ও’ব্রায়েনের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে কিউইদের নায়ক স্যান্টনার

লড়াইটা এক পর্যায়ে হয়ে দাঁড়িয়েছিল নিউ জিল্যান্ড বনাম নায়াল ও’ব্রায়েন। সেই মঞ্চেই হঠাৎ নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হলেন মিচেল স্যান্টনার। সেঞ্চুরিয়ান ও’ব্রায়েনকে ফেরালেন। গুটিয়ে দিলেন আইরিশদের লেজও। হারের শঙ্কা উড়িয়ে জিতল নিউ জিল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2017, 07:10 PM
Updated : 14 May 2017, 07:10 PM

ত্রিদেশীয় সিরিজে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে ৫১ রানে হারিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। ডাবলিনে ২৯০ রান তাড়ায় ২৭ বল আগে ২৩৮ রানে অলআউট হয়েছে আইরিশরা।

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল বৃষ্টিতে। ১০ ক্রিকেটার আইপিএলে ব্যস্ত থাকায় খর্বশক্তির দল নিয়ে আসা নিউ জিল্যান্ড শুরু করল জয়ে।

৫১ রানের জয় শুনলে যতটা বড় ব্যবধান মনে হয়, কিউইদের জয় মোটেও ততটা স্বস্তির ছিল না। একাই লড়াই চালিয়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ও’ব্রায়েন। অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান করেন ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি স্পিনে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন স্যান্টনার।

কৃতিত্ব দিতে হবে এই টুর্নামেন্টের কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামকেও। প্রথম স্পেলে একটি উইকেট নিলেও স্যান্টনার রান গুণেছিলেন ৬ ওভারে ৪৩। তার পরও ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আবার তার হাতে বল তুলে দেন স্যান্টনার। ও’ব্রায়েনসহ চার ওভারে চার শিকারে সেই স্যান্টনারই ডোবান আইরিশদের।

দুই ওপেনার দ্রুত ফেরার পর আইরিশদের টানছিলেন ও’ব্রায়েনই। তৃতীয় উইকেটে ৮৬ রানের জুটিতে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন অ্যান্ড্রু বালবার্নি।

আইরিশদের রান তাড়ায় ২০ ওভার পর বৃষ্টিতে খেলা ছিল ৩৫ মিনিট। পরে আবার বৃষ্টির শঙ্কায় রান রেট বাড়াতে কেভিন ও’ব্রায়েনকে ওপরে পাঠিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ও’ব্রায়েনদের ছোট ভাই ফেরেন ১ রানেই।

বড় ভাই ছিলেন দলের আশা হয়ে। ইশ সোধিকে ছক্কা মেরে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। ১৫ বার অর্ধশতকের পর অবশেষ তিন অঙ্কের দেখা পেলেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। তবে দলক জেতাতে পারলেন না। স্যান্টনারকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে শেষ হলো ৯ চার ও ৫ ছক্কায় গড়া ১০৯ রানের ইনিংস। আইরিশদের আশারও সমাপ্তি।

৫ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১২ ওভারে দরকার ছিল ৮০ রান। উল্টো সেই ৫ উইকেট হারাল তারা ২৬ রানের মধ্যে।

ও’ব্রায়েনের পর একই ওভারে আরেক উইকেট নিয়ে স্যান্টনার স্বাদ পান ওয়ানডেতে প্রথমবার ৫ উইকেটের। অভিষিক্ত পেসার স্কট কাগেলেইন নিয়েছেন ৩ উইকেট।

ম্যাচের প্রথমভাগে নিউ জিল্যান্ডের নায়ক ছিলেন নিল ব্রুম। ওপেনিংয়ে ২৬ বলে ৩৭ করে দলকে দ্রুত শুরু এনে দেন লুক রনকি। তিন ও চারে নেমে জোড়া অর্ধশতক উপহার দেন জর্জ ওয়ার্কার ও রস টেইলর।

দুজনের ইনিংস যদিও ছিল দুই রকম। ৬০ বলে সাবলীল ৫২ করেছেন টেলর। ধুঁকতে থাকা ওয়ার্কার ৫০ করেছেন ৮৯ বলে।

ক্রমশ একটু মন্থর হতে থাকা উইকেটে কিউইদের রানের গতিও কমে এসেছিল। সেখানেই জোয়ার আনেন ব্রুম। ৬৩ বলে ৭৯ রানের দারুণ ইনিংসে দলকে এনে দেন ২৮৯ রান।

কিউইদের অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ যদিও খাবি খেয়ে যাচ্ছিলো ও’ব্রায়েনের ব্যাটে। কিন্তু স্যান্টনারের ছিল অন্য ভাবনা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৮৯/৭ (রনকি ৩৭, ল্যাথাম ১৫, ওয়ার্কার ৫০, টেলর ৫২, ব্রুম ৭৯, নিশাম ৩০, মানরো ০, কাগেলেইন ১১*, স্যান্টনার ১*; মারটাগ ২/৬২, চেইস ১/৭৪, ম্যাককার্থি ২/৫৯, ডকরেল ০/৪২, ও’ব্রায়েন ১/৪৬)।

আয়ারল্যান্ড: ৪৫.৩ ওভারে ২৩৮ (পোর্টারফিল্ড ১২, স্টার্লিং ১৪, নায়াল ও’ব্রায়েন ১০৯, বালবার্নি ৩৬, কেভিন ও’ব্রায়েন ১, উইলসন ৩০, সিমি ৯, ডকরেল ১, ম্যাককার্থি ৬, মারটাগ ২*, চেইস ১; রান্স ১/৪৪, কাগেলেইন ৩/৪১, নিশাম ০/৩৭, মানরো ০/১৬, স্যান্টনার ৫/৫০, সোধি ১/৪০)

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫১ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল স্যান্টনার