সিরিজ সেরা সাকিব আল হাসানকে যখন প্রশ্নটা করা হল, তিনি মনে করিয়ে দিলেন, আগের সিরিজেই ওরা দেশে অস্ট্রেলিয়াকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে। এক কথাতেই পরিষ্কার করে দিলেন, দেশের মাটিতে এখনও সমীহ করার মতো দল শ্রীলঙ্কা।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬০ উইকেটের ৪৩টি নিয়েছিলেন রঙ্গনা হেরাথ ও দিলরুয়ান পেরেরা। তাদের সঙ্গে এবার ছিলেন চায়নাম্যান লাকশান সান্দাকান। প্রতিপক্ষের সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় নেই মুশফিকের।
“এটা ওদের দুর্বলতম দল কি না? আমার মনে হয়, শ্রীলঙ্কা এখনো তাদের মাটিতে দুর্দান্ত দল। তারা অস্ট্রেলিয়াকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে। তাদেরকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।”
আমার মনে হয়, গত পাঁচ দিন আমরা তাদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছি। বিশেষ করে টস হারের পর বোলাররা প্রথম ইনিংসে তাদের কাজটা যথাযথভাবে করেছে। গতকাল সাকিব ও মুস্তাফিজ ফ্ল্যাট উইকেটে দারুণ বোলিং করেছে। ওদের কয়েক ওভারের স্পেলে শ্রীলঙ্কা ব্যাকফুটে চলে যায়। এরপর আমাদের দরকার ছিল মোমেন্টামটা ধরে রাখা।”
অধিনায়ক মনে করিয়ে দেন, কলম্বো টেস্টের আগে দেশের মাটিতে টানা ছয় টেস্ট জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
পঞ্চম দিনের উইকেটেও ভীতিকর কিছু ছিল না। অধিনায়ক জানান, আড়াইশ রানের লক্ষ্য পেলেও জেতার আত্মবিশ্বাস ছিল তাদের।
“আমাদের মনে হয়েছিল, লক্ষ্য যা-ই হোক, আমরা চেজ করতে যাবো। ২০০ বা ২৫০ রান এই উইকেটে তাড়া করা সম্ভব। তাদেরকে অলআউট করার পর আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। বিশেষ করে তামিম ও সাব্বির যেভাবে ব্যাটিং করেছে, এটা দারুণ। সব মিলিয়ে শততম টেস্ট জেতা বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন।”
শুরুতে পরপর দুই বলে ফিরেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস। তামিম ইকবাল-সাব্বির রহমানের শতরানের জুটির পর দ্রুত ফিরেন তিন ব্যাটসম্যান। মুশফিক জানান, ইনিংসের কোনো পর্যায়েই হারের শঙ্কা মাথায় আসেনি।
গলে প্রথম টেস্ট ২৫৯ রানে হারে বাংলাদেশ। মুশফিক জানান, ওই ম্যাচ থেকেই জেতার আত্মবিশ্বাস পান তারা।
“প্রথম টেস্টে হারের পর আমাদের মনে হয়েছিল, আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি তাহলে, এই দলকে হারানো তেমন একটা কঠিন কাজ নয়। যদিও প্রথম টেস্টটা তারা বেশ সহজেই জিতেছে। আমরা জানতাম, যদি মাঠে আমাদের পরিকল্পনা ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরাই জিতবো। জয়টা আমরা অনেক কষ্টে অর্জন করেছি।”
টানা চার টেস্ট হারের পর এবার মিলেছে জয়। এখান থেকে কেবল সামনের দিকেই তাকাতে চান মুশফিক।
“এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। গত কয়েকটি সিরিজে আমরা প্রত্যাশিত ফল পাইনি। এই জন্যই এই ম্যাচ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। দলের সবাই আনন্দিত। অনেকেই ভালো পারফর্ম করেছে।”
এই বছর আরও ছয়টি টেস্ট খেলতে পারে বাংলাদেশ। তার চারটি হতে পারে দেশে, দুটি দক্ষিণ আফ্রিকায়। এই আত্মবিশ্বাস সেই সব ম্যাচে কাজে লাগাতে উন্মুখ অধিনায়ক।