উল্টো রথে ব্যাটিং-বোলিং
বাংলাদেশের বড় লিড যে চাপ তৈরি করেছিল শ্রীলঙ্কার ওপর, সেই ফাঁস আলগা করে দিয়েছেন বোলাররা। দিমুথ করুনারত্নে ও উপুল থারাঙ্গার ব্যাটে শ্রীলঙ্কা পেয়েছে ভালো শুরু।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ ওভার ব্যাট করে কোনো উইকেট না হারিয়ে শ্রীলঙ্কার রান ৫৪। দুই ব্যাটসম্যানই অপরাজিত ২৫ রানে।
করুনারত্মের ১১ রানে একটি সুযোগ এসেছিল। বলা ভালো, লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলটিতে দারুণ প্রচেষ্টায় সুযোগ বানিয়েছিলেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত হাতে জমাতে পারেননি। বাংলাদেশের স্পিনাররা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ৩৩৮। বাংলাদেশ করেছে ৪৬৭।
মোসাদ্দেকের ‘আত্মাহুতি’
একের পর এক সঙ্গী হারালেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মোসাদ্দেক। ৬২ রানে আম্পায়ার আউট দিলেও বেঁচে যান রিভিউ নিয়ে। মেরেছেন চার-ছক্কা। শেষ পর্যন্ত দলের রান বাড়ানোর চেষ্টাতেই হয়েছেন আউট।
হেরাথের ফ্লাইটে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন। হেরাথ দিয়েছিলেন একটু টেনে। সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেননি ডিকভেলা। অভিষেক ইনিংসে মোসাদ্দেক থামলেন ৭৫ রানে।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ তুলেছে ৪৬৭। লিড ১২৯ রানের।
চারটি করে উইকেট নিয়েছে হেরাথ ও সান্দাকান। টার্ন করতে শুরু করেছে বল। লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের অপেক্ষায় পরীক্ষা।
হেরাথের জোড়া ধাক্কা
সাকিবকে হারানোর পর বাংলাদেশকে টানছিলেন মোসাদ্দেক ও মিরাজ। দুই তরুণের জুটি ভাঙলেন অভিজ্ঞ হেরাথ। পরের বলে তুলে নিলেন আরও এক উইকেট।
সান্দাকানের রং ওয়ানে চার মেরে শুরু করেছিলেন মিরাজ। খেলছিলেন স্বচ্ছন্দেই। কিন্তু হেরাথের অসাধারণ বলটির জবাব ছিল না তার। এলবিডব্লিউ ২৪ রানে। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি মিরাজের। মোসাদ্দেকের সঙ্গে জুটি ছিল ৩৩ রানের।
পরের বলে এলবিডব্লিউ নতুন ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজ। এবার রিভিউ নেননি তিনি। টিভি রিপ্লে দেখাল, রিভিউ নিলেই বেঁচে যেতেন। বলে চলে যাচ্ছিলো লেগ স্টাম্পের বাইরে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হেরাথের এটি এক হাজারতম উইকেট!
বাংলাদেশের রান ৯ উইকেটে ৪৫৪। লিড ১১৬ রানে।
চা বিরতির আগে সাকিব-ধাক্কা
চা বিরতির সময় এগিয়ে আসছিল, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎই একটি ধাক্কা। অনেকটা স্রোতের বিপরীতেই উইকেট পেয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। তুলে মারতে গিয়ে ফিরলেন সাকিব।
সান্দকানের ঝুলিয়ে দেওয়া বলটি দেখেই হয়ত লোভ সামলাতে পারলেন না সাকিব। মারলেন উড়িয়ে। মিড অনে দারুণ ক্যাচ নিলেন দিনেশ চান্দিমাল। ১১৬ রানে ফিরলেন সাকিব।
পাগলাটে শুরু, স্থিরতায় সেঞ্চুরি
একই প্রান্তে দুদিনে ব্যাট করলেন যেন দুটি ভিন্ন সাকিব! আগের বিকেলের খ্যাপাটে সাকিবের সঙ্গে তৃতীয় দিনের সাকিবকে মেলানো যায় না একটুও। দারুণ নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন সেঞ্চুরি।
আটের রেকর্ডে মোসাদ্দেকের শুরু
দলের লিড, জুটির পঞ্চাশ
লাকমলের শর্ট বলটিতে প্রথম ভেবেছিলেন ডাক করবেন মোসাদ্দেক। বল নীচু দেখে সামনেই পায়েই খেললেন পুল মতো। বল গুলির বেগে সীমানায়। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেল শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস। লিড!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৮ টেস্টে প্রথম ইনিংসে লিড মাত্র দ্বিতীয়বার। আগেরটি ছিল গত সফরেই গলে।
