জিয়ার ঝড়ে কুপোকাত চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

জিয়াউর রহমান ঝড় তুলতে জানেন, এটা অনেকেই জানেন। তবে সেই ঝড় কবে উঠবে, কেউ জানেন না। আপাতত আবাহনী জানল। জিয়া ঝড় তুললে বেশিরভাগ সময়ই লণ্ডভণ্ড হয় প্রতিপক্ষ। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। চ্যাম্পিয়নরা পেল প্রথম পরাজয়ের স্বাদ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2017, 12:04 PM
Updated : 26 April 2017, 04:21 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। ফতু্ল্লায় আবাহনীর ২৬৯ রান শেখ জামাল পেরিয়ে যায় দুই ওভার বাকি থাকতে।

লেগ স্পিনে চার উইকেট নিয়ে আবাহনীর রানকে নাগালের বাইরে যেতে দেননি তানবীর হায়দার। রান তাড়ায় টপ অর্ডারে অর্ধশতক করেছেন ফজলে রাব্বি ও প্রশান্ত চোপড়া। পরে নুরুল হাসানকে নিয়ে শেখ জামালকে জয়ের পথে নিয়ে গেঝেন জিয়া।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আবাহনীকে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৯ রান এনে দেন লিটন দাস ও সাইফ হাসান। আগের ম্যাচে ৪৮ রানে আউট হওয়া লিটন এবার দেখা পেয়েছেন লিগের প্রথম অর্ধশতকের।

লিটনের আগেই অবশ্য ফিরে গেছেন দুই তরুণ সাইফ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ৮২ বলে ৬২ করা লিটনকে ফিরিয়ে তানবীরের শিকার শুরু। এই লেগ স্পিনার পরে ফিরিয়ে দেন স্পিনে দক্ষ মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ মিঠুনকে।

একপাশে নিয়মিত উইকেট হারানোর এই সময়ে আবাহনীকে টেনেছেন মাহমুদউল্লাহ। ফর্মে থাকা আবাহনী অধিনায়ক এদিনও খেলেছেন দারুণ। আগের তিন ম্যাচে করেছিলেন ৫৯, ৭৭, অপরাজিত ৪৯। এবার করেছেন ৬৬ বলে ৬২।

মাহমুদউল্লাহকেও ফেরান তানবীর। জাতীয় দলে জায়গা হারানো লেগ স্পিনার লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে প্রথমবার নিলেন ৪ উইকেট।

দুশর নিচে প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলা আবাহনীকে টেনেছে লোয়ার মিডল অর্ডার। আগের ম্যাচে টর্নেডো ইনিংস খেলা শুভাগত হোম এদিনও করেছেন ২৭ বলে ৩২। পাশাপাশি সাউফ উদ্দিন, সানজামুলদের ছোট ছোট অবদানে আবাহনী যেতে পারে ২৬৯ পর্যন্ত।

সাইফ উদ্দিন বল হাতেও আবাহনীকে সাফল্য এনে দেন শুরুতে। তুলে নেন ইমরুল কায়েসকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যাত্রার আগে শেষ ম্যাচে ইমরুল করেছেন ৮ রান।

পরের জুটিতেই অবশ্য ধাক্কা সামাল দেয় শেখ জামাল। ১০৪ রানের জুটি গড়েন ফজলে রাব্বি ও প্রশান্ত চোপড়া। ভারতীয় ব্যাটসম্যান চোপড়া ফেরেন ৫৭ রানে।

শেখ জামাল একটু শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল ফজলে রাব্বি ও রাজিন সালেহকে পরপর হারিয়ে। ৬৩ রান করে পায়ের পেশিতে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন রাব্বি। রান আউট রাজিন। রান প্রয়োজন তখন ওভারপ্রতি ছয়ের বেশি।

নুরুল ও জিয়া শুধু জুটিই গড়লেন না, রানের হিসাবও মেলালেন। দুজনের ৮৫ বলে ১০২ রানের জুটিই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয় পাকাপাকিভাবে।

৪২ বলে ৪৬ রান করে জয়ের কাছে গিয়ে ফিরেছেন নুরুল। জিয়া ফিরেছেন জয় সঙ্গে নিয়েই। ৫৭ বলে অপরাজিত ৭৩। জিয়ার এমন ইনিংস মানেই ছক্কার ছড়াছড়ি। এদিন ছক্কা ৬টি।

চার ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী হারল প্রথমবার। সমান ম্যাচে শেখ জামালের জয়ও সমান, তিনটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৬৯ (লিটন ৬২, সাইফ ১৯, শান্ত ১৩, মাহমুদউল্লাহ ৬২, মোসাদ্দেক ৯, মিঠুন ১১, শুভাগত ৩২, সাইফ উদ্দিন ২৬, সানজামুল ১৪, সাকলাইন ১০, আবু জায়েদ ২*; শাহাদাত ২/৫৮, জিয়াউর ১/৩৪, রাজ্জাক ২/৪৮, সানি ০/৬২, তানবীর ৪/৪৫, ফজলে রাব্বি ০/২০)।

শেখ জামাল: ৪৮ ওভারে ২৭০/৪ (ইমরুল ৮, ফজলে রাব্বি ৬৩ (আহত অবসর), প্রশান্ত ৫৭, রাজিন ১১, নুরুল ৪৬, জিয়াউর ৭৩*, গাজী ২*; আবু জায়েদ ০/২৭, সাইফ উদ্দিন ১/৩৮, শুভাগত ০/৪১, মাহমুদউল্লাহ ০/৩১, সানজামুল ০/৪৩, মোসাদ্দেক ১/৫০, সাকলাইন ১/৩৮)।

ফল: শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জিয়াউর রহমান