লিটন-নাঈমের দারুণ সেঞ্চুরি, উল্টো স্বাদ

দুজনই উপহার দিলেন দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরি। তবে একজনের সেঞ্চুরি টপ অর্ডারে। আরেকজনের সেঞ্চুরি টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর। ম্যাচে পার্থক্য হয়ে রইল সেটিই। লিটন দাসের সেঞ্চুরি গড়ে দিল জয়ের ভিত। নাঈম ইসলামের সেঞ্চুরিতে স্রেফ কমল হারের ব্যবধান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2017, 12:51 PM
Updated : 17 May 2017, 05:34 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জকে ৪৯ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড।

এক ম্যাচের ব্যবধানে আরও একটি ঝড়ো সেঞ্চুরি করেছেন লিটন। সাদমান ইসলামকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই তুলেছেন দুশর বেশি রান। আবাহনী তুলেছে ৩৩৩।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় রান তাড়ায় শুরু থেকেই ছিটকে পড়ে রূপগঞ্জ। নাঈমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত তুলতে পারে তারা ২৮৪।

বিকেএসপিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে আবাহনী উদ্বোধনী জুটিতেই অনেকটা গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন রূপগঞ্জের বোলারদের তুলোধুনো করেন সাদমানকে নিয়ে।

৩৮ বলে অর্ধশতক করেন লিটন, ৭৮ বলে সেঞ্চুরি। এক ম্যাচ আগেই সেঞ্চুরি করেছিলেন ৭৯ বলে। মাঝের ম্যাচটিতে ৫০ করেছেন ৩৮ বলে।

আরেক পাশে সাদমানই খেলছিলেন সমান তালে। ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৩ বলে ৮৫ রানে সাদমানের বিদায়ে ভাঙে জুটি। দুজনে তুলে ফেলেছেন ততক্ষণে ১৭১ বলে ২০৭! এবরের লিগে উদ্বোধনী জুটিতেই এটিই প্রথম দুশ রান।

খানিক পর বিদায় নেন লিটনও। নামের পাশে তখন ১০১ বলে ১৩৬! ২০ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৩টি ছক্কা।

দুই ওপেনারের পর সেভাবে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ। তুলতে পারেননি ঝড়। শেষ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে অলআউটও হয়ে যায় আবাহনী। তবে ওপেনারদের গড়ে দেওয়া ভিত্তির পর দলের বড় রান অবধারিতই ছিল।

শেষ দিকে ১৭ বলে ২৩ করেছেন শুভাগত। শেষ ১০ ওভারে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে শুরু করেও আবাহনী রান তুলতে পারে মাত্র ৬৪। তার পরও সংগ্রহ ৩৩৩!

রান তাড়ায় ৮ ওভারের আগেই রূপগঞ্জ হারায় ৩ উইকেট। বিশাল রান তাড়া অসম্ভব হয়ে যায় তখনই।

নাঈম চেষ্টা করেছেন নিজেকেও ছাড়িয়ে। টানা দুটি জুটিতে তুলেছেন শতরান। মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে পঞ্চম জুটিতে ১০০। তবে ইনিংস মেরামত করতেই সেই জুটি আসে ১২৯ বলে। হামিদুল ইসলামের সঙ্গে পরের জুটিতে ১০০ করেছেন ৭৫ বলে।

৯৯ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন নাঈম। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ষষ্ঠ সেঞ্চুরিটি তার ক্যারিয়ার সর্বোচ্চও। ১১৯ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ১২৩।

কিন্তু আবাহনী রান ছিল একটু বেশিই বেশি! নাঈমের ইনিংসের পরও তাই সেভাবে জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি রূপগঞ্জ।

এই ম্যাচের দুই সেঞ্চুরিয়ান এখন লিগের সফলতম দুই ব্যাটসম্যান। ৯ ইনিংসে ৬৪.২২ গড়ে ৫৭৮ রান লিটনের। সমান ইনিংসে ৬১.৩৩ গড়ে নাঈমের রান ৪৯১। দুটি করে সেঞ্চুরি দুজনেরই।

তবে এই ম্যাচের মতোই অবস্থা দুজনের দলের। ১০ ম্যাচের ৮টি জিতল আবাহনী। রূপগঞ্জের জয়-হার সমান ৫টি করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৩ (লিটন ১৩৬, সাদমান ৮৫, শান্ত ৩৫, মনন ১৯, সাইফ ১২, মিঠুন ১৬, শুভাগত ২৩, সাইফুদ্দিন ২, অনিক ০, সাকলাইন ০, আবু জায়েদ ০*; শরিফ ৩/৬১, সাব্বির ১/৭৮, মোশাররফ ৩/৩০, আসিফ ০/৩৫, মাহমুদুল ২/৬০, আলি দার ০/৩৫, নাঈম ০/২১, জয়রাজ ০/১২)।

রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৮৪/৬ (হাসানুজ্জামান ১৩, জয়রাজ ১, ইয়াসির ১১, নাঈম ১২৩, রাজা আলি দার ৬, মোশাররফ ৬৭, হামিদুল ৩৭*, শরিফ ৭*; আবু জায়েদ ৩/৪৪, সাইফুদ্দিন ১/৪২, মনন ০/৪৬, অনিক ০/৫২, শুভাগত ১/৩৫, সাকলাইন ১/৫৬)।

ফল: আবাহনী লিমিটেড ৪৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: লিটন দাস