জুনায়েদের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে নায়ক শুভাগত

বৈশাখ মাসে কালবৈশাখী বিরল নয়। কিন্তু ব্যাট হাতে শুভাগত হোম যেটি করলেন, সেটিকে বলা যায় টর্নোডো! ব্যাটিং উইকেটে এরপর বল হাতেও উজ্জ্বল তিনি। জাতীয় দলে জায়গা হারানোর দিনে এই অলরাউন্ডারই আবাহনীর জয়ের নায়ক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2017, 12:56 PM
Updated : 20 April 2017, 03:29 PM

শুভাগতর দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বিফলে গেছে জুনায়েদ সিদ্দিকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩২ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড।

ফতুল্লায় আবাহনীর ৩২৭ রান তাড়ায় ব্রাদার্স করতে পারে ২৯৫ রান। লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এটি টানা তৃতীয় জয়।

৭ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন শুভাগত, মিরপুরে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল তখন ঘোষণা হয়ে গেছে। বাদ পড়ার আক্ষেপে হোক বা পরিস্থিতির দাবি মেটাতেই, খেললেন ১৭ বলে ৪৪ রানের খুনে ইনিংস। এরপর নতুন বল হাতে নিয়ে উইকেট ৩টি। তার পারফরম্যান্সকে পূর্ণতা দিয়েছে একটি ক্যাচ, দলের জয় ও ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

শুভাগতকে শেষের তাণ্ডব চালানোর ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল উপরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। লিটন দাস ও উদয় কাউল উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৯৬ রান।

৪৯ বলে ৪৮ রানে ফিরেছেন লিটন। দ্বিতীয় উইকেটে উদয়ের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তর জুটি ৮৮ রানের। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শান্ত এবার ফেরেন ৫৬ বলে ৪৯ রানে। লিটন-শান্ত দুজনই শিকার অলক কাপালীর।

লিটন ও শান্ত ফিরেছেন হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে, উদয় ফিরলেন সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে। ১২০ বলে ৯৪ রানে আউট হয়েছে ভারতের হিমাচল প্রদেশের ব্যাটসম্যান।

আবাহনী ততক্ষণে দাঁড়িয়ে দারুণ ভিতের ওপর। মোসাদ্দেক এদিন টিকতে পারেননি, মিঠুনও ফিরে গেছেন এক ছক্কা ও এক চারে ১৯ রান করে। কিন্তু সময়ের দাবি মিটিয়ে রান তুলেছেন মাহমুদউল্লাহ।

শুভাগত যখন উইকেটে গেলেন, ইনিংসের বাকি তখন ২৩ বল। ওই ক’বলেই আবাহনী তুলেছে ৫৩ রান! তর ৪৪ রানই শুভাগতর। ৭টি চারের সঙ্গে মেরেছেন একটি ছক্কা।

আগের দুই ম্যাচে ৫৯ ও ৭৭ রানের পর মাহমুদউল্লাহ এবার অপরাজিত ৪২ বলে ৪৯ রানে। শেষ ১০ ওভারে আবাহনী তোলে ১০৪ রান।

জুনায়েদের ব্যাটে ব্রাদার্সের জবাবটাও খারাপ হচ্ছিল না। শুরুতে ওপেনিং সঙ্গীকে হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে মিজানুরকে নিয়ে তিনি গড়েন দারুণ জুটি।

এখানেও বাধ সাধেন শুভাগত। ৪২ রান করা মিজানুরকে ফিরিয়ে ৮৬ রানের জুটি ভাঙেন এই অফ স্পিনার। মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন আরও দুবার। তাতেই রান তাড়ায় পিছিয়ে পড়ে ব্রাদার্স।

জুনায়েদ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি করেন ১০২ বলে। তাকে থামান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ৮ চার ও ৩ ছক্কায় বাঁহাতি ওপেনার করেছেন ১১২ বলে ১১৪।

জুনায়েদের আউটেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ব্রাদার্স। লোয়ার অর্ডারে নিহাদুজ্জামানের ৩২ বলে অপরাজিত ৪১ রান দলকে নিয়ে গেছে তিনশর কাছে, কমিয়েছে ব্যবধান।

সকালে জানা গেছে জাতীয় দল থেকে শুভাগতর বাদ পড়ার খবর। বিকেলেই তার হাতে উঠল লিগে ম্যাচ সেরার ট্রফি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ৩২৭/৬ (লিটন ৪৮, উদয় ৯৪, শান্ত ৪৯, মাহমুদউল্লাহ ৪৯*, মোসাদ্দেক ৩, মিঠুন ১৯, শুভগত ৪৪, সাইফ উদ্দিন ০*; আরাফাত ১/৬৬, নাঈম ০/৫৭, নিহাদুজ্জামান ১/৫৪, মায়শুকুর ০/১৫, কামরুল ২/৫৬, অলক ২/৪৬, তাপস ০/৩০)।

ব্রাদার্স : ৫০ ওভারে ২৯৫/৭ (জুনায়েদ ১১৪, রুম্মান ১, মিজানুর ৪২, ফরহাদ ২৬, মায়শুকুর ২৮, অলক ৬, তাপস ০, কামরুল ১১, নিহদুজ্জামান ৪১*, নাঈম ১৫*; সাইফ উদ্দিন ২/৫০, শুভাগত ৩/৪৫, তাসকিন ০/৫৩, সানজামুল ১/৪৮, সাকলাইন ১/৩৯, মোসাদ্দেক ১/২৮, মাহমুদউল্লাহ ০/২৯)।

ফল: আবাহনী ৩২ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শুভাগত হোম চৌধুরী