ওই ম্যাচের আগের দিনই দ্বিতীয় বিভাগের আরেকটি ম্যাচে ১.১ ওভারে ৬৯ রান গুণেছিলেন বোলার তাসনিম হাসান। তার কপালেও জুটেছে ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞা। আজীবন নিষিদ্ধ তার ক্লাব ফিয়ার ফাইটার্স।
পাশাপাশি দুটি দলেরই অধিনায়ক, কোচ ও ম্যানেজারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৫ বছরের জন্য।
শাস্তি হয়েছে এই দুই ম্যাচের আম্পায়ারদেরও। তবে অন্যদের গুরু শাস্তির তুলনায় আম্পায়ারদের শাস্তি নিতান্তই লঘু। মাত্র ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে দুই আম্পায়ার শামসুর রহমান ও আজিজুল বারীকে। আলোচিত দুটি ম্যাচে আম্পায়ার ছিলেন এই দুজনই।
গত ১১ এপ্রিল সিটি ক্লাব মাঠে এক্সিওম ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৪ বলে ৯২ রান দিয়ে খবরের শিরোনাম হন সুজন। ৮৯ রান তাড়ায় ওয়াইড ও নো বলের বন্যায় এক্সিওম জিতে যায় চার বলেই। পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লালমাটিয়া ক্লাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদেই ক্রিকেটাররা অমন করেছে।
৪ বলে ৯২ রান দেওয়ার খবর দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়। আকসুকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় বিসিবি। আকসুর রিপোর্ট পাওয়ার পর আরও তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে বিসিবি।
ওই তদন্তের সূত্রেই বেরিয়ে আসে, আলোচিত ম্যাচটির আগের দিন আরেক ম্যাচে ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ১.১ ওভারে ৬৯ রান দেন ফিয়ার ফাইটার্সের তাসনিম। তদন্ত হয় সেই ম্যাচ নিয়েও।
বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান ও এই তদন্ত কমিটির প্রধান শেখ সোহেল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানালেন শাস্তির কথা। তাদের চোখে ওই বোলার দুজন ও ক্লাব দুটি ঘৃণ্য অপরাধ করেছে।
“এই তদন্ত শুরুর পর আমি একাধিকবার বলেছি এ জাতীয় ঘটনায় আমরা কোনো ছাড় দিব না। এটি একটি মারাত্মক ঘৃণ্য অপরাধ। এর চাইতেও বড় শাস্তি থাকলে আমরা দিতাম।”
ক্লাব দুটির পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে বলা হয়েছিল, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদেই তারা অমন করেছে। এমনকি বোলার বল করার আগেই আম্পায়ার নো বলের সঙ্কেত দিয়েছেন, এমন দাবিও করেছে ফিয়ার ফাইটার্সের ক্রিকেটাররা।
তদন্ত কমিটি প্রধানের দাবি, দেশের ক্রিকেটের সুনাম নষ্ট করতেই এসব করা হয়েছে।
“আমরা প্রতিটি খেলোয়াড় এবং মাঠে উপস্থিত ছিলেন, এমন অনেকের সাথে কথা বলেছি। কথা বলে দেখেছি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দিত হয়েছে।”
“আপনারা নিশ্চই বুঝতে পারেন যে, যদি টিম ম্যানেজমেন্ট আদেশ না দেয়, তাহলে কোনো বোলার এ জাতীয় কাজ করার সাহস পায় না। দুই ম্যাচেই ফিক্সিংয়ের কোনো ব্যাপার ছিল না। বোলার টাকা পেয়েছে বা এ ধরনের কিছু না। কিংবা এই দুই দল হেরে গেলে রেলিগেশনে যাবে বা জিতলে সেমি-ফাইনালে উঠবে, এ ধরনের কিছু ছিল না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাবমুর্তি নষ্ট করতেই এই কাজ করা হয়েছে।”
ক্লাবগুলোর অভিযোগের আঙুল ছিল যাদের দিকে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্য দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মত গুরুতর কিছু দেখেনি তদন্ত কমিটি। স্রেফ ‘খেলা ঠিকমতো পরিচালনা করতে না পারায় ৬ মাস নিষিদ্ধ তারা।