দলের লিড নেওয়ার পাশাপাশি ওই শটেই হয়েছে জুটির পঞ্চাশ।
৯৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ৩৪৫। সাকিব অপরাজিত ৬৬, মোসাদ্দেক ৩১। জুটির রান ৫৫। দলের লিড ৭ রানের।
লাঞ্চের আগে ‘সেঞ্চুরি’
দ্বিতীয় নতুন বলের শুরুতেই ফিরেছিলেন মুশফিক। অভিষিক্ত মোসাদ্দেকের প্রথম কয়েক মিনিটে বোঝা গেছে স্নায়ুর চাপ। তবে দ্রুতই সামলে নিয়েছেন। আরেক পাশে সাকিব আল হাসানের ব্যাট বিস্ময়করভাবে জুগিয়ে যাচ্ছে নির্ভরতা।
সকালের সেশনে মাত্র একটি উইকেটই হারিয়েছে বাংলাদেশ। আগের দিনের কথা ভাবলে অপ্রত্যাশিত সুন্দর সকাল বাংলাদেশের। সেশনে রান উঠেছে ১০২।
৮ বলে ১৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা সাকিব অপরাজিত ৭৮ বলে ৫৪ রানে। ঘরোয়া ক্রিকেটে স্পিন খেলায় দক্ষ বলে পরিচিত মোসাদ্দেক সময়ের সঙ্গে হয়ে উঠছেন আত্মবিশ্বাসী। বেরিয়ে এসে লং অফ দিয়ে দারুণ ছক্কা মেরেছেন হেরাথকে। অপরাজিত তিনি ১৫ রানে।
লাঞ্চের সময় বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ৩১৬। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস ছাড়িয়ে যেতে চাই মাত্র আর ২৩ রান।
‘টেস্ট ব্যাটিংয়ে’ সাকিবের অর্ধশতক
নতুন বলে আলগা মুশফিক
দারুণ খেলতে খেলতেই মুহূর্তের অসতর্কতা। সুরঙ্গা লাকমলের বলে বোল্ড হয়ে থামল মুশফিকের যাত্রা।
৮০ ওভার শেষেই নতুন বল নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারটি করেছেন পেরেরা। পরেরটি লাকমল। ওভারের প্রথম বলটিই ফুল লেংথ। বল সিমে পড়ে একটু ভেতরে ঢুকল। জায়গায় পা না নিয়েই মুশফিকের আলগা ড্রাইভ, ব্যাট-প্যাডের মাঝে বড় ফাঁক। উড়ল বেলস। ৫২ রানে ফিরলেন মুশফিক।
সাকিবের সঙ্গে জুটিতে এসেছে ৯২ রান। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ২৯০। সাকিব উইকেটে ৪৪ রান নিয়ে।
সাকিবের আগেই মুশফিক!
আগের বিকেলে টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন সাকিব। এদিন সকালে ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে তাকে ছাড়িয়ে গেলেন মুশফিক। সাকিবকে ৪১ রানে রেখে করে ফেললেন অর্ধশতক।
ডিফেন্সে ছিলেন আঁটসাঁট, খেলেছেন দৃষ্টিনন্দন সব ড্রাইভ। দিলরুয়ান পেরেরাকে তেমন একটি ড্রাইভ খেলেই পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন মাত্র ৬৬ বলে।
জুটির রান ৮৭। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ২৮৫।
সংযত সাকিব, স্বস্তির শুরু
দিনের প্রথম ওভারেই লাকশান সান্দাকানের বেশ বাইরের বল তাড়া করে গুলির বেগে ড্রাইভে চার মেরেছিলেন সাকিব। পরের বলেই আউট হতে হতে গেলেন বেঁচে। জাগছিল শঙ্কা, আগের বিকেলের মতোই খ্যাপাটে ব্যাটিংই ফিরে আসবে না তো?
শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। নিজের মতো শট খেলার চেষ্টা ঠিকই করেছেন, ছিল ঝুঁকিও। তবে আগের দিনের মতো পাগলাট নয়। একটু সংযত। অন্য প্রান্তে মুশফিক খেলছেন বরাবারের নির্ভরতায়। দিনের প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশ হারায়নি উইকেট। খুব বেশি ঝুঁকি না নিয়েই উঠেছে ৪০ রান।
৭০ ওভার শেষে রান ৫ উইকেটে ২৫৪। দুজনের জুটির রান ৫৬। ৩১ রানে খেলছেন সাকিব, ২৯ রানে মুশফিক।
ব্যাখ্যা নেই ব্যাটিংয়ের
আগের দিন বিকেলে আত্মঘাতী ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা নেই থিলান সামারাবিরার কাছে। বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের আশা, পাগলাটে ওই ব্যাটিং ভুলে তৃতীয় দিনে নতুনভাবে শুরু করবে মুশফিক-সাকিবরা।
হেরাথের আশা ৫০ রানের লিড
উইকেটে বোলারদের তৈরি করা কিছু ফুট মার্ক আছে। সেটি কাজে লাগাতে চান রঙ্গনা হেরাথ। লঙ্কান অধিনায়কের আশা, ৫০ বা তার বেশি লিড নিতে পারবে তার দল। হেরাথের মতে, সেটি হবে দারুণ কিছু।