ইয়র্কার আর গতির বৈচিত্র্য নিয়ে তৈরি হায়দার

সুযোগটা এসেছিল হঠাৎ করেই। বিপিএলে ভালো করে আবু হায়দার ঢুকে গিয়েছিলেন জাতীয় দলে। গত বছরের জানুয়ারিতে অভিষেক, মার্চে খেললেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। খরুচে বোলিংয়ে বাদও পড়লেন। এবার তরুণ বাঁহাতি পেসার সময় নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করছেন, যেন আবার খেলার সুযোগ মিললে হুট করে বিদায় নিতে না হয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2017, 11:51 AM
Updated : 14 May 2017, 11:51 AM

জাতীয় দলে ফেরাকেই পাখির চোখ করেছেন হায়দার। তার জন্য নিজেকে মেলে ধরার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগকে। টানা ৮ ম্যাচ জিতে শীর্ষে থাকা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অপরাজেয় দল হয়ে উঠায় বল হাতে সবচেয়ে বড় অবদান এই তরুণ পেসারের।

৮ ম্যাচে ১৮.২২ গড়ে নিয়েছেন ১৮ উইকেট, পেসারদের মধ্যে সবচেয় বেশি উইকেট তারই। প্রথম ১৫ জনে গাজীর একমাত্র প্রতিনিধি তিনিই। দুইবার চার উইকেট নেওয়া হায়দারের লক্ষ্য শীর্ষে থেকে প্রতিযোগিতা শেষ করা।

“আপনারা দেখছেন, প্রায় প্রতি ম্যাচেই তিনশর আশেপাশে রান হচ্ছে। …. এর মধ্যে পেস বোলিং কিন্তু দারুণ কঠিন। তাপরেও এই কঠিন কাজটিকেই আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি। যেভাবে উইকেট পেয়েছি এভাবে চালিয়ে যেতে পারলে আশা করি, লিগ সেরা হতে পারব।”

২০১৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপিএল শিরোপা জয়ে বড় ভূমিকা ছিল হায়দারের। গতবার বরিশাল বুলসের হয়ে খুব একটা ভালো করেননি তিনি। ৭ ম্যাচ খেলে ৫৩.৭৫ গড়ে নিয়েছিলেন কেবল ৪ উইকেট, ওভার প্রতি দিয়েছিলেন ৮.৬০ রান।

“বিপিএলের পর পিছিয়ে গিয়েছিলাম, তাই নিজের ভেতরে একটা ক্ষুধা ছিল… যে কোনো একটি টুর্নামেন্টে ভালো করে আবার ফিরে আসার। প্রিমিয়ার লিগে বোলিং ভালো হচ্ছে।”

প্রিমিয়ার লিগে আট ম্যাচের সাতটিই বিকেএসপিতে খেলেছেন হায়দার। এখানের দুটি মাঠেই বেশিরভাগ সময়ে রাজত্ব করেছে ব্যাটসম্যানরা। এর মধ্যেই সাফল্য পেয়েছেন হায়দার। তরুণ পেসার জানালেন, এটি তার কঠোর পরিশ্রমের ফসল।

“ফ্ল্যাট উইকেটে আমি পেস ভেরিয়েশন ও ইয়র্কারটা বেশি ব্যবহার করছি। স্লগে এসে ইয়র্কার দেওয়ার চেষ্টা করছি। সেখানে সফলও হচ্ছি। এটা ধরে রাখতে চাই।”

অনেক স্বপ্ন নিয়ে জাতীয় দলে ঢোকা হায়দার বাদ পড়েন দুঃস্বপ্ন দিয়ে। তিন ম্যাচে ৬৬ বল করে দেন ১০২ রান। ওভার প্রতি খরচ ৯.২৭। ৩ উইকেটের প্রতিটির পেছনে খরচ হয় ৩৪ রান। ওই অতীত ভুলে এবার নতুন শুরুর দিকে হায়দার।

“অমন বোলিংয়ের জন্য বাদ পড়ায় হতাশ না। চড়াই-উতরাই সবার জীবনেই থাকে। সময় সবসময় ভাল যায় না। খারাপ সময় অবশ্যই মোকাবেলা করতে হয়। খারাপ সময়ে যারা মনোবল শক্ত রাখে তারাই ভবিষ্যতে সফল হয়। আমি অতীত নিয়ে ভাবছি না। এখন বোলিং ভাল হচ্ছে, সেদিকেই মনোযোগ দিচ্ছি।”

জাতীয় দলে যেতে হলে কি করতে হয় জানা আছে হায়দারের। থাকার জন্য কী করতে হয় সেটা ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে শিখছেন এই পেসার।

“একবার খেলে বেরিয়ে গিয়েছি। এখন আবার লক্ষ্য থাকবে ফেরার, জায়গা ধরে রাখার। সেই লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করছি। ফিটনেস নিয়ে কাজ করছি, বোলিং নিয়ে বাড়তি কাজ করছি। ব্যাটিং নিয়েও কিছুকিছু কাজ চলছে, যেন ভালোভাবে ফিরে আসতে পারি।”