্টন ক্রিকেট মাঠের পশ্চিম পাশের সীমানা ৩৫ গজের কম। এটা নিয়ে ম্যাচের আগের দিন থেকেই বিরক্ত বাংলাদেশের কোচ-অধিনায়কসহ গোটা দল।

টস জিতে অবশ্য হেসেছেন মাশরাফি। তবে ছোট সীমানা ও ব্যাটিং উইকেটে প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে পারলেন কেবল তামিম ইকবালই। সৌম্য-ইমরুল-মুশফিকরা আক্ষেপ করতে পারেন ইনিংস বড় করতে না পারায়।

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে দুটি অর্ধশতক ও একটি ৪৭ রানের ইনিংস আছে তামিমের। সেঞ্চুরি না পাওয়ায় আক্ষেপ নিশ্চয়ই আছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি ম্যাচে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মূল টুর্নামেন্টেও ভালো কিছু করার।

এক পাশ বেশি ছোট বলে যে সুর ছিল হাওয়ায়, শুরুতে রানের স্রোত প্রবাহিত হয়নি সেই একই তালে। তামিম ও সৌম্য ছিলেন বেশ সতর্ক। প্রথম ৮ ওভারে রান ছিল ৩২।

সৌম্য ফিরে গেছেন এর মধ্যেই। জুনাইদের বাড়তি লাফানো বলে ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে।

নবম ওভার থেকে হঠাৎ জোয়ার। ডাউন দা উইকেটে গিয়ে জুনাইদ খানকে লং অফ দিয়ে ওড়ালেন তামিম। এই মাঠে প্রথম ছক্কা হতে ৯ ওভার লেগে গেল, বিস্ময় ছিল সেটিই।

জুনাইদের ওই ওভার থেকে আরও তিন চারে রান আসে মোট ২৫। ইমরুলের সঙ্গে তামিমের জুটিও বরাবরের মতো জমে যায় দারুণ।

প্রথমটির মতো তামিমের পরের দুটি ছক্কাও ছিল লং অফ দিয়ে, ওয়াহাব রিয়াজ ও ইমাদ ওয়াসিমকে। পরের লেগ স্পিনার শাদাবকে ছক্কা মারেন স্লগ করে মিড উইকেট দিয়ে।

৩৯ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেছিলেন তামিম। শুরুতে খানিকটা সময় নিলেও পরে চালিয়ে খেলে ইমরুলের পঞ্চাশ ৪৭ বলে।

লেগ স্পিনার শাদাবকে সুইপ করতে গিয়ে ইমরুল এলবিডব্লিউ ৬১ রানে। দ্বিতীয় উইকেটে ১৪২ রানের জুটি এসেছে ১২২ বলে।

রানের গতি একই ছিল পরের জুটিতেও। উইকেটে গিয়েই হাসান আলিকে ছক্কা মারেন মুশফিক। তামিম সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ৮৮ বলে।

তখন মাত্র ৩২ ওভার। হাতছানি ছিল আরও বড় কিছুর। কিন্তু তামিম থামলেন সেঞ্চুরি পেরিয়েই। শাদাবকে ছোট সীমানা দিয়ে স্লগ করতে গেলেন, ব্যাটের কানায় লেগে বল শর্ট থার্ডম্যানে। ৯৩ বলে ১০২ রানের ইনিংসে ৯টি চার, ৪টি ছক্কা।

পরের ওভারেই ইমাদ ওয়াসিমকে পরপর দু বলে মিড উইকেটের দুপাশ দিয়ে ছক্কা মেরেছেন মুশফিক। তবে রানের সেই গতি পরে আর থাকেনি, বড় ইনিংসও আসেনি কারও কাছ থেকে।

৩৭ বলে ৪৬ রান করে মুশফিক আউট হয়েছেন উড়িয়ে মারতে গিয়ে। কাভার থেকে ডিপ পয়েন্টে ছুটে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন শোয়েব মালিক।

মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন দৃষ্টিনন্দন কিছু শট। ছোট সীমানা সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি সাকিব আল হাসান। দুজনই আউট হয়েছেন হাসান আলির এক ওভারে।

শেষ দিকে মিরাজ-মাশরাফি পারেননি ঝড় তুলতে। রান যা একটু করেছেন মোসাদ্দেক, তবু শেষ করে আসতে পারেননি কাজ, ১৫ বলে ২৬।

বাংলাদেশ রান অনেক করলেও একটা জায়গায় কৃতিত্ব দাবি করতে পারে পাকিস্তানের বোলাররা। ছোট সীমানা কাজে লাগানোর মত বল কমই দিয়েছে তারা। ওই পাশ দিয়ে ছক্কা হয়েছে তাই মাত্র চারটি।

নির্দিষ্ট ১১ জনের বাধ্যবাধকতা নেই, চাইলে সাব্বিরকে ব্যাটিংয়ে নামানো যেত। বাংলাদেশ হয়ত সম্ভাব্য সেরা একাদশ ধরে ব্যাটিং প্রস্তুতি সারতে চেয়েছে। সাব্বিরকে বিরতির সময় দেখা গেল বোলিং অনুশীলনে।

তবে বোলিংয়ের মূল চ্যালেঞ্জটা সাব্বিরের সতীর্থদের। এই মাঠে জিততে হলে বোলারদের করতে হবে ভালো কিছু।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৪১/৯ (তামিম ১০২, সৌম্য ১৯, ইমরুল ৬১, মুশফিক ৪৬, সাকিব ২৩, মাহমুদউল্লাহ ২৯, মোসাদ্দেক ২৬, মিরাজ ১৩*, মাশরাফি ১, সানজামুল ০*; জুনাইদ , হাসান ২/৫৮ আশরাফ ০/৩৫, ওয়াহাব ০/৬৮, হাফিজ ০/১১, শাদাব ২/৫৫, ইমাদ ০/৩৮)