মাশরাফি যেদিন মুস্তাফিজকে নিয়ে বলছেন, ঠিক তার আগের দিনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দু বছর পূর্ণ হয়েছে তার। ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট। পরের মাসেই ওয়ানডে আবির্ভাবে প্রথম দুই ম্যাচে ৫ ও ৬ উইকেট।
এরপর টেস্ট অভিষেকেও হলেন ম্যাচ সেরা। জিম্বাবুয়ে সিরিজে আবার নিলেন ম্যাচে ৫ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পেল নতুন এক তারকা।
তবে সুসময় হারিয়েও গেছে কিছুদিন পরই। পেসারদের সবচেয়ে বড় শত্রু চোট বসিয়েছে শক্ত থাবা। অস্ত্রোপচার করা হয়েছে কাঁধে। দীর্ঘ পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে ফেরার পর আর দেখা মিলছে না শুরুর সেই মুস্তাফিজের।
বড় অস্ত্রোপচারের ধাক্কা সামলে পুরো ছন্দে ফিরতে সময় লাগাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে মুস্তাফিজের সময়টা একটু বেশিই লাগছে। শ্রীলঙ্কা সফরের শেষ ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছেন বটে। তবে তার বোলিংয়ে আগের সেই আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন এখনও পড়ছে না।
আসছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ভালো করার অন্যতম পূর্বশর্ত মুস্তাফিজের ছন্দে ফেরা। ইংল্যান্ডের উইকেট-কন্ডিশন মুস্তাফিজের পক্ষে থাকবে। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরি তার নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া।
মাশরাফি অবশ্য খুব উচ্চাশা করছেন না মুস্তাফিজকে নিয়ে। বাস্তবতা বুঝতে পারছেন অধিনায়ক। দেশ ছাড়ার আগের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন সেই বাস্তবতা।
“মুস্তাফিজের জন্য আরও বড় সমস্যা যা তৈরি হয়েছে, সেটা হচ্ছে চোট। তিন-চার মাস হল চোট থেকে সেরে উঠেছে। ওর বয়সও মাত্র ১৯/২০। সব কিছু মিলিয়ে ওর দিকে যদি তাকান, ওর জন্য পরিস্থিতি খুব কঠিন এখন।”
তবে বাস্তবতা কঠিন মানেই আশার শেষ নয়। বরং ভবিষ্যতের পথচলায় মাশরাফির বাজি মুস্তাফিজই। অধিনায়কের শুধু অনুরোধ, ভার চাপিয়ে যেন মুস্তাফিজের কঠিন সময় আরও কঠিন করে তোলা না হয়।
“এই সময়ে আমরাও যদি ওকে একইভাবে চাপে রাখি তাহলে ওর জন্য কাজ আরও কঠিন হবে। ও এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে, ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের বড় সম্পদ। ওকে যদি আমরা রিল্যাক্সড রাখতে পারি, ওর প্রতি আমাদের না চাপিয়ে যদি বাস্তবতা ভাবি, আমার মনে হয়, ও আগামী ১০ বছরের জন্য আমাদের দারুণ সম্পদ হবে।”
এখনই অবশ্য দলের সঙ্গে যাচ্ছেন না ইংল্যান্ড। আপাতত তিনি আইপিএল খেলতে ভারতে। ইংল্যান্ডে প্রস্তুতি ক্যাম্পের শেষ দিকে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন বাহাঁতি পেসার।